Gariahat Double Murder: নামী সংস্থার এমডি চেয়েছিলেন পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করতে, তাতে কার বাধা? গড়িয়াহাট জোড়া খুনে নয়া তথ্য
Kolkata: রাতেও তিনি বাড়ি না ফেরায় তাঁর পরিবারের লোকজন গড়িয়াহাট থানায় ফোন করে জানায়, সুবীরবাবুর মোবাইল ফোন বন্ধ।
কলকাতা: গড়িয়াহাটের (Gariahat Double Murder) ৭৮ এ কাকুলিয়া রোডের জোড়া খুনের ঘটনায় ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। তদন্তকারীদের হাতে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
নিহত সুবীর চাকি নামী ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে কর্মরত। বেশ কয়েক বছর আগেই গড়িয়াহাটের দোতলা বাড়ি ছেড়ে পরিবার নিয়ে নিউটাউনের ‘ইউনি ওয়ার্ল্ড সিটি’ তে থাকতে শুরু করেন বাড়িমালিক সুবির চাকি। সাড়ে তিন বছর ধরে সুবীর চাকির মা একা বাড়িতে থাকতেন। পরে তাঁকেও এখান থেকে নিয়ে চলে যান সুবীর চাকি। এই দোতলা বাড়িটি তাঁর বিক্রির পরিকল্পনা ছিল। বাড়ির একতলা একটি বেসরকারি সংস্থাকে ভাড়া দেওয়া ছিল। রবিবার হওয়ায় সেই অফিস বন্ধ ছিল। সোমবার সকালে বাড়ির মালিক খুনের খবর পেয়ে অফিসের কর্মীরা আসেন।
অফিসের ভিতরে একটি ঘর কম্পিউটার রুম। ঘরের অন্য একটি দরজা দিয়ে সিঁড়ি ব্যবহার করে দোতলায় যাওয়া যায়। অফিসের কর্মীরা অফিস খুলে ভিতরে গিয়ে দেখতে পান কম্পিউটার রুমের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। তাহলে কি আততায়ী সে দরজা বন্ধ করেছিল, যাতে একতলা থেকে কেউ দোতলায় যেতে না পারেন? খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
ইতিমধ্যে ভাড়াটে অফিসের কর্মীরা গড়িয়েহাট থানার পুলিশকে ফোন করে কম্পিউটার রুম ভিতর থেকে বন্ধ থাকার বিষয়টি জানিয়েছেন। অফিসের কর্মী বলেন, “আমাদের কম্পিউটার রুমটা ভিতর থেকে লক করা থাকত। আমরাই করতাম। শনিবার রুম খোলা ছিল। রবিবার অফিস বন্ধ ছিল। কিন্তু ওই রুমের দরজা ভিতর থেকে কে বন্ধ করল, সেটাই প্রশ্ন।”
গড়িয়াহাট থানা এলাকার কাকুলিয়া রোডের দোতলা একটি বাড়ি থেকে গতকাল গভীর রাতে ষাটোর্ধ্ব দুই ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে, ৭৮ এ কাকুলিয়া রোডের ওই বাড়ির মালিক সুবীর চাকি। তিনি ও তাঁর গাড়ি চালক রবীন মণ্ডল খুন হয়েছেন। একটি দেহ দোতলার ঘরে পড়েছিল। অন্য দেহটি পড়েছিল বাড়ির একতলায়। দুজনের দেহের হাতে, পায়ে ও গলায় ধারাল অস্ত্রের একাধিক আঘাত মিলেছে।
কাকুলিয়া রোডের বাড়িটি মোটা দামে বিক্রি করতে চাইছিলেন। একাধিক ক্রেতার সঙ্গে কথাবার্তাও চলছিল। গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ নিউ টাউন থেকে গাড়িতে কাকুলিয়া রোডে আসেন সুবীরবাবু। সম্ভবত কোনও ক্রেতাকে সম্পত্তি দেখানোই উদ্দেশ্য ছিল বলে পুলিশের অনুমান।
জানা যাচ্ছে, রবিবারই একই কারণে ওই বাড়িতে গাড়ি চালকের সঙ্গে আসেন সুবীর। রাতেও তিনি বাড়ি না ফেরায় তাঁর পরিবারের লোকজন গড়িয়াহাট থানায় ফোন করে জানায়, সুবীরবাবুর মোবাইল ফোন বন্ধ। তাঁর ও তাঁর চালকের খোঁজ মিলছে না। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই বাড়িতে তল্লাশি চালায়। রাতে পুলিশ দেহ দুটি উদ্ধার করে। সুবীরবাবু ও তাঁর চালকের মোবাইল ফোনের হদিশ নেই। সুবীর চাকির দেহ পাওয়া গিয়েছে বাড়ির এক তলায়। দোতলায় পড়ে ছিল গাড়ি চালকের দেহ। দুজনেরই দেহ ক্ষতবিক্ষত ছিল। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ মনে করছে, সম্পত্তিগত কারণ অর্থাত্ ওই বাড়িটি বিক্রি নিয়েই কোনও বিবাদের জেরে এই খুন! তবে এখনও তাতে নিশ্চিত নয় পুলিশও।