S Jaishankar on US Tariff: ‘সমস্যা থাকলে কিনবেন না…’, ট্রাম্পের শুল্কের সাফ জবাব বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের
India-US Relation: এস জয়শঙ্কর বলেন, "এটা খুব মজার যে যারা ব্যবসামনস্ক মার্কিন প্রশাসনের জন্য কাজ করে, তারাই অন্যদের ব্যবসা করা নিয়ে বলছেন। যদি ভারত থেকে তেল বা অন্য রিফাইনড পণ্য কিনতে সমস্যা থাকে, তাহলে কিনবেন না।"

নয়া দিল্লি: ভারত সবথেকে বেশি শুল্ক নেয়! এই অভিযোগ বারবার তুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আবার রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপরে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করে দিয়েছে আমেরিকা। এই দাদাগিরি নিয়ে এবার মুখ খুললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে খোঁচা দিয়ে বললেন, “কাউকে বাধ্য করা হয়নি ভারত থেকে রিফাইনড তেল বা অন্য কোনও পণ্য কিনতে”।
ইকোনমিক টাইমস ওয়ার্ল্ড লিডারস ফোরাম ২০২৫-র অনুষ্ঠানে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, “এটা খুব মজার যে যারা ব্যবসামনস্ক মার্কিন প্রশাসনের জন্য কাজ করে, তারাই অন্যদের ব্যবসা করা নিয়ে বলছেন। যদি ভারত থেকে তেল বা অন্য রিফাইনড পণ্য কিনতে সমস্যা থাকে, তাহলে কিনবেন না। কেউ জোর করেনি। ইউরোপ কেনে, আমেরিকা কেনে, তাই যদি পছন্দ না হয়, তাহলে কিনবেন না।”
ট্রাম্পের বিদেশনীতি নিয়েও মুখ খোলেন বিদেশমন্ত্রী। বলেন, “বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতো গোটা বিশ্ব এমন কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট দেখেনি যিনি এমন প্রকাশ্যে বিদেশনীতি ঠিক করেন“। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার বিষয়টিও ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণার আগে আলোচনা হয়নি বলে জানান বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর।
প্রসঙ্গত, ভারত-আমেরিকার সুসম্পর্ক থাকলেও, সম্প্রতিই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ভারত আমেরিকার থেকে অনেক বেশি শুল্ক নেয়। সমস্ত দেশের উপরে শুল্ক চাপানো শুরু করেন তিনি। ভারতের উপরে প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসান তিনি। পরে তিনি আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান। এর পিছনে যুক্তি দেন যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় যখন সকলে রাশিয়ার উপরে স্যাংশন বা নিষেধাজ্ঞা চাপাচ্ছিল, তখন ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনেছে।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতেও ট্রাম্প মধ্যস্থতা করার দাবি করেছিলেন। এই প্রসঙ্গ উঠতেই বিদেশমন্ত্রী বলেন যে প্রতিবেশী দেশ সংক্রান্ত বিষয়ে ভারত অন্য কারোর মধ্যস্থতা গ্রহণ করবে না। এর আগেও বিদেশ মন্ত্রকের তরফে সাফ জানানো হয়েছে যে ভারত কোনও মধ্যস্থতা চায়নি। পাকিস্তানের অনুরোধেই সংঘর্ষ থেমেছে।
বাণিজ্য ও দেশের কৃষকদের স্বার্থে সরকারের কী অবস্থান, তা স্পষ্ট বলেই জানান বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। বলেন, “যদি কেউ আমাদের সঙ্গে সহমত না হন, তাহলে ভারতের জনগণকে বলে দিন যে আপনারা কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করতে আপনারা প্রস্তুত নন। বলে দিন যে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ। জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে আমরা যা পারব, করব।”
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চান ভারতে মার্কিন কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যের বাজারে প্রবেশ করতে। কিন্তু নয়া দিল্লি তাতে রাজি নয়। এ দেশের ৪০ শতাংশ নাগরিকই কৃষিকাজ ও দুগ্ধজাতীয় পণ্য উৎপাদনের দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজেও বলেছেন, “কৃষক, মৎসজীবী, পশুপালকদের স্বার্থের সঙ্গে কোনও সমঝোতা করা হবে না। এর জন্য ব্যক্তিগত মূল্য চোকাতেও রাজি।”

