BJP: পার্কস্ট্রিট থেকে দুর্গাপুর, মমতার কী কী ‘মন্তব্য’ তুলে ধরলেন সুষমা স্বরাজের কন্যা?
Bansuri Swaraj: রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, রাজ্যে বিজেপি নেতারা যখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন, তখন দিল্লিতে এই সাংবাদিক বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গে ধর্ষণের অভিযোগ যে জাতীয় স্তরেও বিজেপি তুলে ধরতে চাইছে, তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন বাঁশুরীরা।

নয়াদিল্লি: দুর্গাপুরে ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে বাড়ছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এই আবহে তৃণমূলের আমলে রাজ্যে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে সরব হলেন বিজেপি নেত্রী তথা প্রয়াত সুষমা স্বরাজের কন্যা বাঁশুরী স্বরাজ। পার্কস্ট্রিটকাণ্ড থেকে আরজি কর এবং দুর্গাপুরের ঘটনা তুলে ধরলেন। সেই সব ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী কী কী মন্তব্য করেছিলেন, তা তুলে ধরেও আক্রমণ করলেন বাঁশুরী স্বরাজ।
সোমবার নয়াদিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করেন বাঁশুরী স্বরাজ। সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই তিনি জানিয়ে দেন, সংবেদনশীল বিষয়ে কথা বলতে তিনি এসেছেন। তারপরই বলেন, “এটা খুবই দুর্ভাগ্যের যে মা দুর্গার বাংলায় মহিলারা সুরক্ষিত নন।” এরপরই দুর্গাপুরে ডাক্তারি পড়ুয়াকে গণধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন তিনি। ২০১১ সালে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন ধর্ষণের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতার মন্তব্য তুলে ধরে সরব হন।
বাঁশুরী বলেন, “দুর্গাপুরের ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, মহিলাদের বেশি রাতে বাইরে বেরনো ঠিক নয়। এই প্রথম নয়। এইরকম মন্তব্য তিনি ধারাবাহিকভাবে করেছেন।” এরপরই পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক ঘটনার কথা তুলে ধরেন বাঁশুরী। বলেন, “আমাদের মনে আছে পার্কস্ট্রিটকাণ্ডের কথা। ২০১২ সালে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করা হয়েছিল। সেইসময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্যাতিতাকে দোষারোপ করে বলেছিলেন, সাজানো ঘটনা। এটা লজ্জাজনক।”
এরপর ২০২২ সালে নদিয়ার হাঁসখালিতে নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগের প্রসঙ্গ তোলেন বাঁশুরী। বলেন, “১৪ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়। সেইসময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, এটা প্রেমের সম্পর্ক।” ২০১৩ সালের কামদুনির ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। বিজেপি নেত্রী বলেন, “কামদুনির ঘটনা নারী-পুরুষ সবাইকে নাড়া দেবে। নৃশংসভাবে ধর্ষণ করে নাভি পর্যন্ত চিরে দেওয়া হয়েছিল। আপনারা অবাক হবেন, ওই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, এটা সিপিএম সমর্থকদের ষড়যন্ত্র।”
সন্দেশখালিতে তৃণমূলের পার্টি অফিসে নির্যাতনের ঘটনারও এদিন উল্লেখ করেন বাঁশুরী। তারপর আরজি করে ডাক্তারি পড়ুয়াকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা টেনে বাঁশুরী বলেন, “যখন আরজি করের ঘটনায় সাধারণ মানুষ ন্যায়ের দাবিতে রাস্তায় নামে তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাগিয়ে দেন।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি অনুরোধ করেন, নির্যাতিতারা যাতে বিচার পান, তার জন্য পদক্ষেপ করুন। নির্যাতিতাদের পাশে বিজেপি সবসময় রয়েছে বলেও তিনি জানান। বলেন, “নির্যাতিতারা যাতে বিচার পান, তার জন্য বিজেপি সবসময় চেষ্টা চালিয়ে যাবে।”
রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, রাজ্যে বিজেপি নেতারা যখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন, তখন দিল্লিতে এই সাংবাদিক বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গে ধর্ষণের অভিযোগ যে জাতীয় স্তরেও বিজেপি তুলে ধরতে চাইছে, তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন বাঁশুরীরা।
এদিকে দুর্গাপুরে ডাক্তারি ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে শোরগোলের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “বাজে ঘটনা হয়েছে। তবে এই ধরনের ঘটনা সারা দেশে ঘটছে। শুধু বাংলায় ঘটছে, তা নয়। রাজ্য পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে। পরপর গ্রেফতার শুরু হয়েছে। ওড়িশায় কী হচ্ছে? ওড়িশায় পরপর ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। তখন ওড়িশায় বিজেপি প্রশাসন, কমিশন, এসব থাকে কোথায়?”
