কলকাতা: দিলীপ ঘোষ। বঙ্গ রাজনীতির এক বর্ণময় চরিত্র। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে দু’বার ভাবেন দিলীপের ঘোর বিরোধীরাও। দিলীপের ইউএসপি তাঁর মেঠো রাজনীতি। মাঠে ময়দানে পড়ে থেকে রাজনীতি করেন। জনসংযোগ করেন। মানুষের পালস বোঝেন। বঙ্গ রাজনীতির হেভিওয়েট দিলীপ ঘোষ এবার পরাস্ত হয়েছেন লোকসভা ভোটে। এক লাখেরও বেশি ভোটে হেরেছেন তৃণমূলের কীর্তি আজাদের কাছে। কিন্তু কেন ইন্দ্রপতন? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে কাটাছেঁড়া শুরু হয়ে গিয়েছে।
দিলীপ ঘোষ বিজেপির রাজ্য সভাপতি থাকাকালীন গোটা বাংলা চষে বেড়ালেও, মেদিনীপুর তাঁর শক্ত ঘাঁটি। উনিশের লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর থেকেই জিতে সাংসদ হয়েছিলেন তিনি। তার আগে পশ্চিম মেদিনীপুরেরই খড়্গপুর সদর থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও যথেষ্ট। কিন্তু এবারের লোকসভা নির্বাচনে দিলীপের আসন বদল হয়েছে। জেতা মেদিনীপুর লোকসভা আসন ছেড়ে, তাঁকে লড়াইয়ে নামতে হয়েছিল বর্ধমান-দুর্গাপুরে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, এই আসন বদল দিলীপের হারের অন্যতম কারণ হতে পারে।
যদিও অপর একটি ব্যাখ্যাও রয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে মেদিনীপুরে দিলীপের বিরুদ্ধে কুড়মি সমাজের একাংশের ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। গত বছরে দিলীপ ঘোষের খড়্গপুরের বাড়ির বাইরের ফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকে তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন কুড়মি সমাজের বিক্ষুব্ধরা। যদিও দিলীপ তখন বাড়িতে ছিলেন না। তিনি ছিলেন দিল্লিতে। সেখান থেকেই কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে সব ক’টা নেতার কাপড় খুলে দেব। দিলীপ ঘোষের পিছনে যেন লাগতে না আসে।’ এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে কুড়মিদের বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে দিলীপের বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক কারবারিদের একাংশের ব্যাখ্যা, এটিও একটি অন্যতম কারণ হতে পারে মেদিনীপুরের জেতা আসন থেকে সরিয়ে দিলীপকে বর্ধমান-দুর্গাপুরে নিয়ে আসার।