সময় চেয়েছেন মুকুল, শুভেন্দু জানিয়ে দিলেন আগামী সপ্তাহেই হাইকোর্টে যাচ্ছে বিজেপি

Suvendu Adhikari: মুকুল রায়ের বেসামাল বক্তব্য নিয়েও এদিন সরব হন শুভেন্দু অধিকারী।

সময় চেয়েছেন মুকুল, শুভেন্দু জানিয়ে দিলেন আগামী সপ্তাহেই হাইকোর্টে যাচ্ছে বিজেপি
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 17, 2021 | 3:26 PM

কলকাতা: বাংলায় দলত্যাগ বিরোধী আইন বলবৎ করার আর্জি নিয়ে আগামী সপ্তাহেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারীরা। বিষয়টি মঙ্গলবারই স্পষ্ট করে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে বিধানসভায় একটি চিঠি পাঠান কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়। সেখানে তিনি জানান, দলত্যাগ নিয়ে যে প্রশ্নের মুখে তাঁকে পড়তে হচ্ছে, এক মাস পর তা নিয়ে জবাব দেবেন তিনি। এরপরই মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বলেন, আগামী সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টে যাচ্ছেন তাঁরা।

এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “দলত্যাগ বিরোধী আইন নিয়ে সংবিধানে নির্দিষ্ট ধারা রয়েছে। যেখানে খুব স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে, সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে এর সমাধান করতে হবে। আমরা আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টে যাচ্ছি। বিরোধী দলনেতা হিসাবে আমি যাচ্ছি। গত ১০ বছরে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বর্তমান অধ্যক্ষের সময়কালে এই আইন কার্যকর করা হয়নি। গাজলের বিধায়ককে নিয়ে ২৩ বার শুনানি করেও তা সম্পূর্ণ হয়নি। এই নিয়ে আমাদের সবরকম অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই এবার আমরা আদালতেরই দ্বারস্থ হতে চলেছি। দ্রুত দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করা অথবা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অধ্যক্ষের নিষ্পত্তি ফলাফল ঘোষণা করাকে সামনে রেখেই আমরা আদালতের কাছে আর্জি জানাব।”

যদিও এ প্রসঙ্গে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আদালতের দরজা সবার জন্য খোলা রয়েছে। যে কেউ আদালতে যেতে পারেন। আমি নিয়ম মেনে এগোচ্ছি। চেয়ারের পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য যা করার করব। আমাকে তো সবাইকে ন্যাচারাল জাস্টিস দিতে হবে।” উল্লেখ্য, গত ১১ জুন তৃণমূলে যোগ দেন বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়। এরপরই তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে বিধানসভার অধ্যক্ষকে চিঠি দেন শুভেন্দু অধিকারী। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৬৪ পাতার একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে শুরু হয় শুনানি পর্বও। ইতিমধ্যেই এই আবেদনকে সামনে রেখে দু’বার শুনানিও হয়েছে।

শুনানিতে মুকুল রায়কে জবাব দেওয়ার জন্য সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। বলা হয়, ১৭ অগস্টের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব দিতে হবে। প্রয়োজনে অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়ে এই জবাব দিতে পারেন মুকুল। চাইলে সশরীরে হাজির হতে পারেন বিধানসভাতেও। যদিও মঙ্গলবার ১৭ অগস্টের আগেই মুকুল রায় অধ্যক্ষকে জানান, এই জবাব দেওয়ার জন্য তাঁর এক মাস সময় প্রয়োজন। কারণ দেখান, এখন তিনি অসুস্থ।

এরপরই মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে শুভেন্দু আদালতে যাওয়ার বিষয়টি জানান। শুভেন্দু বলেন, মুকুল রায়ের আবেদনপত্রেও ত্রুটি রয়েছে। আবেদনে বয়স, তারিখের উল্লেখ নেই। এ নিয়েও অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আবেদনে ত্রুটি থাকলে অর্ডার কীভাবে পাস করলাম! আবেদন খতিয়ে দেখে অর্ডার পাস করেছি। ওদের যদি আমার উপর ভরসা না থাকে, তা হলে আদালতে যেতে পারতেন। আমার কাছে এলেন কেন?”

অন্যদিকে এদিন মুকুল রায়ের বেসামাল বক্তব্য নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মুকুল রায় কেন নিজেকে এখনও বিজেপি নেতা দাবি করছেন, বিজেপির হয়ে ভোটে লড়াই করার কথা বলছেন তার জবাব দিতে পারবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উনি তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারপার্সন। ওই কোম্পানির যিনি মালকিন, তিনি তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্রকে নিয়ে ব্যাপক প্রচার করে মুকুল রায়কে অঙ্গবস্ত্র পরিয়ে যোগদান করিয়েছিলেন। দু’দিন পর আবার মুকুল রায় নিজে আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিজেপি নেতা গঙ্গাপ্রসাদ শর্মাকে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা দিয়ে তৃণমূলে যোগদান করিয়েছিলেন। মুকুল রায়কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফরেও দেখা গিয়েছে। কেন মুকুল রায় বলছেন যে উনি বিজেপি থেকে দাঁড়ালেই জিতবেন তার জবাবও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দিতে পারবেন।” আরও পড়ুন: ‘এক মাস সময় চাই’, শিশিরের পথে হেঁটেই এবার চিঠি দিলেন মুকুল