Mt. Kanchenjunga: উত্তরবঙ্গ-সিকিম সীমান্তের এই হ্রদের জলে ভেসে ওঠে কাঞ্চনজঙ্ঘার প্রতিবিম্ব, কীভাবে যাবেন?
Mulkharka Lake: কালিম্পং জেলায় অবস্থিত মুলখারকা হ্রদ। পাশেই রয়েছে সিকিম সীমান্ত। এই কারণে আপনি কালিম্পং দিয়ে যান, কিংবা সিকিম হয়ে মুলখারকা হ্রদ পৌঁছাতে খুব বেশি ঝক্কি পোহাতে হবে না। বরং, সিকিম দিয়ে মুলখারকা হ্রদ গেলে ছোটখাটো ট্রেকিংও হয়ে যাবে আপনার।
গ্রীষ্মকালে সিকিম যাওয়ার একটা আলাদা মজা রয়েছে। রোদ ঝলমলে আকাশে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মেলে। তার সঙ্গে দেখা মেলে লাল টুকটুকে রডোডেনড্রনের। পাহাড়ের ধাপে ধাপে ফুটে রয়েছে তারা। তার সঙ্গে রয়েছে পাহাড়ের আরও বাহারি ফুল। তবে, সিকিমের প্রতিটা কোণা থেকেই যে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মেলে, তা নয়। তবে, এমন একটা জায়গা রয়েছে, যেখানে কাঞ্চনজঙ্ঘার প্রতিবিম্বর দেখা মেলে জলের উপর। মুলখারকা হ্রদ হল সেই জায়গা যেখানে গেলেই এমন দৃশ্যের সাক্ষী হতে পারবেন আপনি। তবে, এই মুলখারকা হ্রদ সিকিমে নয়, পশ্চিমবঙ্গের কোলে অবস্থিত।
কালিম্পং জেলায় অবস্থিত মুলখারকা হ্রদ। পাশেই রয়েছে সিকিম সীমান্ত। এই কারণে আপনি কালিম্পং দিয়ে যান, কিংবা সিকিম হয়ে মুলখারকা হ্রদ পৌঁছাতে খুব বেশি ঝক্কি পোহাতে হবে না। বরং, সিকিম দিয়ে মুলখারকা হ্রদ গেলে ছোটখাটো ট্রেকিংও হয়ে যাবে আপনার।
পূর্ব সিকিমের সিল্ক রুট বেড়াতে গেলে অনেকেই আজকাল পদমচেন, লিংথামে রাত কাটিয়ে তারপর জ়ুলুক, কুপুপের দিকে রওনা দেন। আবার অনেকে বেছে নেন আরিতারকে। আরিতার সিকিমের সবচেয়ে পুরনো গ্রামগুলোর মধ্যে অন্যতম। পুরনো হওয়ায় জনবসতি বেশি কিন্তু তবু অফবিট। অর্থাৎ এই পাহাড়ি গ্রাম নির্জন। আর এই আরিতারের উপরেই অবস্থিত আরিতার হ্রদ। যদিও এই লেকটি বর্তমানে পর্যটকদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। এই আরিতার থেকে একটু উপরে উঠলেই পৌঁছে যাবেন মনখিম গ্রাম।
মনখিমের চারপাশ সবুজে মোড়া। মনখিম থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়া ভাগ্যের বিষয়। আকাশ পরিষ্কার থাকলে দেখা মেলে তার। মনখিম থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে মুলখারকা হ্রদ। চারদিকে ঢাকা সবুজে। হ্রদের একপাশে টাঙানো বৌদ্ধ পতাকা। প্যাঙ্গোলাখা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের মধ্যে অবস্থিত এই হৃদ। হ্রদের ঠিক উপরে রয়েছে একটি মন্দির। স্থানীয়দের কাছে খুব পবিত্র এই মুলখারকা হ্রদ। আর এই মুলখারকা হ্রদের জলেই দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘার প্রতিবিম্ব।
হ্রদের পরিবেশও খুব শান্ত। পাখির ডাক ছাড়া আর অন্য কোনও শব্দ আপনি পাবেন না। তবে, হ্রদের জলে কাঞ্চনজঙ্ঘার প্রতিবিম্ব দেখার জন্য আপনাকে ভোরেই চলে আসতে হবে মুলখারকা হ্রদে। কারণ বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাওয়ার বেগ বাড়তে থাকে এবং হ্রদের জলেও তার প্রভাব পড়ে এবং স্পষ্ট দেখা যায় না কাঞ্চনজঙ্ঘার প্রতিবিম্ব। যদিও সব দিনই যে এমন দৃশ্য দেখা যাবে, তা নয়। একমাত্র আবহাওয়া সুন্দর থাকলে এবং ভাগ্য ভাল হলেই এমন দৃশ্যের সাক্ষী হওয়া যায়।
আরিতার ছাড়াও পেডং, রংপো লিংসে হয়েও পৌঁছানো যায় মুলখারকা হ্রদ। অনেকেই লিংসে থেকে ট্রেক করে পৌঁছান হ্রদে। সেও এক ধরনের অভিজ্ঞতা। উত্তরবঙ্গের পেডং থেকে শুরু করে পূর্ব সিকিমের আরিতার—সব পাহাড়ি গ্রামেই রাত কাটানোর জন্য হোমস্টে পেয়ে যাবেন। সেখানে থাকা-খাওয়ার খরচ জনপ্রতি ১,৫০০ টাকা। আর মুলখারকা হ্রদ যাওয়ার জন্য প্রাইভেট গাড়িও পেয়ে যাবেন। কোন জায়গা থেকে গাড়ি ভাড়া করছেন, তার উপর নির্ভর করবে দাম। তাহলে আর দেরি কীসের, গ্রীষ্মকাল থাকতেই পাড়ি দিন মুলখারকা হ্রদে।