Kunal Ghosh on Abhishek Banerjee: ‘ব্রাত্য-ইন্দ্রনীল জ্বলে মরছে’, অভিষেক মুখ খুলতেই পাল্টা সরব কুণাল
Kunal Ghosh on Abhishek Banerjee: এ দিন, কুণাল ঘোষ বলেন, "প্রতিবাদ ও নিন্দার অধিকার সকলের রয়েছে। কিন্তু প্রতিবাদের নামে আপত্তিকর কথা বলা কাম্য নয়।" তৃণমূল নেতা আরও বলেন, "কোনও শিল্পীর স্বাধীনতায় হাত পড়ছে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বোচ্চ নেত্রী। তিনি শেষ কথা বলবেন। আরজি করের সময় তাঁকে কুৎসা-চক্রান্ত ফেস করতে হয়েছে। উনি যা বলবেন মেনে নেব।"
কলকাতা: একদিকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, দলটির রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাহলে দলের মধ্যেই কি আড়াআড়ি বিভাজন? কারণ, কুণালের ‘শিল্পী বয়কট’ মন্তব্যকে খারিজ করতেই কার্যত দলেরই একাংশের চ্যালেঞ্জের মুখে তৃণমূল ‘সেনাপতি’। কুণালের পরিষ্কার জবাব, “দলনেত্রী বলুন, ভুল বলেছি।” অর্থাৎ শিল্পীদের একাংশকে বয়কটের সিদ্ধান্ত যে মোটেই ভুল নয় তা শুক্রবার আরও একবার বোঝালেন রাজ্যসভার প্রাক্তন এই সাংসদ। তবে শুধু কুণাল-কল্যাণ-ব্রাত্যদের মতো অভিজ্ঞ নেত্রীবৃন্দই নয়, একই সুর শোনা গিয়েছে তৃণমূলের তরুণতুর্কী, আইটি সেলের দায়িত্ব প্রাপ্ত তথা অভিষেক-ঘনিষ্ঠ দেবাংশু ভট্টাচার্যের গলাতেও।
প্রসঙ্গত, আরজি কর নিয়ে তৃণমূল ও মমতাকে কটূক্তি করা সেলেবদের জোড়াফুলের যে কোনও রকম মঞ্চ থেকে দূরে রাখআর নিদান দিয়েছিলেন কুণাল। এরপরই অভিষেক স্পষ্ট করে দেন, তিনি এই মতামতের বিপক্ষে। এরপর এ দিন, কুণাল ঘোষ বলেন, “প্রতিবাদ ও নিন্দার অধিকার সকলের রয়েছে। কিন্তু প্রতিবাদের নামে আপত্তিকর কথা বলা কাম্য নয়।” তৃণমূল নেতা আরও বলেন, “কোনও শিল্পীর স্বাধীনতায় হাত পড়ছে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বোচ্চ নেত্রী। তিনি শেষ কথা বলবেন। আরজি করের সময় তিনি কুৎসা-চক্রান্তের শিকার হয়েছেন। উনি যা বলবেন মেনে নেব। আমি দলের সৈনিক হিসাবে বলছি, যাঁরা এই নোংরা কথা বলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা তাঁদের অনুষ্ঠানে ডাকতে পারেন না। এটা দলের একাধিক গ্রুপে পোস্ট করা হয়েছে। এই সার্কুলার আমি দেখেছি। উত্তর কলকাতার যুবদের গ্রুপেও এই সার্কুলার আছে। ব্রাত্য বসুকেও জিজ্ঞাসা করতে পারেন। ইন্দ্রনীল সেনকে জিজ্ঞাসা করুন। আরে তাঁরা সবাই জ্বলে মরছে। এটা প্রতিবাদের নামে অসভ্যতা। কোথাও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।” কুণালের বলেছেন, “যেহেতু আরজি করের সময় উনি (অভিষেক) বাইরে ছিলেন। গোটা বিষয়টির মধ্যে ছিলেন না। এই কুৎসা-চক্রান্ত যাঁরা আমরা সামলেছি আমাদের জিজ্ঞাসা করুন। আমরা বলে দেব।”
অন্যদিকে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দিদির সম্বন্ধে যাঁরা বাজেবাজে কথা বলেছেন, তাঁরা আমার সংসদীয় ক্ষেত্রে এলে আমি নিজেই স্লোগান তুলব। ওদেরই শুধু অধিকার আছে? ওরা তো শুধু দিদি নয়, যাঁরা ওদের সঙ্গে হাঁটেননি তাঁদের সম্বন্ধেও বলেছে। এতদিন জানতাম, কাক কাকের মাংস খায় না। এখন দেখি এরা তাও খায়।” ব্রাত্য বসুর কথাও এক। তিনি বলেন, “যাঁরা দিনের পর দিন সরকারের নামে বলল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে বলল, এখন সরকারি শো তাঁরা করবেন কি করবেন না, তাঁদের অবস্থানই বা কী তা জানতে হবে? ওই সময় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এর মানে কি পুরস্কারের সঙ্গে অর্থমূল্য ফিরিয়ে দিয়েছেন? একজনকে অন্তত পাসবই খুলে দেখাতে বলুন। পুরস্কার ফিরিয়েছেন তাঁর প্রমাণ দেখান।”
কী নিয়ে বিভাজন?
সম্প্রতি, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ একাংশ কলা-কুশলীদের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছিলেন, দু’মাস আগে যাঁরা আরজি কর নিয়ে বিপ্লব করে এসেছেন, তৃণমূলের অনুষ্ঠানে নাচ-গান যেন না করেন। সেই কথা খণ্ডন করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কোথায় কাকে নিয়ে গান গাওয়াবে, কখন গাওয়াবে, কে গান গাইবে আমি জোর করে কারও মাথায় চাপাতে চাই না। আমি কোথা দিয়ে হাঁটব-চলব এটা আমার সিদ্ধান্ত। স্বাধীনতা সকলের আছে। উনি বলতে পারেন। পার্টির তরফে কেউ বলেছে? কোনও নোটিস দেখেছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা আমি জেনারেল সেক্রেটারি কিছু বলেছি?” এর প্রেক্ষিতেই আবারও মন্তব্য করেন কুণাল ঘোষ।