কলকাতা: কলকাতা পুর এলাকায় ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু আরও একজনের। মৃতের নাম কল্পনা বক্সি (৬৭)। তিনি গড়িয়ার বাসিন্দা। হৃদরোগের উপসর্গ নিয়ে পঞ্চসায়রের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
চিকিত্সকরা ইকো করানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ইকো করানোর আগে রুটিন টেস্টে ডেঙ্গি ধরা পড়ে। গত শুক্রবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় কল্পনার। এক সপ্তাহে শহরের দুই প্রান্তে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে দুটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
পিয়ারলেস হাসপাতালের মৃত্যু হয় জেমস লং সরণীর বাসিন্দা অভিরূপ সাহার। সম্প্রতি বরানগরে মামারবাড়িতে গিয়েছিলেন যুবক। এরপরই জ্বর আসে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, যুবকের প্লেটলেট ৮-৯ হাজারে নেমে এসেছিল। অনেক চেষ্টা করেই তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। পূর্ত দফতরের আবাসনে থাকাকালীনই দফতরের কর্মীর ছেলের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল অভিরূপের । তাতেই মৃত্যু হয়েছে। করোনা আবহের মধ্যে বাড়ছে ডেঙ্গির আতঙ্ক।
জমা জলের বহর দেখে ডেঙ্গি আতঙ্কে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীরা। আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ-সহ হাসপাতাল চত্বরের সর্বত্র দু’দিন ধরে জল জমে রয়েছে। জমা জল ঠেলে জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন রোগীর পরিজনেরা। কোনও প্রত্যন্ত এলাকায় নয়। শহর কলকাতার নিকাশি ব্যবস্থার এই হাল দেখে শিউরে উঠছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীরা।
চিকিৎসকদের বক্তব্য, কোভিডের মধ্যে মাথাচাড়া দিচ্ছে ডেঙ্গি সংক্রমণ। ডেঙ্গির নতুন স্ট্রেন উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানে প্রাণঘাতী রূপ নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতাল চত্বরে জল জমে মশার বংশবৃদ্ধিরই পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।
চিকিৎসকসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্বেগ সম্পর্কে সহমত পোষণ করে বেসরকারি হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার সিমরদীপ গিল বলেছেন, হাসপাতাল থেকেই ডেঙ্গি ছড়ানোর পরিবেশ তৈরি হলে সেটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। দ্রুত জমা জল সরানোর পুরসভা, স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আর্জি জানিয়েছেন সিওও।
গত দুদিনের টানা বর্ষণে জল জমেছে শহরের একাধিক জায়গায়। টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, তারাতলা, ভবানীপুর, মিন্টো পার্ক, ক্যামাক স্ট্রিট জল থই থই। ঠনঠনিয়া, ক্য়ামাক স্ট্রিট, মিন্টো পার্ক, ঠনঠনিয়া, কলেজ স্ট্রিট, সেক্টর ফাইভ, চিনার পার্ক, কাঁকুড়গাছি, কৈখালি এলাকা জলমগ্ন। সোমবার কার্যত সারা দিনই পাম্প চালিয়ে জল গঙ্গায় ফেলা হয়েছে। গঙ্গায় জলের স্তর বাড়তে শুরু করেছে। শহরের নিকাশি নালার জল কীভাবে গঙ্গা দিয়ে বের করবে, তা নিয়ে রীতিমতো সংশয়ে কলকাতা পুর প্রশাসন।
শহরের চিত্র দেখেই ভয় পাচ্ছেন পুরকর্তারা। করোনা, অজানা জ্বর তো রয়েইছে, এরইমধ্যে ডেঙ্গির আতঙ্কও নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। ফলে চিন্তায় স্বাস্থ্য কর্তারাও।
আরও পড়ুন: Khardaha Death: ফের খড়দহ! ঘরের গেটে হাত দিতেই বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু প্রৌঢ়ের