AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Explained: ব্ল্যাক বক্সে কী কী তথ্য থাকে? কীভাবে তা জানায় দুর্ঘটনার আসল কারণ?

Black Box: ঠিক কী ঘটেছিল সেই মুহূর্তে? সব রহস্য লুকিয়ে রয়েছে দুই ব্ল্যাক বক্সে। ইতিমধ্যেই একটি উদ্ধার করা গেলেও খোঁজ চলছে আরেকটির। ঘটনাস্থলে তদন্তে নেমেছে এনআইএ। কিন্তু কেন এত গুরুত্বপূর্ণ ব্ল্যাক বক্স? কী ভাবে তা জানাবে কী হয়েছিল ১২ জুন ২০২৫ ১টা ৩৮ মিনিট থেকে ১টা ৩৯ মিনিটের মধ্যে?

Explained: ব্ল্যাক বক্সে কী কী তথ্য থাকে? কীভাবে তা জানায় দুর্ঘটনার আসল কারণ?
Image Credit: Getty Images, PTI
| Updated on: Jun 13, 2025 | 6:20 PM
Share

মাত্র ৩২ সেকেন্ডের ফ্লাইট যাত্রা তারপরেই সব শেষ। কীভাবে ক্র্যাশ করল ফ্লাইট নম্বর এআই-১৭১? ঠিক কী ঘটেছিল সেই মুহূর্তে? সব রহস্য লুকিয়ে রয়েছে দুই ব্ল্যাক বক্সে। ইতিমধ্যেই একটি উদ্ধার করা গেলেও খোঁজ চলছে আরেকটির। ঘটনাস্থলে তদন্তে নেমেছে এনআইএ। কিন্তু কেন এত গুরুত্বপূর্ণ ব্ল্যাক বক্স? কী ভাবে তা জানাবে কী হয়েছিল ১২ জুন ২০২৫ ১টা ৩৮ মিনিট থেকে ১টা ৩৯ মিনিটের মধ্যে?

ব্ল্যাক বক্স কী?

ব্ল্যাক বক্স হলো বিমানে স্থাপিত বিশেষ যন্ত্র যা প্লেনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও কথাবার্তা রেকর্ড করে রাখে। এর আধুনিক ও কারিগরিতে অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে, বিশেষ করে দুর্ঘটনার কারণ উদ্‌ঘাটন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও সুসংহত করার ক্ষেত্রে।

একটি বিমানে কটি ব্ল্যাক বক্স থাকে?

একটি বিমানে সাধারণত দুটি বল্যাক বক্স থাকে — একটি ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (FDR) ও অপরটি ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (CVR)।

ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (FDR) বিমানে ওড়ার সময় উচ্চতা, গতি, দিকনির্দেশনা, চাপ, জ্বলানি ব্যবহার পরিমাণ এবং আরও অনেক তথ্য নথিবদ্ধ করে। অপর দিকে, ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (CVR) পাইলট ও ক্রু সদস্যদের কথাবার্তা, রেডিও বার্তা ও আশেপাশের শব্দও রেকর্ড করে, যা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে।

বিমানের কোথায় থাকে ব্ল্যাক বক্স?

ব্ল্যাক বক্সগুলো সাধারণত বিমানে লেজের দিকে থাকে। এর বড় কারণ হল দুর্ঘটনার সময় লেজের অংশে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। তা ছাড়া ব্ল্যাক বক্স বিশেষ আবরণে আবৃত থাকে, যা অগ্নিকাণ্ড, জল, উচ্চচাপ এবং আঘাত সহ্য করেও সুরক্ষিত রাখে তথ্য।

কীভাবে ব্ল্যাক বক্স জানায় দুর্ঘটনার কারণ?

ব্ল্যাক বক্সগুলিতে রয়েছে বিশেষ সংরক্ষণ ও সিগন্যাল দেওয়ার ব্যবস্থা — যেমন আল্ট্রাসাউন্ড পিং বা বিপ্‌, যা দুর্ঘটনার পর সমুদ্রে অন্য কোথাও এর অবস্থান নির্ণয়ে সহায়তা করে।

ব্ল্যাক বক্সের তথ্য বিশেষজ্ঞরা বিশেষ যন্ত্র ও সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে বিশ্লেষণ ও অধ্যয়ন করে, যা দুর্ঘটনার কারণ প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর ভিত্তিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পরিবর্তন ও আধুনিকীকরণ আনা হয়, যা ভবিষ্যতে অনুরূপ দুর্ঘটনা এড়াতে সহায়তা করে। সাধারণত এটি উদ্ধারের পরে এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর(AAIB) ওপরে থাকে এর ভিতরে থাকা তথ্য ডিকোড করার দায়িত্ব। প্রসঙ্গত, ভারতীয় বেসামরিক বিমানের কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার তদন্তভার যায় এই সংস্থার উপরেই।

সংক্ষেপে বললে, ব্ল্যাক বক্স হল বিমানে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অপরিহার্য ও অমোঘ উপাদান — যা অনেক অজ্ঞাত তথ্য প্রকাশ করে ও যাত্রী এবং ক্রু-র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

কবে আবিষ্কার হয় ব্ল্যাক বক্স?

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫৩ সালে অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী ডেভিড ওয়ারেন ককপিট ভয়েস রেকর্ডারের ধারণাটি সামনে আনেন। ওয়ারেন ১৯৫৩ সালে বিশ্বের প্রথম বাণিজ্যিক জেট বিমান, ধূমকেতুর দুর্ঘটনার তদন্ত করার সময় বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারীদের জন্য ককপিটে থাকা কণ্ঠস্বরের রেকর্ডিং রাখার কথা ভাবেন। এতে তদন্তে সুবিধা হবে।

১৯৫৬ সালে ব্ল্যাক বক্সের একটি ডিজাইন করেন তিনি। প্রটোটাইপ বক্স নির্মাণ করেন। তবে সব বিমানে এটি থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝতে আরও অনেক বছর সময় লাগে।

ব্ল্যাক বক্সে কী কী তথ্য সংরক্ষিত থাকে?

NTSB-এর মতে, ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার একটি বিমানের উচ্চতা, বায়ুর গতি এবং কোথায় যাচ্ছে তাও পর্যবেক্ষণ করে। এই বিষয়গুলির জন্য কমপক্ষে ৮৮টি প্যারামিটার রয়েছে। ১,০০০ টিরও বেশি খুঁটিনাটির দিকে নজর রাখে। ডানার ফ্ল্যাপ অবস্থান থেকে শুরু করে ধোঁয়ার অ্যালার্ম রেকর্ডে থাকে সব তথ্য। এর সংগৃহীত তথ্য থেকে ঘটনার কম্পিউটার অ্যানিমেটেড ভিডিয়ো বানানো যায়।

সাধারণত একটি ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার প্রায় ২৫ ঘন্টার তথ্য বহন করে। সেই সময়ের মধ্যে পূর্ববর্তী ফ্লাইটগুলির তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে, যা কখনও কখনও পরবর্তী ফ্লাইটে যান্ত্রিক ব্যর্থতার কারণ সম্পর্কে ইঙ্গিত দিতে পারে।

তবে ব্ল্যাক বক্স মানেই কিন্তু এর রং কালো হয় না। একটি ব্ল্যাক বক্স সাধারণত কমলা রঙের হয়। যাতে বিমানের ধ্বংসাবশেষের মধ্যেও সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। সমুদ্রের গভীরেও খোঁজা সহজ হয়। সমুদ্র তলদেশে প্রায় ১৪ হাজার ফুট নিচ থেকে সিগন্যাল পাঠাতে পারে ব্ল্যাক বক্স।