কলকাতা: দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর ১৫ দিনের মাথায় রীতিমতো ছক্কা হাঁকালো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত প্রকল্প ‘কৃষক বন্ধু’। গত ১৭ জুন নবান্ন থেকে এই প্রকল্পের সংশোধিত সংস্করণের সূচনা করেন মমতা। যেখানে কৃষকদের জন্য অনুদানের পরিমাণ একধাক্কায় বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়। সূত্রের খবর, সেই প্রকল্প শুরু হওয়ার ১৫ দিনের মাথায় নবান্নে যে রিপোর্ট এসেছে তাতে বেশ খুশি রাজ্য সরকার। জানা যাচ্ছে, মাত্র ১৫ দিনেই রাজ্যের ৬২ লক্ষ কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কৃষক বন্ধুর প্রথম কিস্তির টাকা পৌঁছে গিয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, প্রথম কিস্তি বাবদ ৬২ লক্ষ কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫ হাজার টাকা করে পাঠানো হয়েছে। এই প্রথম কিস্তি দিতে রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে খরচ হয়েছে মোট ১৮০০ কোটি টাকা। চলতি বছরের শেষের দিকেই কৃষক বন্ধু প্রকল্পের দ্বিতীয় কিস্তির টাকাও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
১. আগে কৃষকরা ৫ হাজার টাকা পেতেন, তাঁরা ১০ হাজার টাকা পাবেন। খেত মজুর ও বরগাদারদের যাঁদের তেমন জমি নেই, তাঁদের আগে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হত, এ বার তাঁদের ৪ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
২. মমতা জানিয়েছেন, কেন্দ্র সব ২ একর জমি না থাকলে কৃষকদের টাকা দেয় না, কিন্তু রাজ্য সব কৃষককেই টাকা দেবে। ৬০ লক্ষ কৃষক এই টাকা পায়। দেশের মধ্যে প্রথম এত বড় প্রজেক্ট কৃষকদের জন্য আনা হল।
৩. ১৭ জুন টাকা তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। জেলাশাসকদের দায়িত্ব নিতে বলেন মমতা।
৪. এই স্কিমে কোনও কৃষকের মৃত্যু হলে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়। জমিতে কোনও মিউটেশন ফি লাগে না।
আরও পড়ুন: না চাইতেই অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার! ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পে বিবাহিত মহিলারাও পাচ্ছেন টাকা, নেপথ্যে কারা?
৫. ২৮০০০ পরিবারকে ডেথ বেনিফিট দেওয়া হয়েছে। জমির উপযুক্ত নথি থাকলে তবে আবেদন করা যেত, এখন নিজে জমি দেখিয়ে প্রকল্পের আওতায় আসতে পারে।
৬. গত ৯ বছরে নানা কারণে যাঁদের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এমন ১ কোটি ২০ লক্ষ পরিবারকে ৩৫০০ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে রাজ্য। নতুন করে কৃষি কাজ শুরু করার জন্য এই টাকা দেওয়া হয়। ইয়াসের পরও এই টাকা দেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে সেই টাকা।
৭. এখনও পর্যন্ত ৭০ লক্ষ কিষান ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে কৃষকদের, ৫০ লক্ষ সয়েল টেস্ট কার্ড দেওয়া হয়েছে, কম ভাড়ায় যন্ত্রপাতি দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের।
এ দিন নবান্নে ‘প্রতিশ্রুতি পূরণ’ নামে একটি বই প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার, কৃষকদের জন্য কী কী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেটা কী ভাবে পূরণ করা হল সেই বিষয়ের উল্লেখ আছে ওই বইতে। একই সঙ্গে বাংলায় কৃষকদের জন্য কী কী সুবিধা দেওয়া হচ্ছে সেই বিষয়েও বিস্তারিত লেখা হয়েছে ওই বইতে।
আরও পড়ুন: ‘ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে শাসকের কান ঝালাপালা করে দিন’, বিজেপির ক্লাসরুমে নির্দেশ ‘স্যর’ শুভেন্দুর