Weather: গরমে পুড়ছে গুজরাট-মহারাষ্ট্র, বৃষ্টিভেজা মার্চে ‘ঠান্ডা’র রেকর্ড বাংলা-ওড়িশায়

Weather: এ বার পুবের তল্লাটে তাকানো যাক। মঙ্গলবার রাত থেকেই টানা বৃষ্টি। বুধবার গোটা দিনে রোদ ওঠেনি। ফলে তাপমাত্রাও বাড়ার সুযোগ পায়নি। ফলে চৈত্রে তৈরি হয়েছে একের পর এক রেকর্ড। গরমের নয়, শীতলতম দিনের রেকর্ড!

Weather: গরমে পুড়ছে গুজরাট-মহারাষ্ট্র, বৃষ্টিভেজা মার্চে ‘ঠান্ডা’র রেকর্ড বাংলা-ওড়িশায়
দুই রাজ্যের ভিন্ন ছবিImage Credit source: Facebook
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 21, 2024 | 6:35 AM

কলকাতা: বৈচিত্রে ভরা আবহাওয়া! পূর্ব-পশ্চিমে বিরাট পার্থক্য। ভরা বসন্তে বৃষ্টিভেজা ঠান্ডায় ‘কাঁপছে’ বাংলা-ওড়িশা। মার্চের রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়ে ফেলেছে কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বর। অথচ একই সময়ে চাঁদিফাটা গরমে পুড়ছে মহারাষ্ট্র-গুজরাট। তাপপ্রবাহ না হলেও, তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি। বুধবার দেশের উষ্ণতম স্থান ছিল মোদী-রাজ্যের রাজকোট। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বুধবারই চলতি মরশুমের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রার সাক্ষী মুম্বই। সান্তাক্রুজের তাপমাত্রা উঠেছে ৩৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ ডিগ্রি বেশি।

এ বার পুবের তল্লাটে তাকানো যাক। মঙ্গলবার রাত থেকেই টানা বৃষ্টি। বুধবার গোটা দিনে রোদ ওঠেনি। ফলে তাপমাত্রাও বাড়ার সুযোগ পায়নি। ফলে চৈত্রে তৈরি হয়েছে একের পর এক রেকর্ড। গরমের নয়, শীতলতম দিনের রেকর্ড!

এই যেমন কলকাতা। বুধবার আলিপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২১.১ ডিগ্রির উপরে আর ওঠেনি। স্বাভাবিকের চেয়ে ১৩ ডিগ্রি কম। দিনের একেবারে শুরুতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮.৭ ডিগ্রি। সারা দিনে তাপমাত্রার বৃদ্ধি মাত্র ১.৪ ডিগ্রি। রেকর্ড বই ঘেঁটে আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলছে, ৫৪ বছরে মার্চে এটাই কলকাতার দ্বিতীয় শীতলতম দিন। শীর্ষে ২০০৩ সালের ১৩ মার্চ। ওই দিন আলিপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০.৩ ডিগ্রি।

মেদিনীপুর, দিঘায় পুরোনো সব রেকর্ড ভেঙে চুরমার! মেদিনীপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯০৭ থেকে এ পর্যন্ত এটাই মার্চে মেদিনীপুরের শীতলতম দিন। দিঘার তাপমাত্রা ছিল ২০.৭ ডিগ্রি। ১৯৮২ থেকে যা রেকর্ড পাওয়া যাচ্ছে, তাতে বুধবারই মার্চের শীতলতম দিন কাটিয়েছে দিঘা।

পড়শি ওড়িশাতেও শীতলতম দিনের রেকর্ড গড়েছে ভুবনেশ্বর, কটক, পুরী। ভুবনেশ্বরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল মাত্র ১৯.২ ডিগ্রি। স্বাভাবিকের চেয়ে ১৭ ডিগ্রি কম। মুম্বইয়ের অর্ধেক তাপমাত্রা! ১৯৫২ থেকে এ পর্যন্ত মার্চে এত দিন ঠান্ডা দিন আর কখনও পড়েনি ভুবনেশ্বরে। কটকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০.০ ডিগ্রি। পুরীর তাপমাত্রা ২০.৪ ডিগ্রি।

পুবে এত ঠান্ডা কেন? একমাত্র কারণ, দিনভর বৃষ্টি। মার্চে এত বৃষ্টিই বা কেন? আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাসের ব্যাখ্যা, ”এর পিছনে দুটো নিম্নচাপ অক্ষরেখার বড় ভূমিকা রয়েছে। মধ্যপ্রদেশ থেকে অসম পর্যন্ত পূর্ব-পশ্চিমে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা রয়েছে। আবার বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরে উত্তর-দক্ষিণে একটি অক্ষরেখা বিস্তৃত। এর ফলে বিপুল পরিমাণে জলীয় ঢোকায় বিশালাকার মেঘপুঞ্জ সৃষ্টি হয়। এই মেঘপুঞ্জের পশ্চিম থেকে পুবে সরার গতি বেশ কম। ফলে দিনভরই মেঘলা ছিল আকাশ। তাই দিনের তাপমাত্রা এতটা কম।”

গত ক’দিনে এই নিম্নচাপ অক্ষরেখার প্রভাবে বৃষ্টি পেয়েছে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগড়, ঝাড়খণ্ড, বিহারও। কিন্তু অক্ষরেখার চৌহদ্দির বাইরে ছিল দেশের পশ্চিম প্রান্ত। এক ছটাক মেঘও নেই মহারাষ্ট্র, গুজরাটের আকাশে। একে প্রতিকূল বায়ুপ্রবাহ, তার পর চড়া রোদের তেজ। সবমিলিয়ে ‘পোড়া’ কপালের পশ্চিমের!

তবে আবহবিদরা বলছেন, বাংলা জুড়ে এই সুখ বেশি দিন থাকবে না। শুক্রবার থেকেই দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। মেঘ কাটলেই দ্রুত বাড়বে তাপমাত্রা। মৌসম ভবন আগেই বলে রেখেছে, মার্চেই পশ্চিমাঞ্চলের এক-দু’জায়গায় হানা দিতে পারে তাপপ্রবাহ। কোন খেলা দেখাবে আবহাওয়া?