হুইপ উপেক্ষা করে বিধানসভায় গরহাজির তৃণমূলের ‘অনুগত’ ও ‘বেসুরো’ বিধায়করা

তৃণমূল নির্দেশ দিয়েছিল, দু'দিনই হাজির থাকতে হবে সব বিধায়ককে। হুইপ জারি করে টেক্সট মেসেজও করা হয়েছিল প্রত্যেককে। অথচ দলের হুইপে সাড়া দিলেন না হাফ ডজনের বেশি বিধায়ক।

হুইপ উপেক্ষা করে বিধানসভায় গরহাজির তৃণমূলের 'অনুগত' ও 'বেসুরো' বিধায়করা
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jan 27, 2021 | 10:13 PM

কলকাতা: বিধানসভায় (Assembly) তৃণমূলের (TMC) হুইপ সত্ত্বেও গরহাজির রইলেন একাধিক বিধায়ক। অধিবেশনে যোগ দিলেন না অনেকেই। যা ফের একবার শাসকদলের অন্দরে সুর-তাল-লয়ে সমস্যার জল্পনা উস্কে দিয়েছে।

বুধবার থেকে শুরু হয়েছে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন। অধিবেশন চলবে দু’দিন। তৃণমূল নির্দেশ দিয়েছিল, দু’দিনই হাজির থাকতে হবে সব বিধায়ককে। হুইপ জারি করে টেক্সট মেসেজও করা হয়েছিল প্রত্যেককে। অথচ দলের হুইপে সাড়া দিলেন না হাফ ডজনের বেশি বিধায়ক। দলের নির্দেশ রীতিমতো উপেক্ষা করে গেলেন তাঁরা। এদের মধ্যে কিছু নাম অবশ্য ‘বেসুরোদের’ তালিকায়। তবে দলের ‘অনুগত’ বহু বিধায়ককেও এদিন অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায়।

খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এদিনের অধিবেশনে গরহাজির ছিলেন। তিনি অবশ্য নিজের বিধানসভা কেন্দ্র হাবড়ায় দলীয় কর্মসূচিতেই ব্যস্ত ছিলেন বলে জানা যায়। পুরুলিয়া মানবাজারের বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডুও আসেননি। তিনিও নিজের জেলাতেই কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত। সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়কেও দেখা যায়নি। তিনি অবশ্য অসুস্থ সেই সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সকলেই। আসেননি চৌরঙ্গির বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনিও অসুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

সূত্রের খবর, বিধানসভা ভবনে আসার জন্য রওনা দিয়েছিলেন ইংরেজবাজারের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ। কিন্তু মাঝপথেই জানতে পারেন, তাঁর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বাড়ি ফিরে যান তিনি। বৃহস্পতিবারও অধিবেশনে যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক, জানিয়েছেন পরিষদীয় মন্ত্ৰী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

অনুপস্থিতির তালিকা দীর্ঘ করেছেন মন্ত্রিত্বত্যাগী ডোমজুড়ের বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কোর কমিটি থেকে ইস্তফা দেওয়া উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষালও আসেননি। রাজনীতি থেকে সাময়িক অবসর নেওয়া তথা মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়া লক্ষ্মীরতন শুক্লাও আসেননি বিধানসভায়। অনুপস্থিত ছিলেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়াও।

উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ। তাঁর সফরে বেশ কয়েকজন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা চলছে রাজনৈতিক মহলে। শুক্রবারই আবার দলের জনপ্রতিনিধিদের বৈঠক ডেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে বিধানসভায় অনুপস্থিতি ঘিরে বুধবার দিনভর জল্পনার জাল বুনল তৃণমূল শিবির।

আরও পড়ুন: কনস্টেবল নিয়োগে স্থগিতাদেশ, আগামিকাল মিলছে না নিয়োগপত্র

ইদানীংকালে বিজেপির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাং-কংগ্রেসকেও একাধিকবার শাসকদলের বিরুদ্ধে আস্থাভোট করানোর দাবি তুলেছে। খাতায়-কলমে আসনের অঙ্কে তৃণমূল যতই ‘সেফ জ়োনে’ থাকুক না কেন, বিরোধীদের একটা বড় অংশের দাবি, আস্থাভোট করা হলেই অন্য ছবি দেখতে পাওয়া যাবে। সে ধরনের কোনও পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি ঠিকই। তবে দলের নির্দেশে এড়িয়ে যাওয়ার এই প্রবণতা মোটেই ইতিবাচক বলে মনে করছেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন: ‘আমি করোনার উৎস’, দুই মেয়ের মাথা থেঁতলে খুন গোল্ড মেডালিস্টের