AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Tennis Player Radhika Yadav: খুন হওয়ার কয়েকদিন আগেই সামাজিক মাধ্যম থেকে নিজের অ্যাকাউন্ট ডিলিট করেছিলেন রাধিকা, ফোনে লুকিয়ে কোন রহস্য়?

Tennis Player Radhika Yadav: প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আর্থিক কারণের যে বিষয়টা উঠে আসে, সেটা সার্বিক নয়। কারণ রাধিকার বাবা দীপক যাদবের প্রচুর বিষয় সম্পত্তি ছিল, একটা ফার্ম হাইজ ছিল, প্রত্যেক মাসে ভাড়া বাবদই তিনি কয়েক লক্ষ টাকা পেতেন। তাহলে?

Tennis Player Radhika Yadav: খুন হওয়ার কয়েকদিন আগেই সামাজিক মাধ্যম থেকে নিজের অ্যাকাউন্ট ডিলিট করেছিলেন রাধিকা, ফোনে লুকিয়ে কোন রহস্য়?
রাধিকা যাদব।Image Credit: X
| Updated on: Jul 14, 2025 | 3:54 PM
Share

নয়া দিল্লি:  দুর্দান্ত টেনিস খেলে মেয়ে। উঠতি তারকা। সামনে ছিল অগুণতি সুযোগ, ২৫ বছর বয়সেই  চালাতেন নিজের টেনিস প্রশিক্ষণকেন্দ্র। এক প্রাণোচ্ছ্বল মেয়ে, রাধিকা! গত বৃহস্পতিবার  হরিয়ানার গুরুগ্রামের সেই টেনিস তারকা রাধিকা যাদব ‘খুন’ হলেন তাঁর বাবার হাতে। হ্যাঁ, তাঁর বাবা দীপক যাদবই মেয়েকে  পর পর ৫ রাউন্ড গুলি ছোড়েন। তার মধ্যে তিনটি রাধিকার শরীরকে বিদ্ধ করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাধিকার। কিন্তু কেন? অনেকগুলো তত্ত্ব উঠে এসেছে। প্রথমেই যেটা শোনা গিয়েছিল রাধিকার পয়সায় নাকি সংসার চলত, বলা ভালো, মেয়ের পয়সায় খাচ্ছেন বাবা! তেমনই খোঁটা শুনতে হত দীপক যাদবকে। তাতেই মানসিক অবসাদ। নিজের প্রতি গ্লানি, ক্লেশ, শেষমেশ তা ঝরে পড়ল বুলেটে! ফুঁড়ে গেল ফুটফুটে মেয়ের শরীর। কিন্তু এটা তো আপেক্ষিক কারণ।

কিন্তু এর পিছনেও উঠে এসেছে আরও একাধিক কারণ।  টেনিস খেলোয়াড়ের হত্যাকাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই চার দিকে প্রতিবাদের স্বর উঠেছে। এই পরিণতির জন্য পারিবারিক পরিবেশ এবং পরিবারের সদস্যদেরই দায়ী করছেন রাধিকার বন্ধুরা।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আর্থিক কারণের যে বিষয়টা উঠে আসে, সেটা সার্বিক নয়। কারণ রাধিকার বাবা দীপক যাদবের প্রচুর বিষয় সম্পত্তি ছিল, একটা ফার্ম হাইজ ছিল, প্রত্যেক মাসে ভাড়া বাবদই তিনি কয়েক লক্ষ টাকা পেতেন। তাহলে?

আসলে বিষয়টা লুকিয়ে সেই সমাজেই! সেই রক্ষণশীলতার বেরিয়ার।  প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, অন্যদের টেনিস প্রশিক্ষণ দেওয়ার ছবি বা ভিডিয়ো দিয়ে রিল তৈরি করে সেগুলি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করতেন রাধিকা। পাশাপাশি গানেরও ভিডিয়ো শুট করতেন। রাতারাতি সামাজিক মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন রাধিকা। নজর পড়েছিল পড়শিদের। বাবাকে ডেকে নানান কথা শুনাতেন। এই বিষয়টা পুলিশ তখন জানতে পারে, যখন তদন্তের মাঝে উঠে আসে, খুন হওয়ার দিন কয়েক আগেই সামাজিক মাধ্যম থেকে নিজের অ্যাকাউন্ট ডিলিট করেছিলেন রাধিকা। পুলিশের হাতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর। জানা যাচ্ছে, রাধিকা গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কনটাক্ট নম্বরও ডিলিট করেছেন। রাধিকার ফোন আপাতত পরীক্ষায় পাঠিয়েছে পুলিশ। কারণ সে ফোন লক! আর পাসওয়ার্ডও জানেন না রাধিকার বাবা-মা। তাহলে কি সেটাও পরিবারের চাপে? তদন্তের সঙ্গে যুক্ত এক পুলিশ আধিকারিকের কথাতেও বিষয়টা উঠে আসে।

পুলিশও মনে করছে,  মেয়ের সম্পর্কে আত্মীয়-পড়শিদের বিদ্রুপ মেনে নিতে পারছিলেন না দীপক যাদব। সঙ্গে দীপক প্রথম থেকেই মনে করতেন, মেয়ে কোচিং করানো শুরু করে তাঁর উজ্জ্বল ভবিষ্যতকে নষ্ট করছেন।

রাধিকার এক বান্ধবী পুলিশের কাছে বিস্ফোরক দাবি করেছেন। তিনি বলছেন, কী খাবেন, কোথায় যাবেন, কাদের সঙ্গে কথা বলবেন— সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন তাঁর বাবা-মা। ছোট পোশাক পরা যাবে না। কোনও ছেলের সঙ্গে কথা বলা যাবে না— এ রকম হাজার বিধিনিষেধ ছিল… বলছেন রাধিকার বান্ধু-বান্ধবীরা।

আর মাঝে এই ঘটনাটিকে ‘সম্মানরক্ষার্থে’ খুন বলে ইতিমধ্যেই দাবি উঠতে শুরু করে। যদিও সে তত্ত্ব খারিজ করেছেন রাধিকার ঘনিষ্ঠরাই। তাঁদের দাবি, রাধিকা তো সেভাবে কারোর সঙ্গে মেলামেশাই করতেন না, প্রেম তো দূরের কথা!

বৃহস্পতিবার পুলিশ যখন রাধিকার বাবাকে গ্রেফতার করেন, দৃশ্যত নির্বিকার ছিলেন তিনি। থানায় এক টানা চুপ করে বসে ছিলেন, খুব একটা উত্তরও দেননি। তবে তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরই জানিয়েছেন, একটা সময়ে হাউ হাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন দীপক। পুলিশেই বলতে থাকেন, ‘এমন চার্জশিট করুন, যাতে ফাঁসি হয় আমার…’।

পুলিশ আপাতত এই কেস ক্লোজ করেছে। পুলিশের কথায়, এটা ওপেন অ্যান্ড সাট কেস। নতুন করে আর বয়ান নেওয়া হবে না। ফরেনসিক রিপোর্ট ও আগের বয়ানের ভিত্তিতে চার্জশিট জমা দিতে চলেছে পুলিশ।

তবে এই হত্যাকাণ্ড আরও একবার প্রশ্ন তুলল সমাজের বুকে! আরও একবার ভাবাতে বাধ্য করল আপনাদের, রাধিকা কি তাহলে সত্যিই বুঝে গিয়েছিল, ওর আর দ্বিতীয় সানিয়া মির্জা হয়ে ওঠা যাবে না?