Bihar: পুলিশের চর সন্দেহে একই পরিবারের ৪ জনকে খুন করে গাছে ঝোলাল মাওবাদীরা
Maoist Attack at Gaya: পুলিশের চর সন্দেহে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয় একই পরিবারের চার সদস্যকে। পরে ওই চার জনের দেহ গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গয়ার ডুমারিয়ায় মনবার গ্রামে।
পটনা : মহারাষ্ট্রে মাওবাদী দমনে বড় সাফল্যের পরের দিনও ফের প্রত্যাঘাত। এবার বিহারে। বিহারের গয়ায় মাওবাদী হামলায় প্রাণ হারালেন চার গ্রামবাসী। পুলিশের চর সন্দেহে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয় একই পরিবারের চার সদস্যকে। পরে ওই চার জনের দেহ গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গয়ার ডুমারিয়ায় মনবার গ্রামে।
মনবার গ্রামে সরজু ভোক্তার বাড়িতে গতরাতে হানা দেয় মাওবাদীরা। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সরজুর ছেল সত্যেন্দ্র সিং ভোক্তা, মহেন্দ্র সিং ভোক্তা এবং তাঁদের স্ত্রীদের। বাড়িটি ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর বাড়ির বাইরে চারজনকে খুন করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। চারজনেরও চোখ কাপড় দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
বাড়ির সামনে একটি পোস্টারও সাঁটিয়ে দিয়ে গিয়েছে মাওবাদীরা। সরজু ভোক্তার পরিবার খুন এবং মাওবাদীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে দাবি করা হয়েছে মাওবাদী পোস্টারে। ওই পোস্টারে বলা হয়েছে, অমরেশ কুমার, সীতার কুমার, শিবপূজন কুমার এবং উদয় কুমার – এই চার মাওবাদীকে অতীতে বিষ খাইয়ে হত্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল এই পরিবার। শেষে হুমকি দেওয়া হয়েছে, বিশ্বাসঘাতকদের এভাবেই কড়া সাজা দেওয়া হবে।
পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, এক বছর আগে মনবার গ্রামে চার মাওবাদী এক পুলিশি এনকাউন্টারে মারা গিয়েছিল। যদিও মাওবাদীদের বক্তব্য, ওই এনকাউন্টার আসলে ভুয়ো। যে বাড়িতে ওই মাওবাদীরা থাকত, সেই বাড়ির মালিক চার মাওবাদীকে বিষ খাইয়ে দিয়েছিল। তারপর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছিল এবং তখন পুলিশ মিথ্যা এনকাউন্টার করেছিল।
বিগত কয়েক বছর ধরেই বিহারের বেশ কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে মাওবাদীদের আনাগোনার খবর পাওয়া যাচ্ছিল। বেশ কিছু হামলার খবরও পাওয়া যাচ্ছিল। তবে এই ধরনের বড়সড় প্রতিহিংসামূলক হামলা সাম্প্রতিক অতীতে দেখেনে বিহার। গতবছরের ফেব্রুয়ারিতে গয়ার একটি স্কুল উড়িয়ে দিয়েছিল মাওবাদীরা। সিএএ, এনপিআর এবং এনআরসির প্রতিবাদী পোস্টারও ফেলে গিয়েছিল সেখানে।
উল্লেখ্য, গতকালই মহারাষ্ট্রে এক এনকাউন্টারে বড় সাফল্য পেয়েছে পুলিশ। মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলি জেলার গয়রাপট্টি জঙ্গলে শনিবার অভিযান চালায় মহারাষ্ট্র পুলিশের সি-৬০ বাহিনী (C-60 Unit) এবং কয়েক ঘণ্টার গুলির লড়াইয়ে মোট ২৬ জন নকশালকে নিকেশ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সংঘর্ষে তিনজন কম্যান্ডোও জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, মৃত ২৬ জন নকশালদের মধ্যে কুখ্যাত নকশাল নেতা মিলিন্দ তেলতুম্বডেও রয়েছে। উল্লেখ্য, ভীমা-কোরেগাঁও হিংসার ঘটনায় অন্য়তম অভিযুক্ত ছিল এই মিলিন্দ। এলগার পরিষদ-ভীমা কোরেগাঁও হিংসার ঘটনায় পুণে পুলিশ তাঁকে “ওয়ান্টেড” হিসাবে ঘোষণা করেছিল। দীর্ঘদিন ধরেই ছত্তীসগঢ় পুলিশও তাঁকে গ্রেফতার করার চেষ্টা চালাচ্ছিল, কিন্তু প্রতিবারই চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যেত সে। তবে শনিবার মহারাষ্ট্র পুলিশের কম্যান্ডো বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে এঁটে উঠতে পারেনি সে, কম্যান্ডো বাহিনীর গুলিতেই সংঘর্ষস্থলে মারা যায় মিলিন্দ। সিপিআই(মাওবাদী)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও ছিল ওই নকশাল নেতা।
আরও পড়ুন : Naxal Encounter: বড় সাফল্য নকশাল দমন অভিযানে, গড়চিরোলির জঙ্গলেই খতম ২৬ নকশালপন্থী