Health Tips: ক’গ্লাস জল পানে মৃত্যু হয় না? জেনে নিন সারাদিনে জল খাওয়ার মাপ
Drinking Water: জল ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। বলা হয়ে থাকে যে, শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে জল পান করা প্রয়োজন। কিন্তু অতিরিক্ত জল পান করলে কী হয় জানেন?
জলই (Water) জীবন। ছেলেবেলা থেকে সকলে এটাই জেনে বেড়ে ওঠে। হঠাৎ যদি শোনেন, জল শরীরের জন্য বিপজ্জনক! শুনলে চমকে যেতে পারেন। কিন্তু এটা ঠিক। কোন পরিস্থিতিতে হয় এমনটা? আসলে শরীরে জলের অভাব হওয়াটা যেমন ক্ষতিকর। তেমনই অতিরিক্ত হাইড্রেটেড হওয়াটাও শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।
জল ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। বলা হয়ে থাকে যে, শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে জল পান করা প্রয়োজন। কিন্তু অতিরিক্ত জল পান করলে কী হয় জানেন? সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা ঘটেছে হায়দরাবাদে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর একজন মহিলা শুধু এক বা দুই গ্লাস নয়, চার লিটার জল পান করতেন। যা একজন গড় প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সারাদিনের জল পানের সমান। এরপর ওই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। আসলে, কম জল পান করা যেমন ক্ষতিকারক, ঠিক একইভাবে, যদি খুব বেশি জল পান করেন কেউ, তা শরীরের জন্য খুব বিপজ্জনক হতে পারে।
অতিরিক্ত জল পান করা ক্ষতিকারক। এবং এটি খালি পেটে অতিরিক্ত জল খেলে তা আরও বেশি ক্ষতি করতে পারে শরীরের। হায়দরাবাদের সেই মহিলাটি জল খাওয়ার পরে বমি, মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো নানা সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন। এবং তারপরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বর্তমানে চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
এই খবরটিও পড়ুন
জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত জল খেলে শরীরের কী হয় এবং কীভাবে ক্ষতি হয়?
ওভারহাইড্রেশন – শরীরে জলের অভাবকে ডিহাইড্রেশন বলে। আর শরীরে অতিরিক্ত জল চলে গেলে তাকে ওভারহাইড্রেশন বলে। এর দুটি কারণ হতে পারে, একটি হল কোনও ব্যক্তি যখন খুব বেশি জল পান করেন। আর অপরটি হল যখন কোনও ব্যক্তির কিডনি বেশি জল ধরে রাখতে শুরু করে। দুটো ক্ষেত্রেই এই সময় শরীর খারাপ হয়। এর ফলে শরীরে সোডিয়াম কমে যায়। এই অবস্থাকে হাইপোথার্মিয়া বলা হয়। এ ছাড়া রক্তে উপস্থিত ইলেক্ট্রোলাইটও পাতলা হয়ে যায়।
জল যখন শরীরে প্রবেশ করে, সেই সময় শরীরের কোষে অক্সিজেন, পুষ্টি সরবরাহ করে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এ ছাড়া শরীর থেকে হজম হওয়া খাবার এবং অন্যান্য ধরনের বর্জ্য অপসারণের জন্য জল প্রয়োজন। যা কিডনি ও লিভারের উপর চাপ কমায়। পাশাপাশি এটি টিস্যুকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। বর্জ্যের পাশাপাশি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে অতিরিক্ত জল বের হয়ে যায়। কিন্তু যখন তা হয় না, সেই সময় ওভারহাইড্রেশন হয় এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে থাকে।
অতিরিক্ত হাইড্রেশনের কারণে যে লক্ষণগুলো দেখা যায় – শরীরে অতিরিক্ত জল থাকলে প্রাথমিকভাবে বমি বমি ভাব, বমি হয়, মাথাব্যথা, পেশিতে খিঁচুনি, বিভ্রান্তি হয়, মাথা ঘোরে, প্রায় অজ্ঞান হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। কখনও কখনও শরীরের অতিরিক্ত হাইড্রেশনের প্রাথমিক লক্ষণগুলি বোঝা কঠিন হয়। শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষত পায়ে এবং হাতে ফোলাভাব দেখা যায়। ওভারহাইড্রেশন কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। দীর্ঘ সময় ধরে এমন অবস্থা চলতে থাকলে মস্তিষ্কের কোষগুলো ফুলে যেতে পারে। এবং স্নায়ুতন্ত্রের ত্রুটির কারণে খিঁচুনি ও কোমার ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে।
জল শরীরের জন্য যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন, অতিরিক্ত কখনও তা খাওয়া ভালো নয়। বেশি জল খেয়ে সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।