কলকাতা: কয়েকদিন আগেই লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশ হয়েছে। রাজ্যের ৪২টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৯টি আসনে জিতেছে তৃণমূল। আর ১২টি লোকসভা আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। কিন্তু, তৃণমূলের জেতা একাধিক আসনে কারচুপির অভিযোগে সরব হলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানিয়ে দিলেন, চার লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থীরা কলকাতা হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দাখিল করবেন। ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী আগামী মঙ্গল কিংবা বুধবার ডায়মন্ড হারবার, বসিরহাট, জয়নগর এবং ঘাটাল, এই চার লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীরা ইলেকশন পিটিশন দাখিল করবেন।
বুধবার সাংবাদিক বৈঠক ছাপ্পা ভোটের প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু। তাঁর অভিযোগ, “এবারের লোকসভা ভোটে প্রায় ২০-২৫ লক্ষ ছাপ্পা ভোট পড়েছে। শুধু ডায়মন্ড হারবারে ছাপ্পা দেওয়া হয়েছে ১০ লক্ষের বেশি ভোট। ঘাটাল লোকসভার কেশপুরে দেড় লক্ষের বেশি ছাপ্পা ভোট পড়েছে। কমপক্ষে ২০-২৫ লক্ষ লোককে ভোট দিতে যেতে দেওয়া হয়নি।” এরপরই কলকাতা হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দাখিল করার কথা জানান তিনি।
শুভেন্দু বলেন, “ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় ইলেকশন পিটিশন দাখিল করবেন। কেশপুর ও সবংয়ের প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করেছেন। আর সিসিটিভি ও ওয়েব কাস্টিংয়ের ফুটেজ সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবে পরীক্ষার আবেদন জানাবেন ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ দাস ওরফে ববি। সেই পরীক্ষা পক্ষে এলে ডায়মন্ড হারবারের ভোট প্রক্রিয়া বাতিল ও সিবিআই তদন্তের আবেদন জানানো হবে। ইলেকশন পিটিশন দাখিল করবেন জয়নগরের বিজেপি প্রার্থী অশোক কান্ডারী।” আবার বসিরহাটের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামের প্রার্থীপদ বাতিলের আবেদন জানানো হবে। তৃণমূল প্রার্থী নিয়ম মেনে বকেয়া শংসাপত্র মনোনয়নের সঙ্গে দেননি বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগ তাঁর মনোনয়নের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দাখিল করবেন বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র।
তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, “তৃণমূল শুনে রাখুক, এই ইলেকশন পিটিশন চার-পাঁচ বছর ধরে ঝুলে থাকবে না। ৬ মাসের মধ্যে যাতে এর নিষ্পত্তি হয়, সেই ব্যবস্থা করছি।”
একইসঙ্গে তিনি জানান, কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের গণনা নিয়েও অভিযোগ উঠছে। তিনি শনিবার কোচবিহার যাচ্ছেন। শুভেন্দু জানান, শনিবারের পর কোচবিহার নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, “কোচবিহারে ১৮ রাউন্ড পর্যন্ত আমাদের প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক এগিয়ে ছিলেন। ১৯-২০ রাউন্ডে তাঁকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইভিএম নম্বরের সঙ্গে প্রিসাইডিং অফিসারের ১৭সি ফর্মের নম্বর মেলেনি ১৯-২০ রাউন্ডে। এর জন্য যাঁরা প্রতিবাদ করেন, সেই এজেন্টদের পুলিশ গ্রেফতার করে।”
বিজেপির ফল আরও ভাল হওয়ার জায়গা ছিল বলে মনে করেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, “এই ১২টা ২১ হলে বিজেপি কর্মীরা উজ্জীবিত হত। সেই সুযোগ ছিল। বাঁকুড়া, কোচবিহার-সহ একাধিক কেন্দ্রে ২ শতাংশের হেরফের রয়েছে।”