Supreme Court on OBC: ‘কীভাবে স্থগিতাদেশ দিতে পারে?’, হাইকোর্টের ওবিসি-নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির
Supreme Court on OBC: গত ২৪ জুলাই প্রধান বিচারপতির এজলাসে মামলা মেনশন করে দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়েছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। সেই ভিত্তিতে সোমে রাজ্যের 'সমস্যা' শোনে শীর্ষ আদালত।

নয়াদিল্লি: ‘কীভাবে হাইকোর্ট এমন স্থগিতাদেশ দিতে পারে? এটা সত্যিই খুব অদ্ভূত।’ সোমবার ওবিসি মামলায় কার্যত রাজ্যকে স্বস্তি দিয়ে এমনটাই বললেন দেশের প্রধান বিচারপতি। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি বিআর গভাই, বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রন এবং বিচারপতি এনভি অঞ্জারিয়া বেঞ্চে চলছিল ওবিসি মামলার শুনানি। রাজ্যের হয়ে সওয়াল করছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। গত ১৭ই জুন রাজ্যের ওবিসি তালিকার উপরে স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। যার পাল্টা রাজ্য সরকার আদালতের সেই রায়কে চ্য়ালেঞ্জ করে দ্বারস্থ হয় শীর্ষ আদালতে। গত ২৪ জুলাই প্রধান বিচারপতির এজলাসে মামলা মেনশন করে দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়েছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। সেই ভিত্তিতে সোমে রাজ্যের ‘সমস্যা’ শোনে শীর্ষ আদালত।
এদিন শুনানির শুরুতেই কীভাবে একটি এক্সিকিউটিভ ফাংকশনে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ বসাতে পারে বলে প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি বিআর গভাই। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘সংরক্ষণ প্রদানের জন্য এক্সিকিউটিভ ইনস্ট্রাকশন বা নির্বাহী নির্দেশনা যথেষ্ট এবং এই ক্ষেত্রে আলাদা কোনও আইন প্রণয়নের প্রয়োজন নেই।’
এরপরেই রাজ্যের হয়ে সওয়ালকারী কপিল সিব্বল প্রধান বিচারপতির কাছে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশে স্থগিতাদেশ বসানোর আর্জি করেন। তাঁর যুক্তি, ‘হাইকোর্ট একটি অবমাননার মামলা দায়ের করেছে। তার মধ্যেই আবার স্থগিতাদেশও চাপিয়েছে। যার জেরে একাধিক নিয়োগ থেকে পদোন্নতি, সবই আটকে রয়েছে।’
এরপরেই সব পক্ষের যুক্তি-তর্ক শোনার পর প্রধান বিচারপতি বলেন, ওবিসি মামলা ফের কলকাতা হাইকোর্টে ফেরত পাঠানো হবে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নির্দেশ দেওয়া হবে বিশেষ বেঞ্চ গঠনের জন্য। এমনকি, ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে মামলার শুনানি শেষ করার নির্দেশও দেওয়া হবে। কিন্তু প্রধান বিচারপতির সেই প্রস্তাবে আপত্তি জানান কলকাতা হাইকোর্টে যারা মামলা করেছিলেন তাদের পক্ষের আইনজীবীরা। প্রধান বিচারপতির কাছে তাঁর দেওয়া সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে নেওয়ার আর্জি জানান তারা। এরপরই প্রধান বিচারপতি সিদ্ধান্ত নেন, মামলার শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের মে মাসে রাজ্য সরকারের ৭৭ টি জনজাতিকে ওবিসি তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ ২০১০ সালের পর থেকে তৈরি রাজ্যের সব ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করে দেয়। হাইকোর্টের নির্দেশে রাতারাতি বাতিল হয়ে যায় প্রায় ১২ লক্ষ শংসাপত্র। সেই থেকে শুরু হয়েছে এই ওবিসি-টানাপোড়েন। চাপ বেড়েছে শাসক শিবিরের অন্দরে। ওবিসি-জট কেটেও যেন কাটে না। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে মিলল স্বস্তি। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, নির্বাচনের আগে অবশেষে শাসক শিবিরের চোখের সামনে থেকে কাটছে ওবিসি-জটের অন্ধকার।

