Kaliaganj Case: ‘রাজ্য নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনছে’, কালিয়াগঞ্জ মামলায় চরম ভর্ৎসনা বিচারপতি মান্থার
Kaliaganj Case: আদালত গঠিত সিটের অন্যতম সদস্য উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, রাজ্যের অসহযোগিতা সত্ত্বেও কাজ করেছে সিট।
কলকাতা: কালিয়াগঞ্জে নাবালিকার মৃত্যুর তদন্ত করতে সিট (SIT) গঠন করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তিন সদস্যের সেই সিট-কে তদন্তের ক্ষেত্রে রাজ্য পুলিশ কোনও সাহায্য করছে না বলে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। কার্যত সিবিআই-কে তদন্তভার দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। গত এপ্রিলে কালিয়াগঞ্জে এক নাবালিকার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি। ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন প্রতিবেশীরা। ওই নাবালিকার দেহ টানতে টানতে নিয়ে যাওয়ার যে ছবি দেখা গিয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল পুলিশকে। সেই মামলায় প্রাক্তন পুলিশ কর্তা পঙ্কজ দত্ত, উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ও পুলিশ আধিকারিক দময়ন্তী সেনকে সদস্য হিসেবে রেখে সিট গঠন করেছিল হাইকোর্ট।
‘রাজ্য নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনছে’
বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে রাজ্যকে কার্যত ভর্ৎসনা করে বিচারপতি মান্থা বলেন, “পুলিশ সিট-কে সাহায্য করছে না। এভাবে রাজ্য নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনছে। এবার কি সিবিআই দিলে খুশি হবেন?” সিট যাতে তদন্ত করতে না পারে, রাজ্য সেই চেষ্টা করছে বলেই উল্লেখ করেছেন বিচারপতি। তাঁর বক্তব্য, ইচ্ছে করে আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছে রাজ্য। কেন এমন আচরণ করা হল, তা নিয়ে মুখ্যসচিবের কাছে রিপোর্টও তলব করেছেন বিচারপতি।
কিছুই জানে না রাজ্য!
রাজ্য অবশ্য সাহায্য না করার অভিযোগ মানতে নারাজ। রাজ্যের তরফে আইনজীবী অমল সেন আদালতে বলেন, “রাজ্য এ ব্যাপারে কিছু জানে না। মামলাটি ডিভিশন বেঞ্চে উল্লেখ করা হয়েছিল। তখন গৃহীত হয়নি।” তাঁর দাবি, আগামী সপ্তাহে যে কোনও দিন শুনানি হোক। তার মধ্যে ফের ডিভিশন বেঞ্চে যাবে রাজ্য।
তবে রাজ্য যে কিছু জানে না, এই যুক্তি মানতে নারাজ বিচারপতি। তিনি বলেন, “এটা কী ধরনের আচরণ? রাজ্য সব জানে। ইচ্ছে করে আদালতের রায় মানা হয়নি।” ডিভিশন বেঞ্চের তরফে যখন কোনও স্থগিতাদেশ নেই, তাহলে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ কেন মানা হল না? সেই প্রশ্নই তুলেছেন বিচারপতি। বিচারপতি মান্থা আরও বলেছেন, “সিটের সদস্যরা বর্ষীয়ান, দক্ষ আধিকারিক। তাঁরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের এহেন আচরণে।”
সিবিআই তদন্তের পক্ষে সওয়াল উপেন বিশ্বাসের
আদালত গঠিত সিটের অন্যতম সদস্য উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, রাজ্যের অসহযোগিতা সত্ত্বেও কাজ করেছে সিট। ইতিমধ্যে সিটের পক্ষ থেকে আদালতে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। প্রাক্তন সিবিআই কর্তা বলেন, ‘সব তথ্যের স্ক্রুটিনি করা হয়েছে। আমাদের কেউ সাহায্য করেনি। যদি ওই পরিবারের বিশ্বাস ও রাজ্যবাসীর বিশ্বাস ফেরাতে হয়, তাহলে রাজ্য পুলিশের উপর নির্ভর করলে হবে না। সিবিআই-কে ছাড়া এই তদন্ত সম্ভব নয়।’
উপেন বিশ্বাস জানিয়েছেন, দময়ন্তী সেন অসুস্থতার কারণে তদন্তে যোগ দিতে পারেননি। পরে দেখা যায়, তাঁকে রাজ্য বদলি করে দিয়েছে। তাঁর দাবি, সৎ উদ্দেশ্য থাকলে রাজ্য এমন সিদ্ধান্ত নিত না।