Kerala High Court: ‘এমন সন্তান যাঁদের ধন্য সেই বাবা-মা’, নাবালিকার ‘ত্যাগে’ মুগ্ধ হাইকোর্ট

Kerala High Court: বাবাকে বাঁচাতে ১৭ বছরের নাবালিকার আত্মত্যাগের সিদ্ধান্তে মুগ্ধ হল কেরল হাইকোর্ট। বাবার জন্য যা করল এই মেয়েটি, পড়লে মুগ্ধ হবেন আপনিও।

Kerala High Court: 'এমন সন্তান যাঁদের ধন্য সেই বাবা-মা', নাবালিকার 'ত্যাগে' মুগ্ধ হাইকোর্ট
এমন সন্তান যাঁদের ধন্য সেই বাবা-মা, বলল আদালত
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 23, 2022 | 9:09 AM

তিরুবনন্তপুরম: হেপাটোসেলুলার কার্সিনোমা, নন-অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার ডিজিজ-সহ লিভারের একাধিক রোগে ভুগছেন তাঁর বাবা। লিভার প্রতিস্থাপন করা ছাড়া উপায় নেই। এদিকে নিকটাত্মীয়দের মধ্যে একমাত্র ১৭ বছরের দেবানন্দার সঙ্গেই তাঁর বাবার লিভারের মিল পাওয়া গিয়েছে। তবে, ১৯৯৪ সালের মানব অঙ্গ এবং কলা প্রতিস্থাপন আইনের বিধান অনুযায়ী নাবালক-নাবালিকারা অঙ্গদান করতে পারে না। কিন্তু, সবদিক বিচার বিবেচনা করে গত মঙ্গলবার, তাঁর বাবাকে বাঁচাতে দেবানন্দাকে তাঁর লিভারের একটি অংশ দান করার অনুমতি দিয়েছে কেরল হাইকোর্ট। বিচারপতি ভিজি অরুণ এই রায় দেওয়ার সময় জানান, দেবানন্দার নিরলস আইনি লড়াই যে শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছে, সেটা অত্যন্ত আনন্দদায়ক।

বিচারপতি বলেন, “বাবার জীবন বাঁচাতে আমি আবেদনকারীর লড়াইকে সাধুবাদ জানাই। ধন্য সেই বাবা-মায়েরা যাদের দেবানন্দার মতো সন্তান রয়েছে। আইন ও বিধির অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে, বাবার অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচারের জন্য আবেদনকারীকে তাঁর লিভারের একটি অংশ দান করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।” মানব অঙ্গ এবং কলা প্রতিস্থাপন আইনের বিধান অপ্রাপ্তবয়স্কদের অঙ্গ দান করার অনুমতি না দিলেও, ২০১৪ সালে এই আইনের একটি ব্যতিক্রম করার একটি বিধি যোগ করা হয়েছিল। সেই, বিধির অধীনেই ১৭ বছরের মেয়েটি আবেদন করেছিল যে, তাঁকে দাতা হিসেবে ছাড় দেওয়া হোক এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অস্ত্রোপচার করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হোক।

এর আগে এক অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে আদালত বলেছিল, এই ক্ষেত্রে রোগী থেরাপিউটিক বিকল্প হিসাবে লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য যোগ্য নয়। তাই আবেদনকারীর লিভারের একটি অংশ দান করার প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু, দেবানন্দা তাঁর আবেদনে দাবি করেন, আদালত এই ক্ষেত্রে আবেদনকারীর অঙ্গদানের ক্ষমতা বিবেচনা না করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আদালতের রায়, সম্পূর্ণভাবে প্রাপকের স্বাস্থ্যের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে। আইন বা বিধির কোন বিধান, আদালতকে এই বিষয়টি বিবেচনার অধিকার দেয়নি। দাতা স্বাস্থ্যগত দিক থেকে সুস্থ, রোগীর নিকটাত্মীয় এবং স্বেচ্ছায় অঙ্গদান করতে চাইলে আদালত সেই অনুমতি দিতে বাধ্য। কাজেই এই ক্ষেত্রে আবেদনকারীর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা স্পষ্টত বেআইনি।

এরপরই কেরল হাইকোর্ট, দেবানন্দার আবেদন মেনে নেয়। রায় দেওয়ার সময় বিচারপতি ভিজি অরুণ জানান, অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইনের উদ্দেশ্য হল মানব অঙ্গ ও কলা অপসারণ, সঞ্চয় ও প্রতিস্থাপন নিয়ন্ত্রণ এবং মানব অঙ্গ ও কলার বাণিজ্যিক লেনদেন প্রতিরোধ করা। এই ক্ষেত্রে দাতা সম্পূর্ণভাবে তাঁর বাবার প্রতি সমবেদনা থেকে তার লিভারের একটি অংশ দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি এর পরিণতি সম্পর্কে সচেতন এবং তিনি স্বাধীন ইচ্ছায় ও কোনও জবরদস্তি বা বাধ্যবাধকতা ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই আদালত তাঁর আবেদন মেনে নিয়েছে।