নতুন বছরেও দাপট কমছে না ওমিক্রনের। পাল্লা দিচ্ছে করোনা সংক্রমণও। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দাপটে দেশ তথা বিশ্বজুড়েই বাড়ছে সংক্রমণ। দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার পার করেছে। দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো বড় শহরগুলিতে শুরু হয়ে গিয়েছে করোনা ও ওমিক্রনের গোষ্ঠী সংক্রমণ। কলকাতাতেও লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এখনও অবধি বিশ্বের ১২৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। করোনা ও ওমিক্রন সংক্রান্ত যাবতীয় আপডেট দেখে নিন একনজরে-
রোটেশনের ভিত্তিতে স্নান ও দর্শনের কথা জানিয়েছে রাজ্য। তাতে সংক্রমণের ভয় কমবে বলেই মত রাজ্যের। ‘সৎকার ঘাটের তালিকাও এ দিয়েছে রাজ্য। এজি গোপাল মুখোরপাধ্য়ায়ের দাবি, তাঁরা গোটা এলাকাকেই কন্টেইনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করবেন খারাপ পরিস্থিতি হলে। রাজ্যের আরও দাবি, গঙ্গাসাগর মেলার পাশের হাসপাতাল আপাতত ভালই কাজ করছে। সাগরে সবাইকে দ্বিতীয় ভ্যাকসিনও দেওয়া হয়েছে। রাজ্য আশা করছে পাঁচ লক্ষ পূণ্যার্থীর বেশি আসবেন না। উল্লেখ্য, গত বছর কুম্ভমেলা থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল ব্যাপক হারে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো উচিৎ ছিল বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দাপটে দেশ তথা বিশ্বজুড়েই বাড়ছে সংক্রমণ। চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি ওমিক্রন করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মত গুরুতর নয়। চিকিৎসকদের এই দাবিকে স্বীকৃতি দিয়েও উদ্বেগের কথা শোনাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বৃহস্পতিবার সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে ওমিক্রন কম গুরুতর হলেও এর ফলে হওয়া সংক্রমণ মোটেই মৃদু নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্টের প্রধান জানেট ডিয়াজ় জানিয়েছেন, ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সম্ভাবনা কম থাকলেও সংক্রমণ মোটেই মৃদু নয়।
কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায়চৌধুরী এবং তাঁর স্ত্রী কোভিড পজিটিভ। ছেলেরও জ্বরের উপসর্গ রয়েছে।
কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে বহির্বিভাগ পরিষেবায় রাশ টানা হল। শুক্রবার থেকে বহির্বিভাগে যে সকল রোগীরা আসবেন, তাঁদের হাসপাতালের দুটি কেন্দ্র থেকে দেখা হবে। কাউকে ফিরিয়ে না দেওয়া হলেও যাঁদের একান্তই ভর্তি করা প্রয়োজন তাঁদেরই ভর্তি নেওয়া হবে। গত এক সপ্তাহে ১০০-রও বেশি চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী পজিটিভ। তাই এই সিদ্ধান্ত। বর্হির্বিভাগে কর্তব্যরত অবস্থায় অনেকে সংক্রমিত হয়েছেন। সংক্রমণে রাশ টানতে বহির্বিভাগ পরিষেবায় কাটছাঁট করা হল।
দেশে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। করোনা রোষে কাবু হচ্ছেন রাজনৈতিক নেতারা। এবার করোনা আক্রান্ত হলে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। মৃদু কোভিড সংক্রমণ রয়েছে এই প্রবীণ কংগ্রেস নেতা। নিজেই সোশ্যাল মিডিয়াতে সংক্রমণের খবর জানিয়েছেন তিনি। টুইটে তিনি লিখেছেন, “আজ সন্ধে বেলা আমি কোভিড পজিটিভ হয়েছি। আমার সংক্রমণ খুবই মৃদু এবং অন্য কোনও সমস্যা নেই। যাঁরা আজ আমার সংস্পর্শে এসেছেন তাদের কাছে অনুরোধ আপনার নিভৃতবাসে যান এবং দ্রুত করোনা পরীক্ষা করান।”
This evening I got myself tested for Covid and was found positive. My symptoms are very light and there is no other problem. All those who came into contact with me today, I request them to isolate themselves and undergo Covid-Test.
— Ashok Gehlot (@ashokgehlot51) January 6, 2022
বৃহস্পতিবার কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদীর একটি বৈঠক হয়। আর সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে বাজারগুলিতে এবার থেকে বিক্রেতা পিছু একজন করে ক্রেতাকেই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। শীঘ্রই এই নিয়ম কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়ম যাতে সঠিক ভাবে কার্যকর হয়, তা দেখার ভার দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশকে। এদিন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী ছাড়াও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও ছিলেন এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যে বাজারে যতজন বিক্রেতা থাকবেন, ঠিক ততজন ক্রেতাকেই ঢোকানো হবে বাজারে। অর্থাৎ একটা বাজারের যদি ১০০ জন বিক্রেতা থাকেন, তাহলে গুনে গুনে ১০০ জন ক্রেতাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। সেই ক্রেতারা যখন বেরোবেন, তখন অপর রাস্তা দিয়ে বাকিদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও বাংলায় বাড়ল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। যদিও গত কয়েকদিনে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা যে ভাবে লাফ দিয়েছে, আজ তার হার কিছুটা কম। বুধবারের তুলনায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে এক হাজারের কিছু বেশি। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ৪২১, বুধবার যে সংখ্যাটা ছিল ১৪ হাজার ২২। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। বুধবারের তুলনায় পজিটিভিটি রেট বেড়েছে কিছুটা। বুধবার যে হার ছিল ২৩.১৭ শতাংশ, বৃহস্পতিবার সেটাই বেড়ে হয়েছে ২৪.৭১ শতাংশ।
দেশে আছড়ে পড়েছে করোনা সংক্রমণে তৃতীয় ঢেউ। দেশের বিভিন্ন জায়গায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। বৃহস্পতিবার, দিল্লিতে ১৫ হাজার জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, যা গত আট মাসে সর্বাধিক। সব মিলিয়ে ৪১.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বৃহস্পতিবার দিল্লির করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯৭। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ৬ জনের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। উদ্বেগ বাড়িয়ে দিল্লিতে হাসপাতালে ভর্তি সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ১ জানুয়ারি করোনা সংক্রমণ নিয়ে ২৪৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, ৪ জানুয়ারি সংখ্যাটা ৫৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি রাজধানীতে আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেন এর চাহিদাও বাড়ছে। আগে ৯৪ জন রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন ছিল, এখন সেই সংখ্যাটা ১৬৮। ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীর সংখ্যা ১ থেকে বেড়ে ১৪ হয়েছে।
নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৯ জন চিকিৎসক, জুনিয়র চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত। ওয়ার্ডে রোগীর পরিজনদের যাতায়াতে রাশ টানছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কমিয়ে আনা হল অস্ত্রোপচারের সংখ্যা।
কলকাতা: রাজ্যে ঊর্ধ্বমুখী করোনা গ্রাফ (COVID19) । পিছিয়ে নেই কলকাতায়। করোনা মোকাবিলায় আগেভাগেই পথে নেমেছে কলকাতা পুরসভা। করোনা আক্রান্তদের কাছে ঠিকমতো খাবারের প্যাকেট পৌঁছচ্ছে কি না সে ব্যাপারে নিখুঁত তথ্য চাইল বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।
বিস্তারিত পড়ুন: COVID19 in Kolkata: খাবার পাচ্ছেন তো করোনা আক্রান্তরা? পুরসভার কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের
কলকাতা: রাজ্যে ফের ঊর্ধ্বমুখী করোনা গ্রাফ। রবিবারই মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ঘোষণা করেছেন, সোমবার থেকে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকলেও আগামী ৯ জানুয়ারি স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট (SET) নেবে কলেজ সার্ভিস কমিশন। কিন্তু, কোভিড আবহে আপাতত পরীক্ষা স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি দিল সরকারি কলেজ শিক্ষক সংগঠন।
বিস্তারিত পড়ুন: SET Examination: পরীক্ষার্থীদের জন্য দুঃসংবাদ! ফের থমকে যেতে পারে SET, কোভিড-কাঁটায় পরীক্ষা স্থগিতের আর্জি
কলকাতা: ভয় ধরাচ্ছে করোনা গ্রাফ। কলকাতায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতেই এ বার ফের বাড়ানো হল মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা। আগে মোট ২৫ টি এলাকাকে চিহ্নিত করে মাইক্রোকনটেইনমেন্ট জ়োন (Micro Containment Zone) ঘোষণা করা হয়েছিল। এ বার সেই সংখ্যা বেড়ে হল ৪৮। অর্থাৎ, প্রায় দ্বিগুণ। মাইক্রোকনটেইনমেন্ট জ়োনের তালিকায় রয়েছে রীচি রোডের একটি আবাসনও। সেখানে আবাসনের সামনে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে।
বিস্তারিত পড়ুন: COVID19 in Kolkata: ২৫ থেকে ৪৮! একলাফে প্রায় দ্বিগুণ হচ্ছে মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জ়োন
কলকাতা: করোনায় (COVID -19) আক্রান্ত পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। তবে কেবল স্বাস্থ্য অধিকর্তা নন, আক্রান্ত হয়েছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশনের ৮৭ জন। মোট ১৩৫ জনের ৮৭ জনই করোনা আক্রান্ত। প্রথমে সংখ্যাটা ছিল ৬৬। সেটাই বেড়ে দাঁড়িয়ে হয় ৮৭। পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যাচ্ছে, স্বাস্থ্যভবনে কার্যত থাবা বসিয়ে দিয়েছে করোনা। স্বাস্থ্য ভবনের মূল প্রশাসনিক কার্যালয়ে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্ত হয়েছেনে অনেকেই।
বিস্তারিত পড়ুন: COVID19 in Swasthya Bhaban: কেবল রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা নন, কোভিড-আক্রান্ত মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশেনের ৮৭ জন!
করোনা আক্রান্ত অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও। টুইট করে জানিয়েছেন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। লিখেছেন, “সবাইকে আপডেট করতে থাকব। এখন কেবল এটাই বলতে পারি, যাঁরা যাঁরা আমার সংস্পর্শে এসেছেন এই ক’দিনে দয়া করে করোনা পরীক্ষা করিয়ে নিন।” টুইটে তিনি আরও লিখেছেন, “২৭ ডিসেম্বর মুম্বইয়ে ছিলাম। সেখানে হালকা উপসর্গ ছিল। কিন্তু করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কলকাতায় ফিরেছি ৩০ ডিসেম্বর। ২ জানুয়ারির মধ্যে সমস্ত উপসর্গ চলে গিয়েছিল আমার। রুটিন পরীক্ষা করেছিলাম। রিপোর্টে এসেছে আমি করোনা পজ়িটিভ। ৩দিন পর আবার পরীক্ষা করাব।”
বিস্তারিত পড়ুন: Parambrata-Rudranil: একদিকে পরমব্রত, অন্যদিকে রুদ্রনীল; করোনায় ‘হাওয়া বদলে’ যাচ্ছে টলি তারকাদের
টলিউডে একের পর এক অভিনেতারা করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এদিন অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষও করোনা আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান। তিনি পোস্ট করে বলেছেন, “আমি করোনা পজ়িটিভ। হোম আইসোলেশনে আছি। সবাই সাবধানে থাকুন সুস্থ থাকুন।”
করোনা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না দেশের নেতা মন্ত্রীরাও। দুদিন আগেই খবর মিলেছিল করোনা আক্রান্ত হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সূর্যেওয়ালা। গতকাল বিহারের দুই উপ-মুখ্যমন্ত্রীও করোনা আক্রান্ত হন। আজ সকালে জানা গেল, করোনা আক্রান্ত হয়েছেন স্বরাষ্ট্র বিষয়ক প্রতি মন্তরী নিত্য়ানন্দ রাই।
কোনও উপসর্গই নেই। পরীক্ষাও করেননি তাঁরা। তাই কোভিড পজিটিভ হওয়ার কোনও প্রশ্নই আসছে না। অথচ সাতসকালে ঘুম থেকে উঠে তাঁরা দেখলেন, তাঁদের বাড়ি স্যানিটাইজেশন হচ্ছে। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য দফতরের থেকেই নাকি স্যানিটাইজ করা হচ্ছে তাঁদের বাড়ি। প্রশ্ন করা হলে, স্বাস্থ্যকর্মীদের সাফ জবাব, ‘চুপ করে থাকুন। আপনাদের করোনা হয়েছে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে এই এলাকা কনটেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করে দেব।’ এমনই বিচিত্র অভিযোগ উঠল এবার শিলিগুড়িতে। তবে পুরভোটের আবহে এই ঘটনার নেপথ্যে রাজনৈতিক রঙ খুঁজে পাচ্ছেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ নেতা তথা নির্দল প্রার্থী বিকাশ সরকার।
বিস্তারিত পড়ুন: Siliguri Municipal Corporation Election 2022: প্রশাসন এলাকা স্যানিটাইজ করতে বাসিন্দারা জানলেন তাঁরা নাকি কোভিড পজিটিভ! ব্যাপারটা কী?
দেশজুড়ে একের পর এক হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এদিন মহারাষ্ট্রের আবাসিক চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফে জানানো হয়, মুম্বিয়ের সিওন হাসপাতালে আরও ৩০ জন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এই নিয়ে রাজ্যে মোট ২৬০ জন আবাসিক চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হলেন।
চিকিৎসকদের পর এবার করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশ কর্মীরাও। গত ২৪ ঘণ্টাতেই মুম্বই পুলিশের ৭১ জন কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এই নিয়ে পুলিশ বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৬৫-এ।
ওমিক্রনে প্রথম মৃত্যুও হয়েছে রাজস্থানে। সেখানে ৭৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে করোনার এই অতি সংক্রামক নতুন স্ট্রেনে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তি সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ছিলেন এবং তাঁর কোনও ভ্রমণের ইতিহাসও ছিল না।
করোনার পাশাপাশি দেশে ওমিক্রন সংক্রমণের হারও বেড়েছে। দেশে ইতিমধ্যেই ২৬টি রাজ্য়ে ছড়িয়ে পড়েছে ওমিক্রন। বর্তমানে দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ২৬৩০। দেশের মধ্যে সর্বাধিক আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে মহারাষ্ট্র থেকেই, সেখানে এখনও অবধি ৭৯৭ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। সংক্রমণের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি, সেখানে ৪৬৫ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।
৫০ হাজার থেকে এবার লাখের গণ্ডির কাছাকাছি পৌঁছে গেল দেশের দৈনিক করোনা সংক্রমণ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ৯২৮ জন। গতকালই এই সংখ্য়াটা ছিল ৫৮ হাজার ৯৭। একদিনেই সংক্রমণ প্রায় ৫৫ শতাংশ বেড়ে ৯০ হাজারে পৌঁছে গেল। সামান্য কমেছে সুস্থতার হারও। বর্তমানে দেশে সুস্থতার হার ৯৭.৮১ শতাংশ।
গত ৩০ ডিসেম্বর দেশে সংক্রমণের হার ছিল ১.১ শতাংশ, পরের দিনই তা বেড়ে ১.৩ শতাংশে পৌঁছয়। বর্তমানে দেশে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ পার করেছে। একইভাবে ৩০ ডিসেম্বর দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার, মঙ্গলবার সেই সংখ্য়াই ৫৮ হাজারে পৌঁছেছে।
এই বিষয়টি আরও স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে ডঃ ভিকে পাল বলেন, “বোঝাই যাচ্ছে যে মহামারির মেয়াদ আরও বাড়ছে। বর্তমানে দেশের আর নট ভ্যালু ২.৬৯। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ যখন শীর্ষে পৌঁছেছিল, তখন আর ভ্যালু ছিল ১.৬৯,অর্থাৎ এ যাবৎ এত দ্রুত সংক্রমণের বৃদ্ধি আগে হয়নি।”
বিস্তারিত পড়ুন: India’s R Value Higher than Second Wave: দ্বিতীয় ঢেউয়ের রেকর্ডকেও টপকে গেছে ‘আর ভ্যালু’, সংক্রমণের এই গতি নিয়ে কী বলছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক?
কীভাবে সংক্রমণ রোখা সম্ভব, এই প্রশ্নের জবাবে আইসিএমআরের প্রধান ডঃ বলরাম ভার্গব বলেন, “সংক্রমণ রুখতে বা কমাতে প্রথমেই প্রয়োজন ভিড় জায়গা এড়িয়ে চলা।” নীতি আয়োগের সদস্য ডঃ ভিকে পালও বলেন, “আমরা হঠাৎ করে সংক্রমণের ব্যপক বৃদ্ধি দেখছি এবং আমাদের বিশ্বাস, এর বড় অংশই হচ্ছে ওমিক্রন ভ্য়ারিয়েন্টের কারণে। বিশেষত দেশের পশ্চিম অংশে ও বড় বড় শহরগুলিতে। প্রাপ্ত তথ্য এই কথাই বলছে।”
লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দেশের করোনা সংক্রমণ। ওমিক্রনের দাপটেই এই সংক্রমণ বৃদ্ধি হচ্ছে বলে মনে করা হলেও, বর্তমানে দেশের আর নট ভ্যালু সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় বেশি হওয়ায় কিছুটা উদ্বেগের মধ্যেই রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। বুধবার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়, দেশের আর নট ভ্যালু বর্তমানে বেড়ে দাড়িয়েছে ২.৬৯-এ, যা এ যাবৎ সর্বোচ্চ হার। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় দেশের আর ভ্যালু ছিল ১.৬৯।
নতুন বছরে শুরু হয়েছে করোনা টিকাকরণের নতুন অধ্যায়। ৩ জানুয়ারি থেকে করোনা টিকা নিতে পারছে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীরাও। আর মাত্র তিনদিনেই সেই টিকাকরণের সংখ্যা ১ কোটির গণ্ডি পার করেছে। বুধবারই কো-উইন পোর্টালের ড্যাশবোর্ডে দেখা যায়, এখনও অবধি ১.২৯ কোটি ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী নাবালক/নাবালিকারা করোনা টিকার প্রথম ডোজ় পেয়েছে।