‘সিক্সার সিধু’র প্রত্যাবর্তন, পঞ্জাব কংগ্রেসের ‘ক্যাপ্টেন’ জাঠ পুত্তর নভজ্যোত

Congress: ক্রিকেট জীবনের শুরুর দিনগুলোর মতোই রাজ্য–রাজনীতিতে সিধু অনেকটা ‘স্ট্রোকলেস ওয়ান্ডার’ হয়ে ছিলেন।

'সিক্সার সিধু'র প্রত্যাবর্তন, পঞ্জাব কংগ্রেসের 'ক্যাপ্টেন' জাঠ পুত্তর নভজ্যোত
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 19, 2021 | 12:58 AM

নয়া দিল্লি: ক্রিকেট জীবনে নভজ্যোত সিং সিধুর দ্বিতীয় ইনিংস যাঁদের মনে আছে, তাঁদের পঞ্জাবের প্রাক্তন এই মন্ত্রীর রাজনীতির দ্বিতীয় ভাগ মিলিয়ে নিতে অসুবিধা হবে না। জাঠ রাজ্যে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হয়েই প্রত্যাবর্তন হল ‘সিক্সার সিধু’র। ক্রিকেট জীবনের মধ্য গগনেই উত্থান হয়েছিল সিধুর। বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজ্য–রাজনীতির পিচেও তাঁর প্রত্যাবর্তন দলের ক্যাপ্টেন হয়ে।

আগামী বছর পঞ্জাবে বিধানসভার ভোট। দলীয় কোন্দলের জল অনেক আগেই মাথা ছাড়িয়ে জনপথে গিয়ে পৌঁছে ছিল। আবার প্রদেশ রাজনীতি এবং মন্ত্রিসভায় হিন্দু প্রাধান্যের দাবিদারও ছিল স্থানীয় নেতৃত্ব। কিন্তু বিজেপির হিন্দুত্বকে ঠেকাতে পাল্টা হিন্দুত্বের বোড়ে না সাজিয়ে প্রথমে দলের কোন্দলকেই ঠাণ্ডা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি বা এআইসিসি। তবে সিধুর সঙ্গে হিন্দু এবং দলিত নেতাদেরও কার্যকরী ভূমিকায় জুড়ে দেওয়া হয়েছে পঞ্জাব প্রদেশে। রাজ্যের পর্যবেক্ষক হরিশ রাওয়াত সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং ও সিধুর সঙ্গে ম্যারাথন বৈঠক সারেন। ফলাফল তার পরপরই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। রবিবার শুধু হাতে এল ব্যালান্স শিট।

বস্তুত, পঞ্জাবের বিগত কয়েক বছরের রাজনীতির দিকে নজর দিলেই বোঝা যাবে সেখানে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের মুখ্যমন্ত্রিত্বে কংগ্রেসের সরকারকে মানুষ মেনে নিলেও দলীয় কোন্দলে নেতৃত্বের মধ্যে অস্বস্তি বাড়ছিল। বছর চারেক আগে বিজেপি থেকে কংগ্রেসে যোগ দেন সিধু। অমরিন্দরের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভোটপ্রচার করেন। জিতে এসে সিধুকে মন্ত্রিত্বও দেন ক্যাপ্টেন। কিন্তু ক্রিকেট জীবনের শুরুর দিনগুলোর মতোই রাজ্য–রাজনীতিতে সিধু অনেকটা ‘স্ট্রোকলেস ওয়ান্ডার’ হয়ে ছিলেন। তার পর থেকেই ধীরে ধীরে সম্পর্কের অবনতি। সরকারের একাধিক সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা ক্যাপ্টেনের সঙ্গে বিবাদে জড়ান সিধু। তাঁকেও একঘরে করে রাখার অভিযোগ ওঠে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। শেষে ২০১৯ সালে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে জাতীয় রাজনীতিতে মন দেন প্রাক্তন ক্রিকেটার। লোকসভা ভোটের প্রচারে নামেন। কিন্তু ততদিনে দলীয় কোন্দল শুরু হয়ে গিয়েছে পঞ্জাবে। এবার বিধানসভা ভোট। যাকে সামনে রেখে ফের নতুন উদ্যমে রাজ্য–রাজনীতিতে প্রবেশ করতে চাইছেন সিধু।

আর এর প্রথম ধাপেই সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণের পথ নিয়েছিলেন। একটা সময় সিধুর আম আদমি পার্টি বা আপ-এ যোগ দেওয়া নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়। কোন্দলের জেরে দলে চিড় আরও চওড়া হচ্ছিল। সভাপতি বদলের দাবিও উঠছিল। কিন্তু অমরিন্দরকে সভাপতির দায়িত্ব দিতে চায়নি এআইসিসি। কারণ মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর জনপ্রিয়তা। তাঁকে মুখ করেই তাই আবার পরের বছর ভোটে যেতে চায় দল। এদিকে দলের হিন্দু নেতারা হিন্দু সভাপতি খুঁজছিল। কিন্তু সেই দাবিকে মান্যতা দিলে দলে ধর্মীয় রাজনীতি বাসা করত। দলিত নেতারা ক্ষুণ্ন হতেন। এই অশনি সঙ্কেতের সমাধান সূত্র বের করার পিছনে কিছুটা প্রশান্ত কিশোরের মদতও দেখছে রাজনৈতিক মহল।

কারণ রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিক বৈঠক। তার পরপরই সরাসরি জাঠ প্রদেশের রাজনীতিতে সোনিয়া গান্ধীর হস্তক্ষেপ। এবং দলের দায়িত্ব সিধুর হাতে তুলে দেওয়া। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করেছে এতে সরকারের মুখ রক্ষাও হবে। আবার দলেও কোন্দল থামবে সিধুর কৃতিত্বে। সঙ্গে কার্যকরি সভাপতি হিসাবে জুড়ে দেওয়া দুই জাঠ, এবং এক হিন্দু ও দলিত নেতাকে।  আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও এ বছর বন্ধ প্রবেশিকা, জানিয়ে দিল ইউজিসি

COVID third Wave