‘মল মূত্র ত্যাগ করলে মানুষ দুর্বল হয় না’, বিতর্কিত টুইটে কাকে খোঁচা তথাগতর?

দলবদলুদের খোঁচা দিয়ে টুইট। ফের বিতর্কে জড়ালেন তথাগত রায় (Tathagata Roy)। প্রয়াত সিপিএম নেতার উক্তি মনে করিয়ে টুইট করেন দলবদলুদের উদ্দেশে।

'মল মূত্র ত্যাগ করলে মানুষ দুর্বল হয় না', বিতর্কিত টুইটে কাকে খোঁচা তথাগতর?
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 11, 2021 | 10:31 AM

কলকাতা: দলবদলুদের খোঁচা দিয়ে টুইট। ফের বিতর্কে জড়ালেন তথাগত রায় (Tathagata Roy)। প্রয়াত সিপিএম নেতার উক্তি মনে করিয়ে টুইট করেন দলবদলুদের উদ্দেশে। বিশ্লেষকদের কথায়, আদতে খোঁচা দিতে চেয়েছেন তিনি।

তথাগত রায় টুইটে লিখেছেন, “তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা যে সব নেতা আবার তৃণমূলে ফিরে গেছেন তাঁদের সম্বন্ধে আমি প্রয়াত সিপিএম নেতা হরেকৃষ্ণ কোঙারের একটি মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি করছি। ”মল মূত্র ত্যাগ করলে মানুষ দুর্বল হয় না, সবলই হয়”। ১৯৬৪ সালে যখন কম্যুনিস্ট পার্টি ভাঙে তখন সিপিআই নেতাদের সম্বন্ধে এই উক্তি।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা কেবলই ব্যাঙ্গ করে লিখেছেন তিনি। একুশের নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসেছিলেন অনেক নেতানেত্রীই। কিন্তু নির্বাচনে পদ্ম শিবিরের আশানুরূপ ফল না হওয়ায়, তাঁদের অনেকেই আজ ফের ঘাসফুলমুখী। তৃণমূলে যাওয়ার জন্য প্রকাশ্যেই খোলা চিঠিতে কিংবা ফেসবুক পোস্টে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তৃণমূলের দাবি অনুসারে, অনেক আবার আড়ালে যোগাযোগ করেছেন নেতৃত্বের সঙ্গে।

তবে ইদানীং হেভিওয়েট নেতাদের মধ্যে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee) একটি ফেসবুক পোস্ট নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। যে ৩৫৬ ধারাকে হাতিয়ার করে ঘুঁটি সাজাচ্ছে তাঁরই দল, তিনি সে মুহূর্তে তাল কেটেছেন! পোস্ট ভাইরাল হতেই দলের নানা নেতার তরফে তিরস্কার ধেয়ে এসেছে।

যেদিন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকে বাংলায় ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের যৌক্তিকতা প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন, ঠিক সে সময়ই কার্যত হেস্টিংসের দলীয় বৈঠকে অনুপস্থিত থেকে নিজের সামাজিক মাধ্যমে ‘৩৫৬ ধারা জুজু’ উদ্ধৃত পোস্ট করেন রাজীব।

রাজীব লিখেছিলেন, “মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভাল ভাবে নেবে না।” আর তা নিয়েই শুরু হয় রাজনৈতিক জল্পনা। রাজীব-সহকর্মী শুভেন্দু তাঁকে দলীয় কর্মীদের পাশে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। আর তৃণমূল নেতা ফিরহাদ ‘ছোট ভাই’ রাজীব প্রসঙ্গে স্নেহের সঙ্গে বলেছেন, ” দেরিতে হলেও যদি ওঁর বোধহয় হয় তবে সেটা ভাল লক্ষণ।”

দলবদলুদের দলে ফেরানো হবে কি না, সেই বিষয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি। তবে রাজীব-প্রসঙ্গ এখন বিস্তর জলঘোলা করছে। ফিরহাদ হাকিমের এহেন বক্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই টুইটারে নিজের মত পোষণ করেন তথাগত রায়। আর তা নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক।

তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, “বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতাদের কোনও কাজকর্ম নেই। এটি টুইট সর্বস্ব দলে পরিণত হয়েছে। তথাগত রায়কে শেষ পর্যন্ত হরেকৃষ্ণ কোঙারের উদ্ধৃতির পুনরাবৃত্তি করতে হল। অর্থাৎ এক সময়ের সিপিএমের ডাকসাইটের নেতার শরণাপন্ন হতে হল। যাঁদের উদ্দেশে এই শব্দগুলি ব্যবহার করেছেন, তাঁদেরকে তাঁরই দল চাটার্ড বিমানে করে দিল্লিতে নিয়ে গিয়েছিল! তাঁদেরকে নেওয়ার পরিণতি তো বিজেপি দেখল।”

আরও পড়ুন: গুরুগ্রামে রয়েছে হোটেল, কিন্তু তার আড়ালেই চলত ‘তথ্য পাচারের’ কাজ! আজ NIA-এর মুখোমুখি চিনা নাগরিক

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজীব প্রসঙ্গে উত্তাল রাজনীতি। ঠিক সেই প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়েই তথাগতর এই টুইট ঠিক কার উদ্দেশে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে অন্য গুঞ্জন।