সুব্রত বক্সির সঙ্গে ‘সৌজন্য’ বিনিময়, তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের ঘরে মুকুল! জল্পনা বাড়িয়ে বললেন ‘যা বলার দু’ একদিন পরই বলব’

লোকসভা ভোটে বাংলায় গেরুয়া ঝড়ের অন্যতম কাণ্ডারী হিসাবে মুকুল রায়কে (Mukul Roy) মেনে নিয়েছিলেন দলের অন্দরেরই কেউ কেউ। কিন্তু বিধানসভা ভোটে সুদূর কৃষ্ণনগরে তাঁকে পড়ে থাকতে হয়েছে।

সুব্রত বক্সির সঙ্গে 'সৌজন্য' বিনিময়, তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের ঘরে মুকুল! জল্পনা বাড়িয়ে বললেন 'যা বলার দু' একদিন পরই বলব'
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Updated on: May 07, 2021 | 3:53 PM

কলকাতা: দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিধানসভা ভোটে এই প্রথমবার জিতেছেন মুকুল রায়। স্বভাবতই এই জয়ের বহিঃপ্রকাশও একটু আলাদাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুক্রবার বিধানসভা ভবনে শপথ নিতে এসে একেবারে অন্য ভাবে দেখা গেল মুকুলকে। বিধায়ক পদে শপথ নেওয়ার দিনই অর্থপূর্ণ নীরবতায় নতুন করে উস্কে দিলেন জল্পনা। বিধানসভায় পা রেখেই তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের ঘরে প্রবেশ, তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির সঙ্গে সাক্ষাৎ, বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠকে না থাকা —শুক্রবারের ঘটনাক্রম ঘিরে নতুন করে শুরু হয়েছে জল্পনা।

বিধানসভায় প্রথম দিন গিয়ে মেরে কেটে ১০ মিনিট ছিলেন মুকুল রায়। এর মধ্যে বিধায়ক হিসাবে শপথ নিয়েছেন, প্রয়োজনীয় সাক্ষর সেরেছেন। আবার গিয়েছেন তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের ঘরেও। মুখোমুখি হওয়ায় কথা বলেছেন সুব্রত বক্সির সঙ্গে। গত দেড় মাস ধরে বাংলায় যে নির্বাচনী পর্ব চলল তাতে কার্যত নীরবই থাকতে দেখা গিয়েছে মুকুল রায়কে। কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে বিজেপির এই প্রার্থীর এমন আচরণে বেশ কিছুদিন ধরেই নানা জল্পনা ফুটে উঠছিল। নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন মুকুল রায়কে। বলেছিলেন, শুভেন্দুর মত মুকুল এত খারাপ নয়। স্বভাবতই দুইয়ে দুইয়ে চার করছিলেন কেউ কেউ। বিজেপিতে যোগ দিলেও আদি বঙ্গ বিজেপি নেতাদের সঙ্গে তাঁর ‘সখ্যতা’ নিয়েও নানা প্রশ্ন ওঠে।

আরও পড়ুন: মানবতাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম, এই অতিমারিতেও লাগাতার সংক্রমিত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সে পাঠই পড়াচ্ছেন ‘পদ্মশ্রী’ করিমুল

এসবের মধ্যেই এদিন বিধানসভা ভবনে দাঁড়িয়ে মুকুল রায়কে বলতে শোনা যায়, ‘দু’ একদিনের মধ্যে যা বলার বলব।’ এমনকী বিধানসভায় তাঁর এই নীরবতা নিয়ে মুকুল বলেন, ‘মানুষের জীবনে কখনও কখনও এমন দিন আসে।’ এদিন তাঁর প্রতিটি কথার ভাঁজেই ধরা পড়ে নানা জল্পনা। শুধু তাই নয়, এদিন আড়াইটে নাগাদ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ৭৭ জন বিধায়কের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু মুকুল রায়কে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, শরীরী ভাষায় বুঝিয়ে দেন তিনি কিছুই জানেন না। অথচ বিজেপির পরিদীয় দলের তরফে ৭৭ জনকেই এসএমএস করা হয়েছে এই বৈঠকের জন্য। অর্থাৎ এই বৈঠকও কার্যত এড়িয়েই গেলেন মুকুল।

লোকসভা ভোটে বাংলায় গেরুয়া ঝড়ের অন্যতম কাণ্ডারী হিসাবে মুকুল রায়কে মেনে নিয়েছিলেন দলের অন্দরেরই কেউ কেউ। কিন্তু বিধানসভা ভোটে সুদূর কৃষ্ণনগরে তাঁকে পড়ে থাকতে হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, ‘আটকে’ দেওয়া হল মুকুলকে। অন্যদিকে তৃণমূলে থাকাকালীন তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু রায় বীজপুর বিধানসভা কেন্দ্র ধরে রাখতে সমর্থ হলেও বিজেপির প্রার্থী হিসাবে হেরে যান। ছেলের হারের ক্ষত কিছুটা হলেও বাবাকেও বিঁধেছে। একুশের এত বড় নির্বাচনী কর্মসূচি। কোথাও ছিলেন না মুকুল রায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বোঝা যাচ্ছিল সুর কাটছে। তবে সত্যিই সে সুর ‘বেসুর’ হয়ে গেল না কি না তা এখনই স্পষ্ট নয়।