Assam Medical Negligence: অপরিণত ভ্রূণ, পেট কেটেও ফের সেলাই করে দিলেন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক! সঙ্কটজনক প্রসূতি
Assam Medical Negligence: বুধবার বিকেলে ওই প্রসূতির পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা চিকিৎসকের উপরে চড়াও হন। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসক নিজেকে ঘরবন্দি করে নেন।
গুয়াহাটি: পেটে প্রচন্ড যন্ত্রণা হতেই সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে নিয়ে সরকারি হাসপাতালে ছুটেছিলেন স্বামী। সেখানে চিকিৎসককে দেখাতেই তিনি তৎক্ষণাৎ সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। কিন্তু সন্তান হওয়ার কথা তো ডিসেম্বরে! পরিবারের সদস্যরা সে কথা চিকিৎসককে জানালেও তিনি কোনও কথাই শোনেননি। গর্ভবতী ওই মহিলার পেট কাটার পর চিকিৎসক বুঝতে পারেন যে, ভ্রূণটি এখনও অপরিণত। তড়িঘড়ি তিনি সেলাই করে দেন প্রসূতির পেট। এক সপ্তাহ হাসপাতালে রেখে, পরে ওই মহিলা সুস্থ রয়েছেন বলে ছেড়েও দেন। কিন্তু বাড়ি পৌঁছতেই ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। গোটা ঘটনার জন্যই দায়ী করা হয়েছে চিকিৎসককে। ঘটনাটি ঘটেছে অসমের করিমগঞ্জে।
জানা গিয়েছে, গত ২২ অগস্ট গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে করিমগঞ্জের সিভিল হাসপাতালে যান রাম নমসুদ্র নামক ওই ব্যক্তি। সেখানে ডঃ একে বিশ্বাসকে দেখানো হলে, ওই চিকিৎসক সঙ্গে সঙ্গে সি-সেকশন করে সন্তান প্রসব করাতে হবে বলে জানান। সেই মতো ওই মহিলাকে অপারেশন থিয়েটারেও নিয়ে যান। কিন্তু পেট কেটে শিশুটিকে বের করতে গিয়েই দেখেন ভ্রূণটি এখনও অপরিণত রয়েছে। এরপরই তিনি আবার ওই মহিলার পেট সেলাই করে দেন। পরিবারের লোকজনদের তিনি কিছুদিন ওই গর্ভবতী মহিলাকে হাসপাতালেই ভর্তি রাখার পরামর্শ দেন। ডিসেম্বরে তিনি আবার সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করার চেষ্টা করবেন বলেও জানান।
চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই ১০ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকেন ওই মহিলা। ৩১ অগস্ট তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বাড়িতে আসার পরই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। ওই প্রসূতির অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক বলেই জানা গিয়েছে।
এদিকে, বুধবার বিকেলে ওই প্রসূতির পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা চিকিৎসকের উপরে চড়াও হন। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসক নিজেকে ঘরবন্দি করে নেন। পরে এক ঘণ্টা বাদে তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন এবং ওই গর্ভবতী মহিলার পেট কাটা এবং ভ্রূণটি অপরিণত দেখতে পেয়ে ফের সেলাই করে দেওয়ার কথা স্বীকার করে নেন। ওই চিকিৎসকের দাবি, তিনি জানতেন যে ডিসেম্বরে সন্তান হওয়ার কথা ছিল ওই মহিলার। কিন্তু অনেক সময়ই নানা শারীরিক জটিলতার কারণে আগেই অস্ত্রোপচার করে ভ্রূণ বের করে আনা হয়। এক্ষেত্রেও তিনি প্রসূতির পরিবারকে গোটা বিষয়টি জানিয়েছিলেন এবং তাদের অনুমতি নেওয়ার পরই পেট কাটেন। কিন্তু ভ্রূণটিকে অপরিণত দেখে তিনি ফের সেলাই করে দেন পেট। তিনি ওই প্রসূতির চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করার কথাও বলেছেন।
করিমগঞ্জ হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ডঃ লিপি দেব সিনহা জানান, গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য সাত সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে এবং প্রসূতির পরিবারকে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদি ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আনা গাফিলতির অভিযোগ ,সত্যি হয়, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।