AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Mig 21 Farewell: রাশিয়ার মিগ 21 কীভাবে চুরি করে ইজরায়েল, জানুন

১৯৬৪ সালের ১ জানুয়ারি। ইরাকের রাজধানী বাগদাদে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাসের দরজায় হাজির এক যুবক। নাম এজলার। পাসপোর্ট নেই,নেই কোনও পরিচয়পত্র। তাই দূতাবাসের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে প্রবেশ করতে দিচ্ছিলেন না। কিন্তু হাল ছাড়লেন না এজলার। বললেন, 'আমাকে ঢুকতে দিন, ১০০ ডলার দেব।' ঘুষের টোপে অবশেষে দরজা খুলল। দূতাবাসের মধ্যে ঢুকেই সরাসরি পৌঁছে গেলেন ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতের কক্ষে। সেখানেই শুরু গুপ্তচরবৃত্তির এক অবিশ্বাস্য অধ্যায়।

Mig 21 Farewell: রাশিয়ার মিগ 21 কীভাবে চুরি করে ইজরায়েল,  জানুন
| Edited By: | Updated on: Sep 27, 2025 | 9:49 PM
Share

১৯৬৪ সালের ১ জানুয়ারি। ইরাকের রাজধানী বাগদাদে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাসের দরজায় হাজির এক যুবক। নাম এজলার। পাসপোর্ট নেই,নেই কোনও পরিচয়পত্র। তাই দূতাবাসের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে প্রবেশ করতে দিচ্ছিলেন না। কিন্তু হাল ছাড়লেন না এজলার। বললেন, ‘আমাকে ঢুকতে দিন, ১০০ ডলার দেব।’ ঘুষের টোপে অবশেষে দরজা খুলল। দূতাবাসের মধ্যে ঢুকেই সরাসরি পৌঁছে গেলেন ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতের কক্ষে।

সেখানেই শুরু গুপ্তচরবৃত্তির এক অবিশ্বাস্য অধ্যায়। রাষ্ট্রদূতের সামনে এজলারের প্রস্তাব, ‘আপনারা যা চান, আমি সেটা আপনাদের এনে দিতে পারব। তবে ফি লাগবে ২৫ হাজার ডলার।’ এতটাই চমকে যান রাষ্ট্রদূত যে আর দেরি করেননি। সঙ্গে সঙ্গেই ডিল পাকাপাকি। অ্যাডভান্সও মেলে সেদিনই। শর্ত একটাই, ‘কথার খেলাপ করলে পরিণতি হবে ভয়ঙ্কর।’

প্রশ্ন একটাই, ইসরায়েলি দূতাবাসের সঙ্গে কী চুক্তি করেছিলেন এজলার? উত্তর পাওয়া গেল অল্পদিনের মধ্যেই। রাশিয়ার তৈরি এক মিগ-২১ যুদ্ধবিমান, যেটি তখন ইরাকের বায়ুসেনার ঘাঁটিতে রাখা, সেটি ইসরায়েলে এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এজলার। আজ সেই বিমানের নম্বর 007, এবং এটি তেল আভিভে আইডিএফ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত।

এই মিশন ইতিহাসে বিখ্যাত ‘অপারেশন ডায়মন্ড’ নামে। এজলারের মাধ্যমেই ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ যোগাযোগ করে ইরাকের বায়ুসেনার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মুনির রেদফার সঙ্গে। রেদফা ছিলেন ইরাকের সংখ্যালঘু আইহিনা মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্য। বারবার বৈষম্য আর অপমানের শিকার হওয়ায় দেশ ও সেনার প্রতি তাঁর ক্ষোভ ছিল প্রবল। তাছাড়া, রাশিয়া থেকে মিগ-২১ ওড়ানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। তাই বিমানের খুঁটিনাটি হাতের তালুর মতো জানতেন।

ইরাকে তখন ইহুদিদের উপর ভয়ঙ্কর নির্যাতন চলছে। এজলার নিজেও ছিলেন ইহুদি, তাই দেশের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রবল ছিল। দু’জনের ব্যক্তিগত ক্ষোভ মিলিয়ে তৈরি হয় এক ঐতিহাসিক চুক্তি।

দু’বছর ধরে চলল প্রস্তুতি। রেদফার পরিবারকে আগে নিরাপদে ইরাক থেকে বের করে আনা হয়। তারপর ১৯৬৬ সালের ১৬ আগস্ট, বাগদাদের বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে রুটিন নজরদারির নামে আকাশে ওড়েন রেদফা। মাঝ আকাশে রুট পরিবর্তন করে ইরাকের আকাশ ছেড়ে উড়লেন ইসরায়েলের দিকে। রেডিও সিগন্যাল বন্ধ করে দেন। আকাশে তাঁকে গাইড করছিল ইসরায়েলের এয়ার কন্ট্রোল।

অবশেষে, নিরাপদে নামেন ইসরায়েলের মাটিতে। হাতে চলে আসে সোভিয়েত প্রযুক্তির সেই রহস্যময় যুদ্ধবিমান— মিগ-২১।

এই বিমান ঘিরে তখন গোটা পৃথিবীতে কৌতূহল। সোভিয়েতের তৈরি মিগ যে অসাধারণ কৌশলে উড়তে পারে, তা পশ্চিমা দেশগুলির কাছে এক রহস্য ছিল। ইসরায়েলের মাধ্যমে সেই রহস্যের দ্বার খুলে যায় আমেরিকার কাছেও। আজ, যখন ভারতীয় বায়ুসেনার মিগ-২১ যুদ্ধবিমান শেষবারের মতো আকাশে উড়ল, ‘ফাইনাল ফেয়ারওয়েল’— তখন তেল আভিভে আইডিএফের প্রদর্শনীতে দেখা গেল সেই চুরি করে আনা মিগ, যার ক্যাপশনে লেখা, ‘Thank you MiG, thank you for your service.’