যোধপুরের স্বামীনারায়ণ মন্দির এখন গোটা দেশের কাছে অন্যতম আধ্যাত্মিক কেন্দ্র
বর্তমানে এই ভাবনাক বাস্তব রূপ দিয়েছেন মহন্ত স্বামী মহারাজ, প্রমুখ স্বামীর উত্তরসূরি ও BAPS-এর বর্তমান আধ্যাত্মিক গুরু। তাঁর আহ্বানে হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিজেদের সময়, শ্রম ও নিষ্ঠা দিয়ে এই মহৎ মন্দির নির্মাণে অবদান রেখেছেন।

ঐতিহাসিক ও ঐশ্বর্যে ভরপুর যোধপুর শহরের বুকে গড়ে উঠেছে বোচাসনবাসী শ্রী অক্ষর পুরুষোত্তম স্বামীনারায়ণ সংস্থা (BAPS)-এর এক অনন্য মন্দির। এটি কেবল একটি পূজাস্থল নয়, বরং ভক্তি, শান্তি ও আধ্যাত্মিক উৎকর্ষের প্রতীক। এই মন্দিরে প্রবেশ করলেই মন ও আত্মা এক শাশ্বত শান্তি পায়।
ভক্তি ও প্রেরণার কেন্দ্র
এই মন্দির উৎসর্গ করা হয়েছে স্বামীনারায়ণ (Shri Swaminarayan Temple) সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা ভগবান স্বামীনারায়ণকে। তাঁর জীবন এবং তাঁর শিক্ষা মানুষকে নৈতিকতা, সত্য, ভক্তি ও পথে পরিচালিত করেছে। আজও তাঁর আদর্শ বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করছে।

এই মন্দির নির্মাণে প্রধান প্রেরণা ছিলেন আধ্যাত্মিক গুরু প্রভুজী প্রমুখ স্বামী মহারাজ। তাঁর নিস্বার্থ, বিনম্র জীবনের স্পর্শে অসংখ্য মানুষের জীবন পরিবর্তিত হয়েছে। বিশ্বের নানা প্রান্তে তিনি ১,২০০-রও বেশি মন্দির, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। তাঁর আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি, শান্তি, সদ্ভাব ও নৈতিক জীবনের বার্তা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
বর্তমানে এই ভাবনাক বাস্তব রূপ দিয়েছেন মহন্ত স্বামী মহারাজ, প্রমুখ স্বামীর উত্তরসূরি ও BAPS-এর বর্তমান আধ্যাত্মিক গুরু। তাঁর আহ্বানে হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিজেদের সময়, শ্রম ও নিষ্ঠা দিয়ে এই মহৎ মন্দির নির্মাণে অবদান রেখেছেন। মহন্ত স্বামী মহারাজ মানুষের প্রতি বার্তা দিয়ে বলেন—”প্রাচীন হিন্দু শিল্প, স্থাপত্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানুন এবং শান্তি, সদ্ভাব, নৈতিকতা ও নিস্বার্থ সেবার চিরন্তন মূল্যবোধকে জীবনে ধারণ করুন।”

মন্দিরের প্রধান বৈশিষ্ট্য
পবিত্র পূজা মণ্ডপ: এখানে দর্শনার্থীরা ঈশ্বরের সান্নিধ্যে থাকতে পারেন। তার ফলে তাঁরা গভীর শান্তি পান।
নীলকণ্ঠ অভিষেক মণ্ডপম: ভগবান স্বামীনারায়ণের কিশোর রূপ নীলকণ্ঠ বর্ণীর দীপ্তিমান মূর্তি এখানে প্রতিষ্ঠিত। সাত বছরব্যাপী তাঁর তপস্যা ও ত্যাগের স্মৃতি ভক্তদের অনুপ্রাণিত করে।
সভা মণ্ডপ: বিশাল এই প্রাঙ্গণে হয় ভক্তিসঙ্গীত, ধর্মীয় আলোচনা ও আধ্যাত্মিক প্রেরণামূলক কর্মসূচি।
উদ্যান ও শিশু পার্ক: মনোমুগ্ধকর উদ্যান ও আসন্ন শিশু পার্ক দর্শনার্থীদের আনন্দ ও প্রশান্তির পরিবেশ উপহার দেয়।
কী এই BAPS সংগঠন?
BAPS বা বোচাসনবাসী শ্রী অক্ষর পুরুষোত্তম স্বামিনারায়ণ সংস্থা হল একটি বৈশ্বিক সামাজিক-আধ্যাত্মিক হিন্দু সংগঠন। ১৯০৭ সালে শাস্ত্রীজী মহারাজ এটি প্রতিষ্ঠা করেন। ভগবান স্বামী নারায়ণের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এই সংগঠন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীশক্তি বিকাশ, নেশামুক্তি, পরিবেশ সুরক্ষা ও মানবিক সেবার মতো বহুবিধ কাজে যুক্ত।
বর্তমানে বিশ্বের ৫,০২৫-টিরও বেশি কেন্দ্র ও ১,৭০০-রও বেশি মন্দিরের মাধ্যমে BAPS মানবতার সেবা করছে। জাতিসংঘের স্বীকৃত এনজিও হিসেবেও এর কার্যক্রম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা: ভগবান স্বামী নারায়ণ (১৭৮১–১৮৩০)
প্রাতিষ্ঠানিক রূপ: ১৯০৭ সালে শাস্ত্রীজী মহারাজ
প্রধান উদ্দেশ্য: আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ, নৈতিকতা ও সামাজিক উন্নতি
দৃষ্টি: বিশ্বভ্রাতৃত্ব, শান্তি ও সদ্ভাব প্রতিষ্ঠা
প্রচারণা: বৈশ্বিক মন্দির নেটওয়ার্ক ও মানবিক উদ্যোগ
