Mamata invites Modi: বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে মোদীকে আমন্ত্রণ, কোন পথে মমতার ‘হলুদ গোলাপে’র সমীকরণ

Mamata Banerjee in Delhi: আজ প্রধানমন্ত্রীর দফতরে গিয়ে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছেন মমতা। মোদীও একবারেই মমতার এই আমন্ত্রণকে গ্রহণ করেছেন, যা বর্তমান রাজনীতিতে সচরাচর দেখা যায় না।

Mamata invites Modi: বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে মোদীকে আমন্ত্রণ, কোন পথে মমতার 'হলুদ গোলাপে'র সমীকরণ
বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে মোদী আমন্ত্রণ মমতার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 25, 2021 | 12:39 AM

নয়া দিল্লি : ঘড়ির কাঁটায় তখন প্রায় বিকেল পাঁচটা। হাতে হলুদ গোলাপের তোড়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে প্রবেশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নরেন্দ্র মোদীর জন্য উপহার এনেছেন মমতা। কীসের ইঙ্গিত? নতুন কোনও বন্ধুত্ব? রাজনৈতিক ঝগড়ায় আপাত বিরতি? নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের পর এই প্রশ্নগুলি আরও জোরালো হতে শুরু করেছে। কারণ, আজ প্রধানমন্ত্রীর দফতরে গিয়ে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছেন মমতা। মোদীও একবারেই মমতার এই আমন্ত্রণকে গ্রহণ করেছেন, যা বর্তমান রাজনীতিতে সচরাচর দেখা যায় না।

নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে মমতা বলেন, “রাজ্যে এগোলে দেশও এগোবে। সেই জন্য আগামী বছর এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গে যে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন হবে, সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। করোনার কারণে বাণিজ্যের অবস্থা খারাপ। তাই কেন্দ্র-রাজ্য মিলে একটা সম্মেলন করলে, তা ভাল। আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।”

এবার একটু বাংলার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ফেরা যাক। বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকে শুরু। রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি। ‘কদর্য’ আক্রমণ। কেউই কাউকে ছেড়ে কথা বলেননি সেই সময়। তারপর রাজ্যে নির্বাচন পরবর্তী হিংসার ভুঁড়ি ভুঁড়ি অভিযোগ। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে আজও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে চিঠি পাঠিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। আর এরই মধ্যে দিল্লিতে গিয়ে মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এলেন মমতা। তা গ্রহণও করে নিলেন মোদী। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় এই চিত্রটাই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু এতদিন তো হত না। তাহলে এখন কীসের উলট-পূরান?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ, বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে এই আমন্ত্রণে মূলত দুটি কারণ খুঁজে পাচ্ছেন। প্রথমটি রাজনৈতিক। দ্বিতীয়টি প্রশাসনিক। রাজনৈতিক কারণ বলতে, এখন নিজের দলের সম্প্রসারণের পথে হাঁটছেন মমতা। আর সেখানে বার বার ত্রিপুরায় গিয়ে বাধা পেতে হচ্ছে মমতার দলকে। যে অভিযোগটা বিজেপি বাংলায় করে আসছে এতদিন ধরে, এখন ত্রিপুরায় গিয়ে সেই ধাক্কাটাই খেতে হচ্ছে তৃণমূলকে। আর সেই কারণেই কি কোনও একটা রাজনৈতিক বোঝাপড়ার দিকে আসতে চাইছেন মমতা? সেই জন্যই কি মোদীকে একেবারে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে গিয়ে আমন্ত্রণ? এমনই একগুচ্ছ প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে।

উল্লেখ্য, এর আগেও মমতার মুখে এমন কথা শোনা গিয়েছিল। বলেছিলেন, “রাজনীতি তো রাজনীতির মতো চলবে। তাতে কখনও মিল হবে না। আমি রাজ্য চালাই, আপনি দেশ চালান।” সেই সময়ও একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। আর তারপর আজ ফের একবার সেই একই বার্তা। তাহলে কি এবার রণং দেহি মমতা আর ৫৬ ইঞ্চির মোদীর মধ্যে দূরত্ব কিছুটা হলেও কমতে চলেছে?

সিঙ্গুর থেকে টাটাকে কার্যত উচ্ছেদ করে বাংলার তখতে এসেছিলেন মমতা। তখন থেকেই মমতার বিষয়ে একটি শিল্পবিরোধী ভাবমূর্তি ভীষণভাবে প্রকট হয়ে উঠেছিল। রতন টাটা বিভিন্ন সময়ে সেই ভাবমূর্তির উপর ঘৃতাহুতি করে এসেছেন। রাজ্যের তরফে শিল্প টানার জন্য কম চেষ্টা করা হয়নি। বাণিজ্য সম্মেলন হয়েছে। সিঙ্গাপুরে পর্যন্ত ছুটে গিয়েছেন মমতা। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিভিন্ন সময়ে মৌ চুক্তিতে সই হলেও শেষ পর্যন্ত বড় কোনও শিল্পের মুখ দেখেননি মমতা।

অন্যদিকে মোদীর ভাবমূর্তি শুরু থেকেই বিনিয়োগকারীদের কাছে উজ্জ্বল। মোদী যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন থেকেই শিল্পের জোয়ার। ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাট’ মডেলের সাফল্য নিজেই তার প্রমাণ। এবার কি তবে মোদীকে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে নিয়ে এসে, বাংলার সেই শিল্পবিমুখ ভাবমূর্তিই ঘোচাতে চাইছেন মমতা?

আরও পড়ুন : Mamata Banerjee: ল্যাজে গোবরে বিরোধী ঐক্য! সামাল দিতে মুম্বই পাড়ি দিচ্ছেন ‘বিরক্ত’ মমতা