নাগরোটা কাণ্ডে পাক যোগ প্রমাণে এনআইএ-র হাতে তুলে দেওয়া হল তদন্তভার

পাকিস্তান যোগ থাকার কারণেই জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (NIA) হাতে তদন্তের দায়ভার তুলে দেওয়া হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিস তদন্তের যাবতীয় কাগজ হস্তান্তরিত করে দেয় এনআইএ (NIA)-র কাছে। ইতিমধ্যেই একটি এফআইআর (FIR) দাখিল করেছে তদন্তকারী সংস্থা।

নাগরোটা কাণ্ডে পাক যোগ প্রমাণে এনআইএ-র হাতে তুলে দেওয়া হল তদন্তভার
ঘটনাস্থান খতিয়ে দেখছে জম্মু পুলিস। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Dec 04, 2020 | 5:34 PM

শ্রীনগর: গত মাসেই জম্মু-কাশ্মীরে (Jammu Kashmir) সন্ত্রাসবাদী হামলা রুখে নাগরোটায় এনকাউন্টারে (Nagrota Encounter) চার জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি (Jaish-e-Mohammed)-কে খতম করে পুলিস। ঘটনায় পাক যোগও প্রমাণিত হয় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া বিভিন্ন জিনিসপত্রের মাধ্যমে। এবার সেই ঘটনায় তদন্তের দায়ভার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (National Investigation Agency) হাতে তুলে দিল জম্মু পুলিস (Jammu Police)।

সূত্র মারফত সন্ত্রাসবাদী হামলার পরিকল্পনার খবর পেয়ে গত ১৯ নভেম্বর জম্মুর নাগরোটায় বান টোল প্লাজায় প্রতিটি গাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিস। সেখানেই একটি ট্রাককে দাঁড় করিয়ে তল্লাশি চালাতেই ট্রাকের ভিতরে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিরা গুলি চালায়। শুরু হয় গুলির লড়াই। দীর্ঘ তিনঘণ্টা ধরে লড়াই চলার পর এনকাউন্টারে (Encounter) খতম করা হয় চার জঙ্গিকে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র, ওয়্যারলেস সেট, ওষুধপত্র, জুতো পরীক্ষা করে দেখা যায় উদ্ধার হওয়া সামগ্রীগুলি পাকিস্তানে তৈরি।

পাকিস্তান যোগ থাকার কারণেই জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (NIA) হাতে তদন্তের দায়ভার তুলে দেওয়া হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিস তদন্তের যাবতীয় কাগজ হস্তান্তরিত করে দেয় এনআইএ (NIA)-র কাছে। ইতিমধ্যেই একটি এফআইআর (FIR) দাখিল করেছে তদন্তকারী সংস্থা।

প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, কোনও একটি গুপ্ত টানেলের মাধ্যমেই পাকিস্তান থেকে ভারতে প্রবেশ করে জঙ্গিরা। জম্মুর জাতীয় সড়কের উপর আগে থেকেই উপস্থিত ছিল একটি ট্রাক, সেই ট্রাকে চেপেই কাশ্মীরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল তারা। জঙ্গিদের লক্ষ্য ছিল জেলা উন্নয়ন পরিষদের নির্বাচন বানচাল করা।

আরও পড়ুন: নৌসেনা দিবস: ‘অভিযান’ চালাচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকেই! উড়িয়েছে পাক হেড কোয়ার্টারও

ঘটনাস্থান থেকে উদ্ধার করা হয় ১১টি একে রাইফেল, ২৪টি ম্যাগাজিন, ৭.৫ কেজি আরডিএক্স (RDX), ৬টি ডিটোনেটর (Detonator), ২৯টি গ্রেনেড (Grenade), ৫টি রাইফেল গ্রেনেড (Rifle Grenade), তিনটি পিস্তল (Pistol), ওয়্যারলেস সেট (Wireless Set) ও জিপিএস (GPS)। তদন্তে জানা যায়, নিকেষ করা জঙ্গিদের ব্যাগ থেকে উদ্ধার হওয়া ওষুধগুলিও পাকিস্তানের বিভিন্ন দোকান থেকে কেনা।

ঘটনার পরেরদিনই, অর্থাৎ ২০ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) একটি বৈঠকের আয়োজন করেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah), জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল (Ajit Doval), বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা (harshvardhan Sringla)। বৈঠকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনে উপযুক্ত প্রমাণ পেশ করে কীভাবে পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টি করা যায়, সেই বিষয়ে আলোচনা করা হয় বলেই সূত্রের খবর।

আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্র বিধান পরিষদ নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ল বিজেপি, খোশমেজাজে মহা-আগাড়ি জোট

বৈঠক শেষ প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানকে আক্রমণ করে টুইট বার্তায় বলেছিলেন,”আমাদের সুরক্ষাবাহিনী ফের একবার সাহসিকতা ও পেশাদারীত্বের প্রমাণ রেখেছে। তাদের তৎপরতাতেই জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী হামলা রোখা সম্ভব হয়েছে। যে চারজন জঙ্গিকে খতম করা হয়েছে, তারা পাকিস্তানের জইশ-ই-মহম্মদ গোষ্ঠীর সদস্য। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ও বিস্ফোরকের দ্বারা বোঝা যায়, তারা কত বড় হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিল।”

এনআইএ নাগরোটা কাণ্ডের তদন্তভার নেওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেন,”আর্থিক টাস্ক ফোর্সে পাকিস্তানকে একঘরে করতে যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ খুঁজে বের করবে এনআইএ (NIA)। এফএটিএফ বৈঠকে ভারতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তদন্তকারী সংস্থাও উপস্থিত থাকবে।”

আরও পড়ুন: কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মিলবে টিকা, এবার আশ্বাস দিলেন প্রধানমন্ত্রী