International Beer Day 2022: ‘এটা বিয়ার, অ্যালকোহল নয়’— কথাটা কতটা সত্যি? স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা রয়েছে?

Side Effects of Beer: পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়তার বিচারে চায়ের পরেই বিয়ারের স্থান। বিয়ার কি সত্যিই হার্টের উপকার করে? বেশি বিয়ার পানে কি সত্যিই লোকে মোটা হয়? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

International Beer Day 2022: ‘এটা বিয়ার, অ্যালকোহল নয়’— কথাটা কতটা সত্যি? স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা রয়েছে?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 06, 2022 | 8:49 AM

২১-এ পা দেওয়া যুবক হোক কিংবা প্রথমবার বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিকে যাওয়া তরুণী— সকলেই যে স্তোকবাক্য শোনেন তা হল— ‘এটা বিয়ার, অ্যালকোহল নয়।’ এভাবেই শুরু হয় ঘেরাটোপ ভাঙার প্রথম পর্ব। প্রাথমিক পাপবোধ কাটিয়ে উঠলে কোনও এক নিরালা আড্ডায় বিয়ার (Beer) হয়ে ওঠে ধুনকি লাগার সঙ্গী। সারা পৃথিবীতেই জল আর চায়ের পরে বিয়ারই সম্ভবত সবচাইতে জনপ্রিয় পানীয়। উপজাতি মানুষেরা (Tribal) একসময় সন্ধান প্রক্রিয়ায় তৈরি করত এই পানীয়। স্বাদে তিতকুটে হলেও এই শরীরে দিত শিথিল আমেজ। পরবর্তীকালে ভোগবাদী বাজারের নিয়ন্ত্রকদের নজরে পড়ে বিয়ার হয়ে উঠল আমজনতার পছন্দের আয়েস। প্রতিবছর আগস্ট মাসের প্রথম দিনটি পালন করা হয় আন্তর্জাতিক বিয়ার দিবস( International Beer Day 2022) হিসেবে। ২০০৭ সাল থেকে এই প্রথা চলে আসছে। চলতি বছরে দিনটি পালিত হচ্ছে ৫ অগস্ট।

এখন প্রশ্ন হল অবসরের দুপুর কিংবা একলা রাতের সঙ্গী বিয়ার কতখানি স্বাস্থ্যকর? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

বিয়ারের সম্ভাব্য স্বাস্থকর দিক

• বার্লি এবং শস্যদানা একসঙ্গে মিশিয়ে তারপর ইস্ট ও জলের সাহায্যে সন্ধান প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় বিয়ার। উল্লেখ্য, বিয়ার প্রস্তুতের সময় তার মধ্যে যোগ করা হয় শঙ্কু আকৃতির একটি ফুল যার নাম ‘হপস’। এই ফুলের কারণেই বিয়ারে তেতো স্বাদ আসে। কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হপস ফুলে থাকে বিশেষ ধরনের ফ্ল্যাভোনয়েড এক্সএন নামে উপাদান! এক্সএন-অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এছাড়া এই উপাদানটি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিডায়াবেটিক গুণসম্পন্ন। এমনকী ক্যান্সার প্রতিরোধও করে!

• মানবদেহে হোমোসিস্টাইন নামে বিশেষ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে হার্ট ডিজিজের আশঙ্কা বাড়ে। বিয়ারে থাকে ভিটামিন বি এবং ফোলিক অ্যাসিড যা হোমোসিস্টাইনের মাত্রা স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট ডিজিজের আশঙ্কা কমে। তাই মাত্রাতিরিক্ত বিয়ার পান না করলে তা হার্টকে সুরক্ষা জোগায়।

• সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বিয়ার পান করলে পুরুষের নিতম্ব এবং মেরুদণ্ডের হাড়ের ঘনত্ব বাড়ে। আবার মেনোপজ হওয়ার পরে যে মহিলারা বিয়ার পান করেন তাঁদের ক্ষেত্রে নিতম্বের হাড়ের ঘনত্বের বৃদ্ধি লক্ষ করা গিয়েছে। তবে অতিরিক্ত মদ্যপানে ফল বিপরীত হতে পারে।

বিয়ারের নেতিবাচক প্রভাব

• বিয়ার পানে ব্রেনের কার্যকারিতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিয়ারসেবীর তন্দ্রাচ্ছন্ন বোধ করেন। বিঘ্নিত হয় শরীরের ভারসাম্য, তৈরি হয় বিভ্রান্তি, কথা জড়িয়ে যায়, সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়, এমনকী জ্ঞানও লোপ পেতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে মাত্রাতিরিক্ত বিয়ার পান করলে ব্রেনের আকার ছোট হয়ে যায়। ক্ষয়প্রাপ্ত হয় নিউরোন। ফলে মস্তিষ্কের একাধিক কাজে বিঘ্ন ঘটে।

• মাত্রাতিরিক্ত বিয়ার পানে প্রাণহানির আশঙ্কা বাড়ে। গড়ে দিনে ৪০ গ্রাম অ্যালকোহল পান করলে উল্লেখযোগ্যভাবে মহিলাদের প্রাণহানির ঝুঁকি বাড়ে। অন্যদিকে দিনে গড়ে ৩০ গ্রাম অ্যালকোহল পান পুরুষের প্রাণহানির আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে।

• বিয়ারে থাকা অ্যালকোহল ধীরে ধীরে দেহের আমাদের ভাসকুলার সিস্টেম বা রক্তবাহী নালীগুলির বিশেষ ক্ষতিসাধন করে। ভাসকুলার সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হলে হার্ট ডিজিজের আশঙ্কা বেড়ে যায়। এছাড়া বিয়ারের সঙ্গে প্রচুর ক্যালোরি প্রবেশ করে শরীরে। তার ফলে দেখা দিতে পারে স্থূলত্বের সমস্যা। এমনকী মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল লিভারের সিরোসিস-এর কারণ হতে পারে। এমনকী উচ্চ রক্তচাপের আশঙ্কাও বৃদ্ধি করে বিয়ার। এর ফলে ঝুঁকি বাড়ে সেরিব্রাল ও ইস্কিমিক স্ট্রোক-এর।

বিয়ারে অ্যালকোহল থাকেই। তাই পান করার আগে সতর্কতা অবলম্বন করুন।