ED on Partha: ঘোলা জলে মাছ ধরছে, আমাকে সার্ভাইভ করতে দিন প্লিজ: পার্থ
Partha Chatterjee: পার্থর আইনজীবীর বক্তব্য, এসএসকেএম যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে দেখাই যাচ্ছে পার্থ সম্পূর্ণ সুস্থ নন। পাল্টা ইডির আইনজীবী বলেন, 'এসএসকেএম দেখাবেন না। হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে'।
কলকাতা: ইডির (ED) বিশেষ আদালতে ভার্চুয়াল শুনানি পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee)। সোমবারই ব্যাঙ্কশাল আদালতে সশরীরে হাজিরা দেন পার্থ। এরপর সেখান থেকেই ভার্চুয়ালি হাজিরা দেন ইডির বিশেষ আদালতে। বিচারক বিদ্যুৎকুমার রায়ের এজলাসে শুরু হয় শুনানি। ইডি জেল হেফাজতে চায় পার্থকে।
এরপরই পার্থর আইনজীবী বলেন, ‘৯৯ দিন হয়ে গেল। আবার চাইছে ইডি। জেলে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হয়েছে। এটাকে তদন্তের আর্লি স্টেজ বলা হচ্ছে। ৯৯ দিন পরও আর্লি কেন?’ একইসঙ্গে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘যতক্ষণ না তদন্তকারীরা সন্তুষ্ট হচ্ছেন, ততক্ষণ কি আমার মক্কেল জেলেই থাকবেন? এটা হয়? কগ্নিজেন্স নেওয়ার পরেও কীভাবে তদন্তকারী সংস্থা বলছে যে এটা খুব আরলি স্টেজ তদন্তের? আজ মানিক ভট্টাচার্য গ্রেফতার হয়েছেন, কাল অন্য কোনও ভট্টাচার্য গ্রেফতার হবে, তাই বলে পার্থবাবু জেলে থেকেই যাবেন?’
পার্থর আইনজীবী সওয়াল করেন, ‘বারবার তদন্তকারীরা প্রভাবশালী তত্ত্ব আওড়াচ্ছেন। আজ যিনি প্রভাবশালী, কালও তো থাকবেন, আগামিদিনেও থাকবেন।’ পার্থর আইনজীবীর বক্তব্য, এসএসকেএম যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে দেখাই যাচ্ছে পার্থ সম্পূর্ণ সুস্থ নন। পাল্টা ইডির আইনজীবী বলেন, ‘এসএসকেএম দেখাবেন না। হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে’।
এ নিয়ে বিচারক বলেন, এসএসকেএম নিয়ে হাইকোর্টের যা নির্দেশ রয়েছে, সেই অনুযায়ী চলতে হবে। মানিকের সঙ্গে পার্থর কথোপকথনের উল্লেখ চার্জশিটেই ছিল। নতুন করে আবার এটা উল্লেখ করে কেন জামিনের আবেদন খারিজের কথা বলছে ইডি, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পার্থর আইনজীবী। একইসঙ্গে বলেন, ‘তা হলে কি নতুন কোনও ডেভেলপমেন্ট নেই? আমার মক্কেলের কাছ থেকে কিছু পাওয়া যায়নি। ফ্রেশ রিমান্ডে পুরনো কাসুন্দি ঘাটা হচ্ছে’।
যদিও ইডি আরও কিছুদিন পার্থকে জেল হেফাজতে চায় এদিন। ইডির আইনজীবী বলেন, ‘মানিক আর পার্থর এই নেক্সাস কতদূর সেটা জেরা করে জানা যাবে। তাঁদের নেক্সাস রয়েছে। তবে কতদিনে তদন্ত শেষ হবে বলতে পারছি না। তদন্তে সহযোগিতা করেননি পার্থ।’
এদিন পার্থর কাছে বিচারক জানতে চান, ‘আপনি কিছু বলবেন?’ জবাবে পার্থ বলেন, ‘ আমার শরীর ভাল নেই। আমার শরীর দিচ্ছে না। সব কেস একসঙ্গে আনা হয়েছে। কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। এরকমভাবে চাপ দেওয়া হয়েছে । আমাকে সার্ভাইভ করতে দিন প্লিজ। বাকিটা আমার আইনজীবী বলেছেন। কিছু খুঁজে না পেয়ে ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে এজেন্সি।’
অন্যদিকে এদিন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী আদালতে জামিনের আবেদন না করলেও তিনি বলেন, ‘মা বা বোনের সঙ্গে কথার বলার অনুমতি দেওয়া হোক। গত ১৫ দিনে মাত্র পাঁচ মিনিট করে তিনবার সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওনার মায়ের ফোন নটরিচেবেল ছিল।’ এদিন শুনানির শুরুতেই চোখে জল দেখা যায় অর্পিতার। মানসিকভাবে ভাল নেই, শরীরী ভাষায় সেটাই ধরা পড়ে তাঁর।
এদিকে ইডির মামলায় শুনানি চলাকালীন ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি হাতে একটি ছোট্ট লাল রঙের মোমবাতি তুলে ধরে শেক্সপিয়রের ‘ম্যাকবেথ’ নাটকের একটি দৃশ্য তুলে ধরেন। মূলত চাকরি প্রার্থীদের দুর্দশাকে সাহিত্যের সাহায্যে তুলে ধরেন তিনি। যদিও পাল্টা পার্থর আইনজীবী বলেন, ‘আইনে আবেগ থাকে না। কেসের সঙ্গে আবেগের কী সম্পর্ক? ওনার কিছু বলার নেই। তাই আবেগের আশ্রয় নিয়েছেন।’