Tripura Bypolls 2022: ফলাফলের দিনও রক্তাক্ত ত্রিপুরা! আহত কংগ্রেস সভাপতি, থমথমে আগরতলা

Tripura Bypolls 2022: রবিবার (২৬ জুন), বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের দিনও রক্ত ঝরল ত্রিপুরায়। ফল প্রকাশের পরই, আগরতলার কংগ্রেস ভবন চত্বরে বিজেপি ও কংগ্রেস সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে মাথা ফাটল ত্রিপুরার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বিজিত সিনহার।

Tripura Bypolls 2022: ফলাফলের দিনও রক্তাক্ত ত্রিপুরা! আহত কংগ্রেস সভাপতি, থমথমে আগরতলা
মাথা ফাটল ত্রিপুরার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বিজিত সিনহার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 26, 2022 | 6:39 PM

আগরতলা: রবিবার (২৬ জুন), বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের দিনও রক্ত ঝরল ত্রিপুরায়। এদিন, ফল প্রকাশের পরই, আগরতলার কংগ্রেস ভবন চত্বরে বিজেপি ও কংগ্রেস সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বাঁধে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসের শেল পর্যন্ত ফাটাতে হয়। ঘটনায় আহত হয়েছেন ত্রিপুরার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বিরাজিত সিনহা। ছুরিকাহত হয়েছেন এক কংগ্রেস কর্মীও। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়েছে আগরতলায়।

বড়দোয়ালি, আগরতলা, সুরমা ও যুবরাজনগর – ত্রিপুরায় মোট চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছে। এদিন, ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, এরমধ্যে তিনটি আসনে জিতেছে শাসক দল বিজেপি। একমাত্র আগরতলা কেন্দ্রে জয়ী হন কংগ্রেস প্রার্থী সুদীপ রায় বর্মন। ফলাফল ঘোষণার পর, সুদীপ রায় বর্মনের সমর্থকদের উপর হামলা চালায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা, এমন অভিযোগ উঠেছে। কংগ্রেসের দাবি, আগরতলায় তাদের জয় সহ্য করতে পারছে না বিজেপি। মানুষ কং প্রার্থীকে ভোট দিয়েছে, এই ঈর্ষাতেই ফল প্রকাশের পরই হামলা চালানো হয়েছে।

কংগ্রেসের মিডিয়া ইনচার্জ আশীষ কুমার সাহা বলেছেন, ‘আগরতলা বিধানসভা আসনের বিজয়ী প্রার্থী সুদীপ রায় বর্মনকে নিয়ে দুপুর ১টার দিকে গণনাকেন্দ্র  থেকে কংগ্রেস ভবনে ফিরেছিলেন কংগ্রেস সমর্থকরা। যখন তারা মধ্যাহ্নভোজের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই বিরাট সংখ্যায় বিজেপি সমর্থকরা কংগ্রেস ভবনে হামলা চালায়। ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতির মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করা হয় এবং রোমি মিয়া নামে এক কংগ্রেস কর্মীকে ছুরিকাঘাত করে বিজেপি সমর্থকরা’। তাঁর আরও অভিযোগ, যুব মোর্চা নেতার নেতৃত্বে বিজেপি সমর্থকরা কংগ্রেস ভবনে ইট ছোড়ে। এই হামলার সময় পুলিশ নীরব দর্শক হয়ে ছিল বলে দাবি জানিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে, ফলাফল ঘোষণার পর সুদীপ রায় বর্মনের সমর্থকরাই  আচমকা হামলা চালিয়েছিল বিজেপি নেতা-কর্মীদের উপর এমনটাই অভিযোগ করেছে বিজেপি। রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর অভিযোগ, প্রথমে কংগ্রেস সমর্থকরা আগরতলা মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশনের এক বিজেপি কাউন্সিলরের দিকে ইট ছুড়েছিল। তাতেই তাঁদের সমর্থকরা খেপে যান। কংগ্রেসের হামলায় তাদের দলের প্রায় ছয়জন সমর্থক আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারি মাসেই বিজেপি ছেড়ে ফের পুরনো দল, কংগ্রেসে ফিরেছিলেন সুদীপ। তাঁরই সঙ্গে দল পরিবর্তন করেছিলেন আশীষ কুমার সাহাও। তারও বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই, বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন সুদীপ। এদিন ফল বের হতে দেখা যায়, বড়দোয়ালি কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার বিরুদ্ধে পরাজিত হয়েছেন আশীষ কুমার সাহা। তবে, আগরতলা কেন্দ্রে ৩,১৬৩ ভোটে জিতে নিজের ছেড়ে যাওয়া আসন ধরে রেখেছেন সুদীপ।

দুই পক্ষের সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আগরতলায়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। ওই এলাকা থেকে দুই পক্ষের সমর্থকদেরই ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। তবে, উত্তেজনা এখনও প্রশমিত হয়নি। সূত্রের খবর, আগরতলা শহরের বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হচ্ছেন দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকরা। জমায়েত সরাতে লাঠি চালাচ্ছে পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে আধা সামরিক বাহিনীও। আগরতলার চৌমুহনী পোস্ট অফিস এলাকায় অবস্থিত কংগ্রেস ভবন। সংঘর্ষের পর পুরো এলাকাটি জনশূন্য হয়ে পড়েছে।

উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণের আগে থেকেই জায়গায় জায়গায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের সাক্ষী হয়েছে ত্রিপুরা। ভোটের আগের রাতেই ধলাই জেলার সুরমায় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অর্জুন নমশূত্রের গাড়িতে বিজেপি আশ্রীত দুষষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ভোটের দিনও ত্রিপুরার চারটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর এসেছিল। মূলত, বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থক এবং সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের উপর বিজেপি-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ ছিল। সেই সঙ্গে, বুথ দখল, ভোটারদের ভয় দেখানো, বিরোধী পোলিং এজেন্টদের মেরে বুথ থেকে বার করে দেওয়ার মতো বিভিন্ন অভিযোগও উঠেছিল। ফলাফল ঘোষণার দিনও হিংসা থামল না।

এদিন ত্রিপুরার বিধানসভা উপনির্বাচনে বড়দোয়ালি শহর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে গিয়ে প্রার্থী হওয়া আশীষ কুমার সাহাকে তিনি ৬,১০৪ ভোটে পরাজিত করেছেন। সুরমা ও যুবরাজনগর কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন বিজেপির স্বপ্না দাস এবং মলিনা দেবী। অন্যদিকে, খাতাই খুলতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস এবং সিপিআই(এম)।