কোভিড থেকে রক্ষা পেতে মাস্ট ‘ডবল মাস্কিং’! কী করবেন, কী করবেন না, তা নিয়ে নির্দেশিকা জারি কেন্দ্রের

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে বর্তমানে ঘরে ঘরে কোভিড আক্রান্ত। শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলেও হাসপাতালে বেড না থাকায় ঠাঁই নিতে হচ্ছে হাসপাতাল চত্বরে, অক্সিজেন সিলিন্ডারের আকালের দিনে হাহাকারের দৃশ্য এখন সর্বত্র।

কোভিড থেকে রক্ষা পেতে মাস্ট 'ডবল মাস্কিং'! কী করবেন, কী করবেন না, তা নিয়ে নির্দেশিকা জারি কেন্দ্রের
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Updated on: May 11, 2021 | 5:42 PM

দ্বিতীয় ঢেউয়ের পাশাপাশি করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সতর্কবার্তা ইতোমধ্যেই জারি করেছে কেন্দ্র। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথম ও দ্বিতীয় তরঙ্গের তুলনায় আরও ভয়ংকর হতে চলেছে তৃতীয় তরঙ্গ। এমন পরিস্থিতিতে সাবধানতা অবলম্বন না করলে হারাতে হতে পারে কাছের মানুষগুলোকে। যাঁরা এতদিন কোভিড চলে গিয়েছে ভেবে মাস্ক রেখে দিয়েছিলেন আলমারিতে, তাঁরা এবার সতর্ক হোন। অনেকেরই ধারণা ছিল, কোভিড দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে। সংক্রমণ তাঁদের ধারেকাছে ঘেঁষবে না ভেবে মাস্কহীনভাবে রাস্তাঘাটে, বাজারে, ট্রেনে-বাসে চড়েছেন। মাস্ক পরলে গরম, অস্বস্তি হয় বলে যাঁরা অজুহাত দেখিয়ে মাস্ক পরেননি, তাঁরাও এবার সতর্ক হোন। কোভিডের ডবল ও ট্রিপল মিউট্যান্ট দ্রুত ছড়াচ্ছে। কঠিনতর পরিস্থিতিতে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে মাস্কই এখন ভরসা। তবে একটা নয়, রাস্তা বা ভিড়ের মধ্যে থাকলে অবশ্যেই দুটি করে মাস্ক পরা জরুরি। সম্প্রতি করোনা অতিমারির পরিস্থিতি বুঝে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে যে নয়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, তাতে ডবল মাস্কিংয়ের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ডবল মাস্কিং কী?

ডবল মাস্কিং হল দুটি করে ফেসমাস্ক পরা। সার্জিক্যাল মাস্কের উপর আরও একটি কাপড়ের বা সুতির মাস্ক পরা। প্রথম যে মাস্কটি পরতে হবে, সেটি একটু টাইট হলে ভাল। তাতে ভাইরাসের পার্টিকল ঢুকতে বাধা পাবে। দুটি মাস্ক পরলে চট করে ভাইরাস নাকে ও মুখে প্রবেশ করতে পারবে না। দুটি মাস্কের বহু স্তর থাকায় ভাইরাস শেষপর্যন্ত নাকে বা মুখে প্রবেশ করতে পারে না। ডবল মাস্কিংয়ের জেরে করোনাভাইরাস ৯৭ শতাংশ সুরক্ষিত বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

ডবল মাস্কিং নিয়ে কেন্দ্রীয় তথ্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রক কী কী নির্দেশিকা জারি করেছে তা একঝলকে দেখে নিন…

কী কী করবেন

-একটি সার্জিক্যাল মাস্কের উপর আরও একটি দ্বিস্তরীয় বা ত্রিস্তরীয় কাপড় বা সুতির মাস্ক পরতে হবে

-সার্জিক্যাল মাস্কটি যেন নাকের উপর শক্ত করে চেপে থাকে।

– দুটি মাস্ক পরে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হতেই পারে। কিন্তু সেদিকটি লক্ষ রেখেই ডবল মাস্কিং পরতে হবে।

– সার্জিক্যাল মাস্কটি একবার পরেই নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে দিন। অন্যদিকে কাপড় বা সুতির মাস্কটি নিয়মিত কাচতে হবে। পারলে অনেকগুলি সুতির মাস্ক কিনে রাখুন।

– মাস্ক খোলা ও পরার সময় অবশ্যই বিধি-নিয়মগুলি মেনে চলুন।

কী কী করবেন না

– একই ধরণেরর দুটি মাস্ক পরবেন না। যেমন পর পর সার্জিক্যাল মাস্ক বা একসঙ্গে দুটি কাপড়ের মাস্ক পরবেন না।

– একই মাস্ক পর পর দুদিন ধরে পরবেন না। সার্জিক্যাল মাস্ক ফেলে দিন সঠিক নিয়ম মেনে। কাপড়ের বা সুতির মাস্ক দুদিন পর পর পরবেন না। কেচে, ভালো করে শুকনো হলে তারপরই পরুন।

– বহু পুরনো একটি সার্জিক্যাল মাস্ক পরবেন না। হাত স্যানিটাইজড না করে মাস্কে হাত দেবেন না।

– মুখে বারবার হাত দেবেন না। মাস্ক যেখানে সেখানে খুলে রাখবেন না।

ভারতে মাত্র চারদিন ৪ লক্ষের বেশি মানুষ নতুন করে সংক্রামিত হয়েছেন। দৈনিক হারে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩,৬৬,১৬১। স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে, দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২,২৬,৬১,৫৭৫। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুসংখ্যাও। এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২,৪৬,১১৬ জনের। করোনায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্র, কেরালা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, গুজরাত, পশ্চিমবঙ্গের। মানুষের সচেতনতা ও টিকাকরণে প্রক্রিয়াই ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকার মূল মন্ত্র।