কলকাতা: প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে সরব এক মহিলা সাংবাদিক। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি তন্ময়ের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে সরব হন। এরপরই এই নিয়ে সিপিএমকে আক্রমণ করে তৃণমূল। অভিযোগ ঘিরে সিপিএমের অন্দরেও শোরগোল শুরু হয়। কয়েক ঘণ্টা পরই তন্ময় ভট্টাচার্যকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয় সিপিএম।
রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এক মহিলা সাংবাদিক বলেন, “আজ আমার ইন্টারভিউ নেওয়ার কথা ছিল সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যর। আমার ক্যামেরাম্যান বলছিলেন, কে কোথায় বসবেন। সেই উনি বলেন, আমি কোথায় বসব? এখানে বসব। বলতে বলতে আমার দিকে সরে আসেন। আমার কোলে বসে পড়েন। এর আগেও অনেকবার উনি ইয়ার্কি করেছেন। ইন্টারভিউ দিতে দিতে গায়ে হাত দেন। আগে আমি উপেক্ষা করেছি। এখন মনে হচ্ছে, তা করা ঠিক হয়নি। আজও আমি বিষয়টি সামলে তাঁর ইন্টারভিউ নিয়েছি। তবে তার আগে তাঁকে বলি, আপনি ইয়ার্কি করেন জানি। কিন্তু, এরকম করবেন না। আমার ভাল লাগে না।” সেইসময় তাঁর ক্যামেরা অন ছিল না বলে জানান ওই মহিলা সাংবাদিক।
সিপিএমকে অবশ্য দোষারোপ করতে চাননি ওই মহিলা সাংবাদিক। তিনি বলেন, এটা ব্যক্তিবিশেষের ব্যাপার। সিপিএম তন্ময়ের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবেন, তা তিনি জানেন না বলে ৮ মিনিট ২৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়োয় বলেন মহিলা সাংবাদিক।
মহিলা সাংবাদিকের এই বক্তব্য ভাইরাল হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “বিষয়টি সত্যি হলে সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করুক পুলিশ।” সিপিএম কী বলবে? এই প্রশ্নও তোলেন কুণাল।
ওই মহিলা সাংবাদিক তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পর এক্স হ্যান্ডলে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী লেখেন, ‘মহিলা সাংবাদিকের বার্তা দেখেছি। গুরুতর অভিযোগ। ক্ষমার অযোগ্য। নিন্দা করছি। পার্টির প্রক্রিয়া অনুযায়ী আমরা দ্রুত পদক্ষেপ করব। নিশ্চিন্ত থাকুন।’ এরপরই তৃণমূলকে খোঁচা দিয়ে তিনি লেখেন, ‘আমরা অন্য দলের মতো নই। সাম্প্রতিক অতীতে অনৈতিকতার দায়ে যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, তাকেই তৃণমূল নেতা করেছে।’
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, এক মহিলা সাংবাদিক তন্ময়ের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এই ধরনের কোনও অভিযোগ আসলে আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখি। পার্টি কিছুতেই এই ধরনের ঘটনাকে সমর্থন করে না। আমাদের ইন্টারন্যাল কমপ্লেন কমিটি আছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে। তার আগে আজকেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। তারপর কমিটি যা প্রস্তাব রাখবে, সেটাকে গ্রহণ করা হবে। সিপিএমের নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে মানুষ কী আশা করে, সেটা স্পষ্ট করে দিতেই আমাদের কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।”