India’s First Railway Station: দেশের প্রথম রেলস্টেশনে চলাচল করে না কোনও যাত্রীবাহী ট্রেন, পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছে এটি
Malda: দেশের প্রাচীন ও প্রথম রেলস্টেশন হওয়ায়, সিঙ্গাবাদের সঙ্গে ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। ব্রিটিশ আমলে তৈরি এই স্টেশনে গেলে আপনি পায়ে হেঁটে পৌঁছে যাবেন বাংলাদেশে। পাশাপাশি এই স্টেশনের সিগন্যাল, হ্যান্ড গিয়ার থেকে শুরু করে টেলিফোনটাও ব্রিটিশ আমলের।
দেশের পরিবহণের লাইফলাইন ভারতীয় রেল। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যমে ভারতীয় রেল। দেশের প্রতিটা কোণায় রয়েছে ভারতীয় রেল। দেশজুড়ে মোট ৭,৩৪৯ স্টেশন রেল স্টেশন রয়েছে। কিন্তু দেশের সর্বপ্রথম রেল স্টেশন কোনটি জানেন? পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছে দেশের সর্বপ্রথম রেল স্টেশন সিঙ্গাবাদ। আগে এটি ছিল দেশের শেষ রেল স্টেশন। বর্তমানে এটাই ভারতের প্রথম রেল স্টেশন। শুধু তাই নয়, এই স্টেশনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেক ইতিহাস। গুরুত্ব থাকলেও পরিচিতি নেই স্টেশনটির।
পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার হাবিবপুরে অবস্থিত সিঙ্গাবাদ স্টেশন। এটাই ভারতের প্রাচীনতম এবং প্রথম রেল স্টেশন। এটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত। স্বাধীনতার বহু আগে তৈরি হয়েছিল সিঙ্গাবাদ স্টেশনটি। দেশভাগের আগে এই স্টেশনটি দিয়ে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করত। কিন্তু দেশভাগের পর স্টেশনটি বন্ধ হয়ে যায়। যদিও ১৯৭৮ সালে সিঙ্গাবাদ দিয়ে আবার ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তখন ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করত। ২০১১ সালের শেষের দিকে পুরনো চুক্তি সংশোধন করে নেপালকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে এখান দিয়ে শুধু পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করে। বাংলাদেশ থেকে নেপালে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করা হয়। বাংলাদেশের রোহনপুর স্টেশন থেকে পণ্যবাহী ট্রেন সিঙ্গাবাদ আসে।
দেশের প্রাচীন ও প্রথম রেলস্টেশন হওয়ায়, সিঙ্গাবাদের সঙ্গে ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। ব্রিটিশ আমলে তৈরি এই স্টেশনে গেলে আপনি পায়ে হেঁটে পৌঁছে যাবেন বাংলাদেশে। পাশাপাশি এই স্টেশনের সিগন্যাল, হ্যান্ড গিয়ার থেকে শুরু করে টেলিফোনটাও ব্রিটিশ আমলের। তাই এই স্টেশনে গেলে আপনি টাইম মেশিনে করে ঔপনিবেশিক আমলে পৌঁছে গিয়েছেন বলে মনে হবে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সময়কালে তৈরি হওয়ায়, সিঙ্গাবাদের সঙ্গে জড়িয়ে ইতিহাসও রয়েছে। শোনা যায়, সুভাষচন্দ্র বসু থেকে শুরু করে মহাত্মা গান্ধীর মতো মহান ব্যক্তিত্বের মানুষের এই সিঙ্গাবাদ রেল স্টেশন হয়েই ট্রেনে ঢাকা গিয়েছিলেন। তাই মালদহের সিঙ্গাবাদকে হেরিটেজ স্টেশন ঘোষণা করা ক্ষেত্রেও উদ্যোগ নিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মাঝপথেই সেই উদ্যোগ থেমে গিয়েছে।
সিঙ্গাবাদ গেলে পায়ে হেঁটে পৌঁছে যাওয়া যায় ভারত থেকে বাংলাদেশে। স্টেশন থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে বাংলাদেশ। সিঙ্গাবাদ স্টেশনের নামের বোর্ডে বড় বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে ‘ভারতের শেষ স্টেশন’। ব্রিটিশ আমলে সিঙ্গাবাদ দিয়ে কলকাতা থেকে ঢাকার মধ্যে ট্রেন চলাচল করত। এক সময় দার্জিলিং মেলের মতো ট্রেনও এই স্টেশনের উপর দিয়ে যাতায়াত করত। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সিঙ্গাবাদের অবস্থা আগের মতো নেই। হাতেগোনা কয়েকজন রেলকর্মী রয়েছেন এখানে। একমাত্র বাংলাদেশ ও নেপালগামী পণ্যবাহী ট্রেন এই স্টেশন দিয়ে চলাচল করে। সেই ট্রেনই সিঙ্গাবাদে থাকে এবং সিগন্যালের অপেক্ষা করে। এছাড়া ভারতের প্রথম স্টেশন জনশূন্যই থাকে।