কলকাতা : দুটি পৃথক জেলে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। দেখা-সাক্ষাৎ নেই প্রায় ৮ মাস। কিন্তু, গত মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে শুনানিতে দুজনের যে ‘ভার্চুয়াল’ আলাপচারিতা আর চোখের ইশারায় কথোপকথন দেখা গিয়েছে, তাতে বুঝতে অসুবিধা হয় না, তাঁরা মুখে যাই বলুন না কেন বন্ধুত্ব আজও অটুট। বৃহস্পতিবার ফের ছিল নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার শুনানি। এদিন সশরীরে আদালতে হাজির হন পার্থ। পরনে সবুজ পাঞ্জাবি। সংবাদমাধ্যমের বুমের ভিড় ঠেলেই আদালত কক্ষে প্রবেশ করেন তিনি। আর বেরনোর সময় অর্পিতাকে নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে। আগের দিন গুগল মিটে যাঁর সঙ্গে চোখে চোখে কথা বললেন, তাঁর নাম শুনেই এদিন চটে গেলেন তিনি।
‘আপনি বলেছিলেন অর্পিতাকে আপনি চিনতেন না। আবার কোর্টে অর্পিতার সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেল আপনাকে?’ এই প্রশ্ন শুনেই পার্থর উত্তর, ‘ধুরমশাই’। বিষয়টাতে যে তিনি বিরক্ত সেটা বুঝিয়ে দিয়ে চয়ে যান তিনি।এদিন নিয়োগ মামলার শুনানিতে আদালতে একাধিক অভিযুক্ত উপস্থিত থাকলেও এই মামলায় অর্পিতা যুক্ত না হওয়ায় ডাক পড়েনি তাঁর। কেউ কেউ বলছেন, আগের দিন ভার্চুয়াল শুনানিতে পার্থর যে রকম ফুরফুরে মেজাজ দেখা গিয়েছিল, এদিন নাকি তা দেখা যায়নি। অনেকটাই গম্ভীর আর চুপচাপ ছিলেন তিনি।
একসময়ের ওজনদার মন্ত্রী, শাসক দলের প্রথম সারির নেতা পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। তিনি ধরা পড়ার পর শুধু তাঁর দুর্নীতির বিষয়টিই সামনে আসেনি, শিরোনামে উঠে এসেছিল তাঁর বান্ধবীর নামও। সেই বান্ধবী অর্থাৎ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাট থেকে যে নগদ টাকার পাহাড় উদ্ধার হয়েছিল, তাতে কার্যত অবাক হয়েছিল বাংলার মানুষ। কোটি কোটি টাকা কি পার্থর? সেই প্রশ্নের সুদত্তর পাওয়ার আগেই পার্থ বলেছিলেন, তিনি নাকি অর্পিতাকে তেমনভাবে চেনেনই না। নাকতলার পুজোয় শুধুমাত্র দেখেছেন তাঁকে। আবার অর্পিতা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, টাকা তাঁর নয়। মঙ্গলবারের শুনানির পর নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, যাঁকে ‘চেনেন না’, তাঁর সঙ্গে এত ঘনিষ্ঠতা?