করোনার চিকিৎসা সরঞ্জামে ‘জিরো-জিএসটি’! দাবি জানিয়েও কানে তোলেনি কেন্দ্র, অভিযোগ অমিতের
তাঁর কোনও মতামতই শোনা হয়নি জিএসটি কাউন্সিলের (GST Council Meeting) বৈঠকে। অভিযোগ তুললেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অমিত মিত্র (Amit Mitra)।
কলকাতা: কোনও মতামতই শোনা হয়নি জিএসটি কাউন্সিলের (GST Council Meeting) বৈঠকে। অভিযোগ তুললেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অমিত মিত্র (Amit Mitra)। করোনা চিকিৎসায় জরুরি সামগ্রীর ওপর জিএসটি হার কমানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র, তা নিয়ে বারবার আপত্তি জানাতে চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, অতিমারির সময়ে করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত কোনও পণ্যের ওপরই জিএসটি রাখা উচিত নয়। কিন্তু সেকথা কাউন্সিলের বৈঠকে তাঁকে বলতে দেওয়ার সুযোগই দেওয়া হয়নি, অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রীর।
একই মত তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসুরও। তিনি বলেন, “আমাদের দেশে এক কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। ৩ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সেখানে দাঁড়িয়ে কোভিড সংক্রান্ত কোনও কিছুতেই ট্যাক্স নেওয়া যাবে না। আজকে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের ৪৪ তম জিএসটি কাউন্সিল করার পর জানিয়েছে, অ্যাম্বুলেন্সে, জীবনদায়ী ওষুধ, রেমডিসিভিরেও ট্যাক্স বহাল রাখছে। এটা একটা জনবিরোধী সরকার, জনবিরোধী নীতি।”
করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ-পণ্যে নতুন জিএসটির হার
♣ টসিলিজুম্যাব- আগে ছিল ৫ শতাংশ জিএসটি, এখন নেই ♣ হেপারিন- আগে ছিল ৫ শতাংশ জিএসটি, এখন নেই ♣ মেডিক্যাল গ্রেড অক্সিজেন- আগে ছিল ১২ শতাংশ, এখন ৫ শতাংশ ♣ অক্সিজেন কনসেনট্রেটর/ জেনেরেটর- আগে ছিল ১২ শতাংশ, এখন ৫ শতাংশ ♣ ভেন্টিলেটর- আগে ছিল ১২ শতাংশ, এখন ৫ শতাংশ ♣ বাইপ্যাপ মেশিন- আগে ছিল ১২ শতাংশ, এখন ৫ শতাংশ ♣ কোভিড পরীক্ষা কিট- আগে ছিল ১২ শতাংশ, এখন ৫ শতাংশ ♣ ডি ডাইমার-সহ গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা কিট- আগে ছিল ১২ শতাংশ, এখন ৫ শতাংশ ♣ পালস অক্সিমিটার- আগে ছিল ১২ শতাংশ, এখন ৫ শতাংশ ♣ হ্যান্ড স্যানিটাইজার- আগে ছিল ১৮ শতাংশ, এখন ৫ শতাংশ ♣ তাপমাত্রা পরীক্ষার যন্ত্র- আগে ছিল ১৮ শতাংশ, এখন ৫ শতাংশ ♣ অ্যাম্বুলেন্স- আগে ছিল ২৮ শতাংশ জিএসটি, এখন ১২ শতাংশ ♣ শেষকৃত্যে ব্যবহৃত সরঞ্জাম- আগে ছিল ১৮ শতাংশ, এখন ৫ শতাংশ
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ( Black Fungus) ওষুধ অ্যাম্ফোটারসিন বি থেকে কর তুলে নিয়েছে কেন্দ্র। নতুন এই নিয়ম অত্যন্ত দ্রুত কার্যকরী হবে। তার জন্য একদিনের মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি বলে জানিয়েছে জিএসটি কাউন্সিল। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই নিয়ম জারি থাকবে। পরবর্তীকালে মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে বলেও জানা গিয়েছে।
আর এতেই আপত্তি বাংলার। অমিত মিত্র প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিলেন, করোনায় ব্যবহৃত সরঞ্জামের ওপর জিএসটি তুলে নেওয়া হোক। কিন্তু তা কাউন্সিলের বৈঠকে তাঁকে জানানোর সুযোগই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে বাংলার অর্থমন্ত্রীর কন্ঠরোধের দাবি সত্যি নয় বলে পাল্টা টুইট করেছেন অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর।
আরও পড়ুন: করমুক্ত ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধ, করোনার সামগ্রীতেও কমল বোঝা: জিএসটি কাউন্সিল
বরং তাঁর পাল্টা অভিযোগ, কোভিড সরঞ্জামে কর বসানো নিয়ে পাল্টা কাউন্সিল সদস্যদের মত জানতে চাওয়া হলে নীরবই ছিলেন অমিত। অনুরাগের ব্যাখ্যা, সম্ভবত অমিতের ইন্টারনেট কানেকশনের গণ্ডগোলের জেরেই ভার্চুয়াল বৈঠকে সমস্যা হয়। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনকে দু পাতা চিঠি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অমিত মিত্র।