Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Gariahat Murder: জোড়া খুন-কাণ্ডে ভিকি ও তার সঙ্গীর ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ

Murder: পুলিশ ও আদালত সূত্রে খবর, কাকুলিয়ায় খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। খুনের কারণ, অস্ত্র উদ্ধার ও ঘটনার পুনর্নিমাণের জন্য পুলিশি হেফাজতে আবেদন করা হয়।

Gariahat Murder: জোড়া খুন-কাণ্ডে ভিকি ও তার সঙ্গীর ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ
ধৃত ভিকি ও তার সঙ্গীকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ, গ্রাফিক্স: অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 02, 2021 | 4:35 PM

কলকাতা: খুনের পর সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়ি চালকের আঙুল থেকে সোনা ও রূপোর আংটি খুলে নিয়েছিল ভিকি। তা এক বন্ধুর কাছে জমা রেখেছিল। বিনিময়ে নিয়েছিল ৫ হাজার টাকা। আর সেই টাকাকেই পুঁজি করে বাণিজ্যনগরীতে পাড়ি দেয় ভিকি। খুনের প্রায় সপ্তাহ তিনেকের মাথায় মুম্বই থেকে কাঁকুলিয়া খুনের (Murder) মূল অভিযুক্ত ভিকি হালদার ও তার সঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃতদের আলিপুর আদালতে তোলা হয়।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে খবর, কাকুলিয়ায় খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। খুনের কারণ, অস্ত্র উদ্ধার ও ঘটনার পুনর্নিমাণের জন্য পুলিশি হেফাজতে আবেদন করা হয়। আলিপুর আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে। আগামী ১৩ নভেম্বর ধৃতদের ফের  আদালতে পেশ করা হবে। তদন্তকারীদের অনুমান, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে অন্যান্য নানা তথ্য উঠে আসতে পারে। ইতিমধ্যেই ডায়মন্ডহারবারে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। ভিকির দুই সঙ্গীর বাড়িতে এদিন অভিযান চালান তদন্তকারীরা।

কাকুলিয়া জোড়া খুন-কাণ্ডে ভিকি ও তার সঙ্গী ধরা পড়ার পর তারা জেরায় জানিয়েছে, খুনের পর এক বন্ধু-সম আত্মীয়ের কাছে গিয়েছিল ভিকি। সুবীর চাকি ও তাঁর চালকের আঙুল থেকে লুঠ করা আঙটি জমা রেখেছিল আর পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছিল। বলেছিল, পরে টাকা দিয়ে গয়না নিয়ে যাবে বলেছিল সে।

ভিকি ও তার সঙ্গী মোবাইল ব্যবহার করত না। কিন্তু অন্য এক জনের মোবাইল থেকে ওই বন্ধুকে ফোন করেছিল ভিকি। তখনই মোবাইল ট্র্যাক করে পুলিশ। মোবাইলের সূত্রেই জানা যায় ভিকি মুম্বইতে। সম্ভাব্য লোকেশন মেলে। তারপর মুম্বই রওনা দেন গোয়েন্দারা। মোবাইল সূত্রে জানা গিয়েছে, মেলা লোকেশন সংলগ্ন এলাকায় নির্মীয়মান বহুতলগুলিতে খোঁজ করেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয় ভিকি।

খুনের পরে ভিকির খোঁজ পেতে রেলের থেকে ক’দিনের যাত্রী তালিকা চাওয়া হয়েছিল। শিয়ালদহ, হাওড়া থেকে দূরপাল্লার ট্রেনের সেই যাত্রী তালিকা থেকেই নাম মিলেছিল ভিকির। কাঁকুলিয়ায় সুবীর চাকি ও তাঁর চালককে একই দিনে খুন করা হয়। ঘটনার তদন্তে মেনে পুলিশ অন্যতম মূল অভিযুক্ত হিসেবে ভিকি ও তার মায়ের সন্ধান পায়। তার মা মিঠু হালদারকে গ্রেফতার করা হলেও ভিকিকে ধরা সম্ভব হচ্ছিল না। বারবার মোবাইল নম্বর বদলে পুলিশের চোখে ধুলো দিচ্ছিল সে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় গা ঢাকা দিয়ে থাকছিল। বারবার ডেরাও বদলাচ্ছিল। তাই তাকে নাগালে পাওয়া যাচ্ছিল না।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৮ অক্টোবর হাওড়া থেকে ট্রেনে ওঠে ভিকি ও তার বন্ধু। তারা পরেশনাথের টিকিট কাটে। তবে টিকিট কাটলেও পরেশনাথে নামেনি সে। এরপর সোজা চলে যায় মুম্বই। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতেই এমনটা করে বলে অনুমান পুলিশের। মুম্বইতে কালাচৌকি এলাকার একটি নির্ণীয়মান বহুতলে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করছিল সে। এ দিকে প্রথম থেকেই তার ওপর নজর ছিল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের। প্রথমে পরেশনাথে গিয়েও তার সন্ধান পায়নি পুলিশ। পরে তারা মুম্বইতে যায়। গত শনিবার রাতে ভিকিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ভিকির মা মিঠু হালদার ও আরও তিনজনকে আগেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের জেরা করেই ভিকির খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ভিকি পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। এবার তাকে গ্রেফতার করার পর তাদের কলকাতায় আনা হচ্ছে। কলকাতায় আনার পর ভিকিকে জেরা করলে খুনের আসল রহস্য, খুনের কারণ জানা যাবে বলেই মনে করছে পুলিশ। কারণ, তার মা মিঠু আগেই পুলিশকে জানিয়েছিল যে ভিকির সঙ্গে বসেই খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, আজ না হোক ভিকি ধরা পড়বে এ কথা জানাই ছিল। তিনি আরও বলেন, মুম্বই থেকে ভিকি ধরা পড়ার সম্ভাবনা খুব বেশি ছিল, কারণ ভিকি মুম্বইতে কিছুদিন কাজ করে এসেছে। সে হিন্দিতে কথা বলতে পারে, কিছুটা ইংরেজিও বলতে পারে। তাই মুম্বইতে তার পক্ষে কাজ পাওয়া সহজ ছিল। এবার ঘটনাস্থলে ভিকিকে নিয়ে গিয়ে ঘটনা পুনর্নির্মান করা হলেই খুনের পিছনে থাকা আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন তিনি।

পুলিশি জেরায় জানা গিয়েছে, বাড়ি সারানোর নাম করেই ভিকির দুই সঙ্গী বাপি ও জাহির গাজিকে ডেকে এনেছিল মিঠু। আগে খুন করা হয়। তারপর চলে অবাধে লুঠ। খুনের দিন বাড়িতে ঢোকার পর ওপরের ঘরে চলে যান ভিকি। চালককে আগে খুন করা হয়। ওপরের ঘরে খুন করা হয় চালককে। পরে নীচে নেমে আসেন ভিকি। একতলায় ছিলেন সুবীর চাকি।

আরও পড়ুন: Shantipur By-Election 2021: ধোপে টিকল না বিতর্ক, বিজেপির জেতা কেন্দ্রেই জয় ছিনিয়ে নিল ঘাসফুল