AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

এক্সারসাইজ ছাড়াই ছিপছিপে শরীর পাওয়া সম্ভব মাত্র ৩ সপ্তাহে! কীভাবে?

খাদ্যে থাকে ক্যালোরি বা এনার্জি। এই এনার্জি ক্ষয় করেই আমরা রোজকার কাজ করি। এখন কারও শরীরে খাদ্যের মাধ্যমে ক্যালোরি বেশি ঢুকলে তা শরীরে মেদ হিসেবে জমা হয়। ওই ব্যক্তি মোটা হতে শুরু করেন। শুয়ে, বসে, ঘুমিয়ে আর জল খেয়ে পাওয়া সম্ভব ছিপছিপে চটপটে শরীর! কীভাবে? জানতে পড়ুন ৮ নিয়ম...

এক্সারসাইজ ছাড়াই ছিপছিপে শরীর পাওয়া সম্ভব মাত্র ৩ সপ্তাহে! কীভাবে?
ছবিটি প্রতীকী
| Updated on: May 22, 2021 | 1:21 PM
Share

চিকিৎসকরা বলেন, রোজ এক্সারসাইজ করুন, বাড়তি ক্যালোরি ঝরান। অতএব আমরা যদি খাদ্যের মাধ্যমে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ না করি, তাহলেই স্থূলত্ব আসবে না! তবে হ্যাঁ, তাই বলে পুষ্টির সঙ্গে সমঝোতা করা যাবে না। প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় এমন খাদ্য রাখতে হবে যেগুলিতে ক্যালোরি থাকবে কম, তবে সেই খাদ্যে থাকতে হবে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান অর্থাৎ ভিটামিন ও খনিজ। আসুন এবার জানা যাক নিয়মগুলি—

১) বিএমআর ক্যালোরির বেশি খাবেন না: খুব সহজভাবে বললে, সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকলে যে পরিমাণ ক্যালোরি ক্ষয় হয় তাই হল আপনার বেসাল মেটাবলিক রেট বা বিএমআর। অতএব কোনও এক্সারসাইজ না করেও সারাদিনে আপনার কতটুকু বিএমআর ক্যালোরি প্রয়োজন তা বের করতে হবে আগে। পুরুষের বিএমআর: ৮৮.৩৬২+(১৩.৩৯৭ X কেজিতে ওজন)+ (৪.৭৯৯ X সেমিতে ওজন)- (৫.৬৭৭ X বছরে বয়সের নম্বর) নারীর বিএমআর: ৪৪৭.৫৯৩ + (৯.২৪৭ X কেজিতে ওজন) + (৩.০৯৮ X সেমিতে ওজন)- (৪.৩৩০ X বছরে বয়সের নম্বর) এই ভাবে বিএমআর ক্যালোরি নির্ণয় করে সেই অনুযায়ী খাবার খেলে ওজন বাড়বে না। তবে বিএমআর ক্যালোরির নীচে কখনই খাবার খাওয়া উচিত নয়। সেক্ষেত্রে শরীর মনে করবে আপনি সঠিক মাত্রায় খাবার খেতে পারছেন না। তখন আবার শরীর মেদ সঞ্চয় করতে শুরু করবে।

আরও পড়ুন: ঘন ঘন হাই তুলছেন? হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেন টিউমারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে!

২) ডায়েট প্ল্যান: কী খাবেন তার একটা পরিকল্পনা করে রাখুন। শুধু মাত্র লো ক্যালোরি, পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার দিকে মন দিন। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, স্ন্যাকসে চিপস বা চানাচুর নয়, রাখুন অঙ্কুরিত ছোলা বা মটরসেদ্ধর মতো খাদ্য। আবার ব্রেকফাস্ট সারুন ভাজাভুজি ও ময়দা ছাড়া খাবার দিয়ে। অর্থাৎ খেতে পারেন রুটি, ছানা বা দই, কাঁচা শসা, কাঁচা, গাজর, কাঁচা টম্যাটো, সেদ্ধ ডিমের সাদা অংশ, তরমুজের মতো খাদ্য। সঙ্গে চিনি ছাড়া লাল চা খেতে পারেন। দুপুরে খান তেল কম দেওয়া সবজি। সামান্য ভাত। অল্প তেলে রান্না করা একটুকরো মাছ। আগে থেকে এইভাবে প্ল্যান করুন ও বাজার করুন। বারবার খিদে পেলে উলটোপালটা খাবার খাবেন না। খান একটু ছোলাভাজা বা শসা। শসায় ক্যালোরি নেই। এছাড়া খেতে পারেন পেয়ারার মতো ফাইবারযুক্ত ফল।

৩) জল পান করুন: কিডনির রোগ না থাকলে একজন প্রাপ্তবয়স্কের সারাদিনে আড়াই থেকে তিন লিটার জল লাগে। হজমতন্ত্রের কাজ স্বাভাবিক রাখে জল। ফলে শরীরের ক্রিয়াকলাপও স্বাভাবিক থাকে। এমনকী খাবার আধঘণ্টা আগে আগে অনেকটা জল খেলে তা পেট ভরে থাকার অনুভূতি দেয়। ফলে আমরা অতিরিক্ত খাদ্য খাওয়া থেকে বিরত থাকি। এছাড়া যখনই অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে ইচ্ছে হবে, তখনই কয়েক ঢোক জল পান করুন। দেখবেন আজেবাজে খাবার খাওয়ার ইচ্ছে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এইভাবেও শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি প্রবেশ আমরা বন্ধ কতে পারি।

৪) ১০ মিনিট আগে ঘুমোতে যান: গবেষণালব্ধ তথ্য জানাচ্ছে, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে শরীরে খিদেভাব চাগাড় দেয় ও মেজাজ তিরিক্ষে হয়ে থাকে। কোনও কাজই পরিকল্পনা অনুযায়ী করা যায় না। সমীক্ষা থেকে ও জানা যাচ্ছে, ১০ মিনিট আগে ঘুমোতে যাওয়ার অভ্যেস আমাদের ঘুমের চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে। ফলে শরীরও তাকে ফিট। লক্ষ্যে থাকা যায় স্থির।

আরও পড়ুন: ঘি নাকি মাখন! ভাল থাকতে কোনটি খাবেন?

৫) গভীর শ্বাসের ব্যায়াম: প্রতিদিন ১০ মিনিট বুক-পেট ফুলিয়ে নাকের মাধ্যম্যে গভীর ও লম্বা লম্বা শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার ব্যায়াম করুন। এর ফলে পেট ও বুকের মধ্যে থাকা মদ্যচ্ছদার সংকোচন-প্রসারণ স্বাভাবিক থাকে। ফলে ফুসফুস সঠিকভাবে কাজ করতে পারে ও শরীরে অক্সিজেন জোগানের মাত্রা ঠিক থাকে। বিপাকক্রিয়া বা খাদ্যগ্রহণের পর শোষণ ও আত্তীকরণের প্রক্রিয়া সঠিক নিখুঁত হয়। ওজন বাড়ে না।

৬) সুপার ব্রেকফাস্ট জরুরি: সকালে আমাদের শরীরের মেটাবলিজম সব থেকে বেশি থাকে। এরপর সারাদিনে মেটাবলিজম ধীরে ধীরে কমতে থাকে। রাতের দিকে মেটাবলিজমের হার তলানিতে ঠেকে। তাই সকালে পেটপুরে পুষ্টিকর খাদ্য খেলে শরীরে সেই এনার্জিকে সারাদিনে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে। ফলে ওজন বাড়ে না। বেলা গড়িয়ে আসলে শরীরে খাদ্যের মাধ্যমে গৃহীত এনার্জিকে সঞ্চয় করতে থাকে। তাই ওজনও বাড়তে থাকে।

আরও পড়ুন: সুস্থ ও ফিট থাকতে প্রেমে পড়ায় কোনও বারণ নেই!

৭) লাঞ্চ: অফিসযাত্রীরা অনেকেই ক্যান্টিনে খেয়ে ফেলেন ভাজাভুজি, ময়দা প্রধান চাইনিজ খাবার। তাদের চিকিৎসকের জন্য পরামর্শ, খাবেন না! বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে যান। কিংবা রুটি আর সবজি কিনে খান। আর হ্যাঁ, দুপুরে যে খাবারই খান না কেন, তা যেন ব্রেকফাস্টের চাইতে পরিমাণে কম হয়।

৮) এড়িয়ে চলবেন যে খাদ্য: কেক, চকোলেট, সফট ড্রিকস, যে কোনও ভাজাভুজি, প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাবার, অতিরিক্ত নুন দেওয়া খাবার, চর্বি যুক্ত মাংস, পোড়া মাংস, ময়দার খাদ্য (কারণ ময়দায় কোনও ফাইবার নেই), চিনি, গুড়, মিষ্টি, অতিরিক্ত রেড মিট। তবে মাঝেমধ্যে নিয়মভঙ্গ হবেই। সেক্ষেত্রে এগুলি গোটাগুটি না খেয়ে সামান্য মাত্রায় খান। রসানাতৃপ্তিও হবে আবার ওজনও বাড়বে না। মনে রাখবেন সংযমই পারে আপনাকে মোট হওয়ার বিপদ থেকে রক্ষা করতে।