হায়দরাবাদ পুর-নির্বাচন: ত্রিশঙ্কুর দিকে এগোচ্ছে ভোটের ফল, অ্যাডভান্টেজে বিজেপি

ঈপ্সা চ্যাটার্জী |

Dec 05, 2020 | 2:10 PM

করোনা পরিস্থিতির (COVID-19 Situation) কথা মাথায় রেখে তেলাঙ্গানা রাজ্য নির্বাচন কমিশন (Election Commission) ব্যলট পেপার (Ballot Paper) ব্যবহার করেই ভোট গ্রহণ করা হয়েছে।

হায়দরাবাদ পুর-নির্বাচন: ত্রিশঙ্কুর দিকে এগোচ্ছে ভোটের ফল, অ্যাডভান্টেজে বিজেপি
চলছে ভোট গণনা। ছবি সংগৃহীত।

Follow Us

হায়দরাবাদ: প্রতি মিনিটে বদলে যাচ্ছে বৃহত্তর হায়দরাবাদের পৌর-নির্বাচনের মানচিত্র। বৃহত্তর হায়দরাবাদের পৌরসভা কার দখলে থাকবে, তা নিয়ে চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। বিকেল সাতটার বুথ ফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, এখনও এগিয়ে রয়েছে তেলাঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (TRS), তাদের দখলে থাকতে পারে ৫৫টি আসন। তবে ক্রমশ্য দূরত্ব কমছে দুই বিরোধী দলের সঙ্গে।

দুপুরে বিজেপি (BJP)-কে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল আসাউদ্দিন ওয়াইসির মিম (AIMIM)। তবে বিকেল হতেই ফের কড়া টক্কর দেওয়া শুরু করে বিজেপি, বর্তমানে তাদের দখলে রয়েছে ৪৯টি আসন। এআইএমআইএম-র দখলে আপাতত রয়েছে ৪৩টি আসন। দ্বিতীয় স্থান নিয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে বিজেপি বনাম মিমের। সকাল থেকেই দুইয়ের ঘরেই আটকে রয়েছে কংগ্রেসের কাঁটা। টিডিপি (TDP) ও অন্যান্য দলের ঝুলি শূন্যই রয়েছে।

সকালে বুথ ফেরত সমীক্ষা জানাচ্ছিল নিজামের শহর এবার বিজেপির দখলে যাবে। কিন্তু সমর্থকদের সেই উচ্ছাস বেশিক্ষণ বজায় থাকল না। বেলা গড়াতেই মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের টিআরএস (TRS) বিজেপিকে টপকে শীর্ষে উঠে আসে। তখন দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিজেপি (BJP)-কে টক্কর দিচ্ছিল এআইএমআইএম(AIMIM)। ঘড়ির কাঁটা তিনটেয় পৌঁছাতেই একলাফে বিজেপিকেও টপকে গিয়েছিল মিম।

দুপুর তিনটের বুথ ফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, তেলাঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির (TRS) ঝুলিতে ছিল ৭১ টি আসন। দ্বিতীয় স্থানে ছিল মিম, তাদের দখলে ছিল ৩৭টি আসন। সকাল ১০টায় ৮৭-তে থাকা বিজেপি নেমে এসেছিল ৩৩-এ।

বিকেল পাঁচটার বুথ ফেরত সমীক্ষায় জানা গিয়েছিল, তেলাঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (TRS)-র দখলে থাকতে পারে ৫৮টি আসন। বিজেপির দখলে ছিল ৪৫টি আসন।

আরও পড়ুন: নাগরোটা কাণ্ডে পাক যোগ প্রমাণে এনআইএ-র হাতে তুলে দেওয়া হল তদন্তভার

নিজামের শহরে সকালে পুর-নির্বাচনের দৌড়ে এগিয়ে ছিল বিজেপি। দুপুর হতেই খেলা ঘুরে যায়। ভোট ব্যাঙ্কের শীর্ষে উঠে আসে তেলাঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (TRS)। বৃহত্তর হায়দরাবাদ পৌরসভা নির্বাচনের (Greater Hyderabad Municipal Corporation Election) দুপুর একটার বুথ ফেরত সমীক্ষায় জানানো হয়েছিল, টিআরএসের দখলে যেতে পারে ৬৫টি আসন। বিজেপি সকালে ৮৭টি আসনে এগিয়ে থাকলেও বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছিল ৪০-এ। আসাউদ্দিন ওয়াইসির এআইএমআইএম (AIMIM) সকালে ১৭টি আসনে এগিয়ে থাকলেও দুপুর থেকেই জোর টক্কর দিতে শুরু করে বিজেপিকে। দুপুরে ৩৪টি আসন ছিল তাদের দখলে।

নির্বাচনে জয়ের পর শহরের নাম বদলের প্রস্তাব, মুসলিম উৎখাতের প্রতিশ্রুতি, সবমিলিয়ে নির্বাচনের আগে প্রচারপর্বে খেলা জমে উঠলেও ভোটবাক্সে ফল মেলেনি তেমন। মঙ্গলবারের বৃহত্তর হায়দরাবাদ পৌরসভা নির্বাচনে ভোট পড়ল মাত্র ৪৬.৫৫ শতাংশ। আজ সকাল থেকেই শুরু হয়েছে ভোট গণনার কাজ। ৩০টি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে গণনা সম্পন্ন করতে মোতায়েন করা হয়েছে আট হাজারেরও বেশি সশস্ত্র বাহিনী।

২০০৭ সালে ১২টি পৌরসভা ও ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে তৈরি বৃহত্তর হায়দরাবাদ পৌরসভায় মোট ভোটদাতার সংখ্যা ৭৪ লাখ ৬৭ হাজার। তবে মঙ্গলবার কেবল ৩৪ লাখ ৫০ হাজার মানুষই ভোট দিয়েছেন বলে জানায় নির্বাচন কমিশন।

করোনা পরিস্থিতির (COVID-19 Situation) কথা মাথায় রেখে তেলাঙ্গানা রাজ্য নির্বাচন কমিশন (Election Commission) ব্যলট পেপার (Ballot Paper) ব্যবহার করেই ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক জানান, ভোট গ্রহণের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার উপর নজর রাখতে প্রতিটি টেবিলেই সিসিটিভি (CCTV) লাগানো হয়েছে। ব্যালট বক্সে ভোট গণনা করতে সময় লাগার কারণে আজ বিকেল বা রাতের আগে অন্তিম ফল জানা যাবে না।

আরও পড়ুন: রাজনীতিতে রজনী! নতুন বছরেই আত্মপ্রকাশ দলের

পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah),  বিজেপি প্রেসিডেন্ট জে পি নাড্ডা (J P Nadda), যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)-র মতো হেভিওয়েট নেতারা আসাতেই বোঝা গিয়েছিল নির্বাচনের উত্তাপ। পৌরসভা নির্বাচনে জয় পেলেই পরবর্তী লক্ষ্য ২০২৩-র বিধানসভা নির্বাচন, তা সাফ জানিয়েছে বিজেপি।

তেলাঙ্গানার বিজেপি প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় কুমার (Sanjay Kumar) নির্বাচনী প্রচারে বলেছিলেন,”সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালাবে দল (বিজেপি) এবং নির্বাচনে জয়ের পর প্রয়োজনে রোহিঙ্গা ও পাকিস্তানিদেরও তাড়ানো হবে।” এই মন্তব্যের পরই বিপুল সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।

অন্যদিকে শাসকদল তেলাঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি বৃহত্তর হায়দরাবাদ পৌরসভা নির্বাচনে সাধারণ মানুষের আবেগকেই কাজে লাগিয়ে প্রচার চালিয়েছে। হায়দরাবাদের নাম বদলে ভাগ্যনগর করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (K Chandrasekhar Rao) সাধারণের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন,”বিভেদের হাত থেকে নিজের শহরকে বাঁচান।”

আরও পড়ুন: “যারা লভ জিহাদের পরিকল্পনা করবে, তাঁদের জীবন শেষ করে দেওয়া হবে”, হুঁশিয়ারি শিবরাজ সিং চৌহানের

Next Article