Fever in children: অ্যান্টিবায়োটিকের কোনওই প্রয়োজন নেই, ভাইরাল ফিভারের মরশুমে বললেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ

Viral Fever Symptoms in Kids: জ্বরের জন্য একমাত্র ওষুধ প্যারাসিটামল। বাচ্চার জ্বর আসলে প্রথমেই আতঙ্কিত হয়ে পড়বেন না। প্যারাসিটামল দিয়ে তিন ঘণ্টা দেখুন

Fever in children: অ্যান্টিবায়োটিকের কোনওই প্রয়োজন নেই, ভাইরাল ফিভারের মরশুমে বললেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ
বাচ্চাদের যে সব সমস্যা জাঁকিয়ে বসছে এই মরশুমে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 29, 2022 | 5:35 PM

খামখেয়ালি আবহাওয়ায় যেমন বড়রা ভুগছে, তেমনই ভুগছে ছোটরাও। ভাইরাল জ্বর, পেটখারাপ, সর্দি, কাশির সমস্যা লেগেই রয়েছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি। অনেকের ক্ষেত্রেই ডেঙ্গি সঠিক সময়ে ধরা পড়ছে না। তিনদিন জ্বর, সর্দি-কাশির পর রক্তপরীক্ষা করায় ডেঙ্গির রিপোর্ট পজিটিভ আসছে। আর তা-ই জ্বর হলেই রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ২ দিনের বেশি জ্বর থাকলে কোনওমতেই তা হালকাভাবে না-নেওয়ার অনুরোধ বিশেষজ্ঞদের। শুধু বড়দের নয়, ছোটদের মধ্যেও ছড়াচ্ছে ডেঙ্গি। তিনমাসের শিশু যেমন আক্রান্ত হচ্ছে, তেমনই ৭ বছরের শিশুদের মধ্যেও হচ্ছে ডেঙ্গির আক্রমণ। এই মরশুমি জ্বর, সর্দি-কাশির সমস্যা থেকে কীভাবে সন্তানকে সুরক্ষিত সন্তানকে, সে বিষয়ে TV9 ডিজিটালের তরফে যোগাযোগ করা হয় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ নীলাঞ্জন ঘোষের সঙ্গে (অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর, Department of Pediatrics, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ)। যা পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক:

বাচ্চারাও কি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছে?

হ্যাঁ, বাচ্চাদেরও ডেঙ্গি হচ্ছে। ডেঙ্গি তো একরকম ভাইরাস ট্রান্সমিশন। মশা কামড়ালে তবেই হয়। বাড়িতে যদি মায়ের ডেঙ্গি হয়, আর তিনি যদি সন্তানকে স্তন্যপান করান, সেখান থেকেও সংক্রমণ হতে পারে শিশুর দেহে। তবে ডেঙ্গির বাহক মশা শিশুকে কামড়ালে তবেই সেখান থেকে আক্রান্তের সম্ভাবনা বেশি থাকে।

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা কি?

চলতি বছরে বাচ্চাদের মধ্যেই ভাইরাল সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই থাকছে প্রচণ্ড জ্বর: ১০৩-১০৪ হাই ফিভার। প্যারাসিটামল খেলে তবেই জ্বর নামছে। ডেঙ্গি ধরা পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ-চিকিৎসা চালাতে হবে। নইলে বাচ্চাদের অ্যান্টিবায়োটিক লাগে না। সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে।

ভাইরাল জ্বরও হচ্ছে—সেক্ষেত্রে কী করণীয়?

জ্বরের জন্য একমাত্র ওষুধ প্যারাসিটামল। বাচ্চার জ্বর আসলে প্রথমেই আতঙ্কিত হয়ে পড়বেন না। প্যারাসিটামল দিয়ে তিন ঘণ্টা দেখুন। যদি ওষুধ খাওয়ার পর জ্বর নামতে শুরু করে তাহলে চিন্তার কিছু নেই। ৪৮ ঘন্টা দেখুন। যদি এই সময়ের মধ্যে প্যারাসিটামল খেলে জ্বর নেমে যায়, তাহলে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনওই প্রয়োজন নেই। তিনদিন একটানা জ্বর, প্যারাসিটামল খেয়েও জ্বর যদি না কমে তখনই চিকিৎসকের কাছে যান।

অভিভাবকেরা তো অল্পেতেই ভয় পেয়ে যান …

জ্বর হলে প্যারাসিটামল দিন। সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়ান। বাচ্চার প্রস্রাবের দিকে খেয়াল রাখুন অর্থাৎ ঠিকঠাক প্রস্রাব হচ্ছে কি না। প্রস্রাবের পরিমাণ, প্রস্রাবের রঙ এসবের মধ্যে যদি কোনও পরিবর্তন দেখেন তা খেয়াল রাখুন এবং চিকিৎসককে জানাতে ভুলবেন না।

বাচ্চাদের কোন কোন ইনফেকশন বেশি হচ্ছে?

সারাবছরই বাচ্চাদের জ্বর, সর্দি-কাশি লেগেই থাকে। ভাইরাল ডায়ারিয়াও হয় বছরভর। তবে জ্বর-সর্দি তিন থেকে চারদিনের বেশি স্থায়ী হয় না। বাচ্চা নিজে থেকেই সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে যে কোনও ইনফেকশন থেকে সেরে উঠলেও থেকে যায় ক্লান্তি। বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও দুর্বলতা থেকে যাচ্ছে বেশ কিছুদিন। তবে পরিবেশের সঙ্গে বাচ্চাকে মানিয়ে নিতে হবে। তাই একবেলা জ্বর দেখলেই অ্যান্টিবায়োটিকের দিকে ঝুঁকবেন না।

জ্বরের সঙ্গে অনেক বাচ্চার বমিও তো হচ্ছে…

বাচ্চাকে ফোর্স ফিড করালে অর্থাৎ জোর করে খাওয়ালে মূলত তখনই বমি করে। খেতে ইচ্ছে করলে, পেটে খিদে থাকলে বাচ্চা ঠিক খেয়ে নেয়। কিন্তু তাকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করলেই সে বমি করে দেয়। বারে বারে একদম অল্প করে খাবার নিয়ে বাচ্চাকে খাওয়ান। সময় নিয়ে খাওয়ান। অধৈর্য হয়ে পড়লে চলবে না। সব সময় জল বেশি করে খেতে হবে। সঙ্গে ডাবের জল, ফলের রস, সবজি, ফল এসব খাওয়ালে ভাল।

পুজোর মরশুমে বাচ্চাদের সুস্থ রাখতে অভিভাবকদের জন্য কী পরামর্শ দেবেন?

বাচ্চার জ্বর হলেই আতঙ্কিত হবেন না। কতক্ষণের গ্যাপে জ্বর আসছে, তা খেয়াল রাখুন। যদি দেখেন যে প্যারাসিটামল দিলে জ্বর নেমে যাচ্ছে, তাহলে অহেতুক প্যানিক করবেন না। বাচ্চাকে প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়ান। বয়স ৫ পেরোলেই বাইরে বেরনোর সময় মাস্ক পরানোর অভ্যাস করুন। ধোঁয়া, দূষণ থেকে বাচ্চাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়। অ্যালার্জি হয়। মাস্ক পরলে তা অনেকটাই আটকানো যাবে। বাচ্চাদের টয়লেটে যাওয়ার অভ্যাস করান ছোট থেকে। বাচ্চা না খেতে চাইলে জোর করে মুখে খাবার গুঁজে দেবেন না।

সারা বছর যেসব বাচ্চার সর্দি-কাশির সমস্যা লেগে থাকে, অনেকেই বলেন যে তার ডাস্ট অ্যালার্জি থেকে সমস্যা হচ্ছে। মূল কারণ কিন্তু সব সময় তা হয় না। ধোঁয়াও এর পিছনে দায়ী। সারাক্ষণ বাড়িতে মশার ধূপ, তেল জ্বেলে রাখলে, ধুনো-ধূপের ধোঁয়া থেকেও বাচ্চার সর্দি-কাশি হয়। এই ধোঁয়া সরাসরি ফুসফুসে আঘাত করে। যে কারণে বড় বয়সে অ্যাজ়মা হয়।