Calcutta University VC: ‘বইয়ের পাতার লেখাকে বাস্তবায়িত’ করে শান্তা বললেন, ‘অনুরোধ করলেন কী করে মুখ্যমন্ত্রী?’
Calcutta University VC on TMC: তাঁর সংযোজন, "আমি যখন সিন্ডিকেটের সদস্য ছিলাম, তখনকার উপাচার্যরা তো আমায় প্রতিবাদী বলে দিত। আজ আমি যখন ক্ষমতাসীন, তখন আমি সেই স্বতন্ত্রতা একেবারে প্রয়োগ করেছি। সেখানে সরকার কোনও নির্দেশ দিতে পারে না। আর তাতে মান্যতা দিয়েছে সিন্ডিকেটও।"

কলকাতা: চিঠি চালাচালি, মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, অধ্য়াপকদের আহ্বান, নেতাদের কটাক্ষ। একটা পরীক্ষার জন্য তাঁকে পেরতে হয়েছে একাধিক পর্যায়, কার্যত একাধিক বাধাও। তবে নিজের সিদ্ধান্তে অনড়ই থেকেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নির্বিঘ্নে’ হয়েছে পরীক্ষা। তাই অধ্যাপক মহল বলছে, স্নায়ুযুদ্ধে ‘তন্ময়’ পদক্ষেপে জয়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত।
যে পরীক্ষার জন্য এত ‘লড়াই’ চালিয়েছেন তিনি, বৃহস্পতিবার অর্থাৎ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে সেই পরীক্ষা মিটেছে ‘নির্বিঘ্নে’। মুখে জয়ের প্রজ্জ্বলিত হাসি নিয়ে শান্তা দত্ত জানিয়েছেন, “আমি তো উপাচার্য হওয়ার আগে ডিন ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার কাজও বহু দিন করেছি। তখন থেকেই লক্ষ্য করেছি, অটোনমি বা স্বতন্ত্রতা শুধু বইয়ের পাতাতেই লেখা রয়েছে। কিন্তু এই ১৬৮ বছর পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্রতাটাও কোনও একটা বইয়ের পাতায় থেকে যাবে, তা হতে পারে?”
তাঁর সংযোজন, “আমি যখন সিন্ডিকেটের সদস্য ছিলাম, তখনকার উপাচার্যরা তো আমায় প্রতিবাদী বলে দিত। আজ আমি যখন ক্ষমতাসীন, তখন আমি সেই স্বতন্ত্রতা একেবারে প্রয়োগ করেছি। সেখানে সরকার কোনও নির্দেশ দিতে পারে না। আর তাতে মান্যতা দিয়েছে সিন্ডিকেটও।”
এতক্ষণে প্রথম হাফের পরীক্ষা মিটেছে। দ্বিতীয় হাফও প্রায় শেষের দিকে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, প্রথম হাফে পরীক্ষায় মোট ৫৯টি সেন্টার মিলিয়ে পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার ৯৬ শতাংশ। তবে এই উপস্থিতির হারে একদমই ‘অবাক হননি’ উপাচার্য। তাঁর কথায়, “আমাদের যারা আটকে রেখেছিল, তারা জনা পঁচিশেক। আর পরীক্ষার্থী তো কত! সবাই পরীক্ষা দেওয়ার জন্য একটা মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছিল।”
অবশ্য, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অনড় থাকলেও, অনড় থাকতে পারেনি বিশ্ববাংলা, এমনকি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ও। সেই নিয়ে প্রশ্ন করায় অস্থায়ী উপাচার্য শান্তা দত্ত বলেন, “ভিন্ন ছবি তো দেখা যাবেই। আমি সিন্ডিকেট প্রধান থাকাকালীন দেখেছিলাম, স্বাধীন স্বত্তা বইয়ের পাতায় রয়েছে গিয়েছে। আর উপাচার্যরা সব সময়ই সরকারকে খুশি করতে চেষ্টা করছে। যা আজও চলছে।”
পাশাপাশি, মুখ্য়মন্ত্রীর অনুরোধ নিয়েও মুখ খুলেছেন শান্তা। এই পরীক্ষার দিন-দ্বন্দ্বের আবহে এক শিক্ষা আধিকারিক উপাচার্যকে জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী দিন বদলের জন্য ব্যক্তিগত ভাবে অনুরোধ করেছেন। অবশ্য সেই আর্জিও রাখেননি তিনি। এদিন তাঁকে জিজ্ঞাসা করতেই শান্তা দত্ত বলেন, “এটা তো অসাংবিধানিক। অনুরোধ করলেন কী করে? না করলেই তো পারতেন।”
