Mid Day Meal: মিড ডে মিলে কি সত্যিই ১০০ কোটির বেনিয়ম? কী বলছে রাজ্য
Mid Day Meal: বিভাগীয় সচিব মনীশ জৈন, মিড ডে মিল প্রকল্পের অধিকর্তা তপন অধিকারীদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন ব্রাত্য বসু। কী বলছেন তিনি?
কলকাতা: বাংলার স্কুলগুলিতে মিড ডে মিলের (Mid Day Meal) সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছে কেন্দ্রের পাঠানো জয়েন্ট রিভিউ মিশন (Joint Review Mission)। সেখানে রাজ্যের প্রতিনিধিও ছিলেন। সম্প্রতি সেই জয়েন্ট রিভিউ মিশনের রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। সেই রিপোর্টে রাজ্যে মিড ডে মিলের কাজে বেনিয়মের অভিযোগ উঠে এসেছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৬ কোটি অতিরিক্ত মিড ডে মিল পরিবেশনের রিপোর্ট করেছে পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট খাবারের মূল্য ১০০ কোটি টাকারও বেশি। আর এই নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। রাজ্যের শাসক শিবিরকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানাতে শুরু করেছে বিজেপি। এমন এক অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যেই সাংবাদিক বৈঠকে বসলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। বিভাগীয় সচিব মনীশ জৈন, মিড ডে মিল প্রকল্পের অধিকর্তা তপন অধিকারীদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি।
অবাক হচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু দাবি, মিড ডে মিলের সার্বিক চিত্র খতিয়ে দেখতে যে টিম এসেছিল, তাদের রাজ্য সবরকমভাবে সাহায্য করেছে। বললেন, ‘যেহেতু এটির নাম জয়েন্ট রিভিউ মিশন, তাই প্রথম থেকেই কথা হয়ে ছিল, আমাদের প্রকল্প অধিকর্তা সেই রিপোর্ট দেখবেন এবং সই করবেন। কিন্তু সই নেওয়া তো দূরের কথা, আমাদের না জানিয়েই সেটি জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা এতে অবাক হই। আমরা সঙ্গে সঙ্গে দফতর থেকে চিঠি লিখি। জানতে চাই, আমাদের সই ছাড়া কেন এই রিপোর্ট জমা দেওয়া হল। রিপোর্টটি আমাদের দেখতে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে রিপোর্টটি আমাদের কাছে না পাঠিয়ে সেটি গণমাধ্যমে লিক করা হয়। বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কাল্পনিক অর্ধসত্য অসত্য মিলিয়ে বহু সংবাদ পরিবেশন করা হয়, যা কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। বিরোধীরাও আসর জমাতে বসে পড়েন। বিষয়টির খবর পেয়ে আমি সকালে টুইটও করেছি।’
কেন চুপিসারে রিপোর্ট তৈরি? প্রশ্ন রাজ্যের
রাজ্যের বক্তব্য, জয়েন্ট রিভিউ মিশনে তিন জন রাজ্যের প্রতিনিধি রাখার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র সেখানে কেবল একজন রাজ্যের প্রতিনিধি রেখেছিল। অন্যান্য জয়েন্ট রিভিউ মিশনের সময় রাজ্যে বসেই রিপোর্ট তৈরি হয়েছিল। ২০১৩ সালে যখন জয়েন্ট রিভিউ মিশন হয়েছিল, তখন রাজ্যে বসেই রিপোর্ট তৈরি করে সবার সই নেওয়া হয়েছিল। রাজ্যের প্রতিনিধিও সেখানে সই করেছিলেন। তারপর সেটি পাবলিশ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নিয়ম এবার মানা হয়নি বলেই দাবি রাজ্যের। রাজ্যের বক্তব্য, রাজ্যের তরফে যে পরামর্শগুলি রাখা হয়েছিল, সেগুলি এই রিপোর্টে প্রতিফলিত রাখা হয়নি। ব্রাত্য বসু বললেন, ‘উত্তর প্রদেশ, গুজরাটে যখন জেআরএম গিয়েছে, তখন সেই রাজ্যে বসেই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। চুপিসারে এই রিপোর্ট কোথায় তৈরি করা হয়েছে, তা আমি জানতে চাই। কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দফতরে? নাকি কমিটির কারও কারও বাড়িতে বসে? কারা তাতে সই করলেন?’
মিড ডে মিলে কোনও অতিরিক্ত পরিবেশন হয়নি, দাবি রাজ্যের
জয়েন্ট রিভিউ মিশনে রাজ্যের তরফে প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিড ডে মিল প্রকল্পের অধিকর্তা তপন অধিকারী। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বললেন, ‘জেআরএম যে রিপোর্ট দিয়েছে, সেখানে বলেছে মিড ডে মিল সার্ভ নাকি অতিরিক্ত পরিবেশন করা হয়েছে। আসল কথা হল, কোনও অতিরিক্ত পরিবেশন হয়নি। কোনও অমিল নেই। জেলার কোয়ার্টারলি প্রোগ্রেস রিপোর্টের ভিত্তিতে তৈরি রাজ্যের কোয়ার্টার প্রোগ্রেস রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে পাঠানো হয়েছে। ২০২২ সালের জুলাই মাসে ও নভেম্বর মাসে রিপোর্ট গিয়েছিল। কিন্তু আমাদের কোনও অতিরিক্ত পরিবেশনের রিপোর্ট নেই। তাহলে কেন এই বিষয়টি লেখা হল, সেটা আমাদের জানানো হয়নি।’ ব্রাত্য বসু বললেন, ‘ওদের যদি মনে হয়ে থাকে, বেশি খরচ হয়েছে, সেই বিষয়ে আমাদের থেকে কোনও কিছু জানতে চায়নি।’