ইমেলে হুমকি, বিকৃত ছবি, তারপর ‘গণধর্ষণ’! ছাত্রীকে জোর করে পিল খাওয়ানোরও চেষ্টা হয়েছিল, চাঞ্চল্যকর বয়ান
Physical Assault: রবিবার হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে যুবতীর মর্ফড ছবি পাঠানো হয়। হুমকি দেওয়া হয় যে গেট নম্বর ৩-র কাছে যদি দেখা করতে না আসে, তাহলে এই ছবি কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে ভাইরাল করে দেওয়া হবে। যুবতী তাঁর বন্ধুদের ফোন করে জানানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তাদের পাচ্ছিল না।

নয়া দিল্লি: দুর্গাপুরের পর এবার দিল্লি। রাজধানীর বুকেই নামজাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ। দক্ষিণ দিল্লির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটেক পড়ুয়া ওই ছাত্রীকে রবিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরেই গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। নির্যাতিতার বয়ানের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
১৮ বছরের যুবতীর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরেই তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। সে যখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে জানায়, তখন তাঁর অভিযোগ শোনার বদলে হস্টেলের কর্মীরা উল্টে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। বলে যে পরিবারে যেন এই কথা না জানায়।
পুলিশের কাছে দেওয়া বয়ান অনুযায়ী, হস্টেল ইনচার্জ ওই যুবতীকে সাহায্য করার বদলে উল্টে তাঁকে দোষারোপ করে। বলে যে মেয়েদের অনেক বয়ফ্রেন্ড আছে। কম নজরদারি থাকার কারণেই তারা ছেলেদের নিজেদের রুমে আনতে পারে। তাঁর শারীরিক অবস্থা দেখেও চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে, স্নান করে পোশাক বদলে নেয়!
যুবতীর আরও অভিযোগ, গণধর্ষণের আগে বেশ কয়েকদিন ধরেই তাঁকে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছিল। তাঁর কাছে হুমকি ইমেল ও অশ্লীল মেসেজ আসছিল। তাঁকে ক্যাম্পাসের গেস্ট হাউসের কাছে রাত ১১টা ২৭ মিনিট নাগাদ দেখা করতে বলা হয়েছিল। প্রথমদিন সেই হুমকি ইমেলে গুরুত্ব দেয়নি যুবতী। পরেরদিন তার কাছে আরও একটি হুমকি ইমেল আসে, যাতে অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছিল এবং হস্টেলের পিছনে দেখা করতে বলা হয়েছিল। যুবতী ওই মেল তাঁর তিন সহপাঠীকে দেখায়। তারা ওই জায়গায় গিয়েও কাউকে পায়নি।
রবিবার হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে যুবতীর মর্ফড ছবি পাঠানো হয়। হুমকি দেওয়া হয় যে গেট নম্বর ৩-র কাছে যদি দেখা করতে না আসে, তাহলে এই ছবি কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে ভাইরাল করে দেওয়া হবে। যুবতী তাঁর বন্ধুদের ফোন করে জানানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তাদের পাচ্ছিল না। ভয়ে, আতঙ্কে এক প্রকার বাধ্য হয়েই যুবতী কনভোকেশন সেন্টারের কাছে যায়। সেখানে একজন নিরাপত্তারক্ষী উপস্থিত ছিল।
এফআইআর অনুযায়ী, ওই কনভোকেশন সেন্টারের কাছে যাওয়ার পর নিরাপত্তারক্ষী একজন মধ্যবয়স্ক লোককে ডেকে আনে। এরপরে দুই যুবক আসে। চারজন মিলে তাঁকে কনভোকেশন সেন্টারের কাছে একটি ফাঁকা রুমে টেনে নিয়ে যায় এবং সেখানে তাঁকে গণধর্ষণ করে। নির্যাতিতার অভিযোগ যে অভিযুক্ত একজন জোর করে তাঁকে পিল খাওয়ানোর চেষ্টা করে, যুবতী সেই ওষুধ মুখ থেকে ফেলে দেয়।
যখন কাছের মেস থেকে লোকজন আসার শব্দ পায়, তখন অভিযুক্তরা যুবতীকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। যুবতীর অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল, পরে তাঁর বন্ধুরা তাঁকে ক্যাম্পাস থিয়েটারের কাছ থেকে উদ্ধার করে।
পুলিশ জানিয়েছে যে যুবতীর বয়ানের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। একাধিক টিম তৈরি করা হয়েছে অভিযুক্তদের ধরার জন্য। হাসপাতালে যুবতীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে, তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে এবং কাউন্সেলিংও করানো হয়েছে।
এদিকে, গণধর্ষণের অভিযোগ সামনে আসার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। জাতীয় মহিলা কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছে এবং অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেছে।
