SSKM: ৪৮ ঘণ্টা ধরে ইঞ্জেকশনের অপেক্ষায়, SSKM-এ ভোগান্তির শিকার বিরল রোগে আক্রান্ত দুই শিশু
SSKM Hospital: হাসপাতালেই পড়ে থাকতে হচ্ছে ইমরান, অদ্রিজাদের। আর হাসপাতালের বাইরে খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাতে হচ্ছে পরিবারের লোকদের।
কলকাতা: এসএসকেএমে (SSKM Hospital) ফের ভোগান্তির শিকার বিরল রোগে আক্রান্ত দুই শিশু। ৬ বছরের ইমরান ঘোসি এমপিএস টাইপ ওয়ান রোগে আক্রান্ত। বাড়ি মেদিনীপুরে। প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিনে ইঞ্জেকশন নিতে হয়। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা ধরে ইঞ্জেকশনের অপেক্ষায় পড়ে রয়েছে ইমরান। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ছোট্ট অর্দ্রিজা মুদিও। বাড়ি কুলটিতে। প্রতি মাসে দুইবার ইঞ্জেকশন নিতে আসতে হয় তাঁকেও। অদ্রিজাও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৪৮ ঘণ্টা ধরে। কিন্তু ইঞ্জেকশন জোটেনি তাঁরও। অভিযোগ উঠছে, হাসপাতালে ইঞ্জেকশন রয়েছে, কিন্তু ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য কেউ নেই। অতঃপর হাসপাতালেই পড়ে থাকতে হচ্ছে ইমরান, অদ্রিজাদের। আর হাসপাতালের বাইরে খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাতে হচ্ছে পরিবারের লোকদের। এই হয়রানি নিয়ে ডিরেক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে পরিবারের তরফে।
ইমরানের বাবা ইন্তাজ ঘোসি পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। ছেলেকে ইঞ্জেকশন দিতে নিয়ে এসে, এভাবে হয়রানির শিকার হওয়ায় তাঁর চাষবাসের ক্ষতি হচ্ছে। সংসারে অর্থসংকট তৈরি হচ্ছে। এমন অবস্থায় এই ইঞ্জেকশন যাতে তাঁর নিজের জেলায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, সেই আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
আর অদ্রিজার তো একটি ইঞ্জেকশন নিতে গিয়ে তিনদিন সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। অদ্রিজার বাবার অভিযোগ, মেয়েকে ইঞ্জেকশন দেওয়ানোর জন্য কুলটি থেকে ভোর ৫টার সময় বেরোতে হয়, যাতে হাসপাতালে সকাল ১০টার মধ্যে ঢুকতে পারে। কিন্তু সময়ে পৌঁছে গেলেও হাসপাতালে ইঞ্জেকশন এসে পৌঁছাচ্ছে দুপুর ৩টের সময়। কিন্তু সেদিন আর ইঞ্জেকশন দেওয়া হচ্ছে না। ইঞ্জেকশন দেওয়া হচ্ছে পরের দিন বিকেল ৫টায়। তারপর সেইদিনও হাসপাতালে রেখে তারও পরের দিন ছাড়া হচ্ছে হাসপাতাল থেকে। ফলে একটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য তিনদিন পেরিয়ে যাচ্ছে। মাসে দুই বার ইঞ্জেকশন দিতে গিয়ে, ছয় দিন এভাবে নষ্ট হচ্ছে। বিঘ্ন ঘটছে অদ্রিজার পড়াশোনাতেও। অদ্রিজার বাবা জয়ন্ত মুদি তাই ডিরেক্টরকে অনুরোধ জানিয়েছেন যাতে একই দিনে গোটা ব্যবস্থা করা যায়। অন্যথায় যাতে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ইঞ্জেকশন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
যদিও এই বিষয়ে এসএসকেএমের এক শীর্ষ কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “জিনগত রোগের এই ওষুধ দেওয়ার জন্য প্রথম দিন রক্তপরীক্ষা করে পরের দিন ওষুধ দেওয়া হয়। এরপর একদিন পর্যবেক্ষণে রেখে রোগীকে ছাড়া হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞান মেনেই বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। সপ্তাহে তিনদিন হাসপাতালে থাকার জন্য শিশুদের স্কুলের ক্ষতি হচ্ছে মানছি। কিন্তু চিকিৎসা পদ্ধতি মেনে তো চলতে হবে।”