Sago or Sabudana: ব্রতর দিনে সাবুদানা খান? এটি উপোস ভাঙার শক্তি, নাকি শুধুই কার্বোহাইড্রেট?
সাবুদানা ছাড়া যেন ব্রত অসম্পূর্ণ। কিন্তু এই ছোট ছোট সাদা মুক্তোর মতো দানা আসলে আমাদের শরীরে কী প্রভাব ফেলে? এটি কি শুধু দ্রুত শক্তি জোগায়, নাকি এর অন্য কোনও স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে? চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

ভারতীয় রান্নাঘরে বিশেষত উপোস বা ব্রতের দিনগুলোতে সাবুদানার (Sago) কদর অনেক। সাবুদানা খিচুড়ি, সাবুদানার পায়েস বা বড়া—এগুলো ছাড়া যেন ব্রত অসম্পূর্ণ। কিন্তু এই ছোট ছোট সাদা মুক্তোর মতো দানা আসলে আমাদের শরীরে কী প্রভাব ফেলে? এটি কি শুধু দ্রুত শক্তি জোগায়, নাকি এর অন্য কোনও স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে? চলুন জেনে নেওয়া যাক সাবুদানা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতাগুলি।
সাবুদানা হল মূলত ট্যাপিওকা রুটের (কাসাভা/শিমুল আলু) শ্বেতসার বা স্টার্চ থেকে তৈরি করা একটি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য। এটি প্রায় ১০০% কার্বোহাইড্রেট দিয়ে গঠিত এবং এটি গ্লুটেন-মুক্ত। এটি খেলে একদিকে উপকারিতা ও অপরদিকে অপকারিতাও রয়েছে।
সাবু খাওয়ার উপকারিতা
১. তাৎক্ষণিক শক্তির উৎস: সাবুদানা হল খাঁটি শ্বেতসার/স্টার্চ। এটি খুব দ্রুত হজম হয় এবং শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি সরবরাহ করে। ব্রত বা উপোসের পর দুর্বলতা কাটাতে এটি খুবই কার্যকরী।
২. ওজন বাড়াতে সহায়ক: যারা ওজন বাড়াতে চান বা অপুষ্টিতে ভুগছেন, তাদের জন্য সাবুদানা একটি দুর্দান্ত বিকল্প। এর উচ্চ ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেট উপাদান দ্রুত ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
৩. সহজে হজমযোগ্য: এর সহজ গঠন এবং কম ফাইবার থাকার কারণে এটি সহজে হজম হয়। অসুস্থতা বা হজমের সমস্যা থাকলে হালকা খাবার হিসেবে সাবুদানা খাওয়া যেতে পারে।
৪. গ্লুটেন-মুক্ত খাদ্য: সাবুদানা গ্লুটেন-মুক্ত হওয়ায় এটি সিলিয়াক রোগ বা গ্লুটেন সংবেদনশীলতায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ।
৫. ঠান্ডা রাখার ক্ষমতা: গরমকালে বা জ্বর হলে সাবুদানার হালকা পায়েস শরীরকে ভেতর থেকে শীতল রাখতে সাহায্য করে।
সাবু খাওয়ার অপকারিতা এবং সতর্কতা
১. পুষ্টি উপাদানের অভাব: সাবুদানা প্রায় পুরোটাই শ্বেতসার। যার ফলে এতে প্রোটিন, ভিটামিন (বিশেষ করে ভিটামিন-সি) এবং খনিজ পদার্থ প্রায় থাকেই না। যার ফলে এটিকে ‘ফাঁকা ক্যালোরি’র উৎস বলা যেতে পারে।
২. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকি: এর উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের সাবুদানা এড়িয়ে চলাই ভাল।
৩. ওজন কমানোর পথে বাধা: উচ্চ ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেটের কারণে, যারা ওজন কমাতে চাইছেন, তাদের জন্য নিয়মিত সাবুদানা গ্রহণ ক্ষতিকর হতে পারে।
৪. ফাইবার ও প্রোটিন যোগ করা জরুরি: যেহেতু সাবুদানায় ফাইবার ও প্রোটিন নেই বললেই চলে, তাই এটিকে স্বাস্থ্যকর করে তুলতে এর সঙ্গে অবশ্যই বাদাম, সবজি বা দুধ মিশিয়ে খাওয়া উচিত।
সাবুদানা একটি দ্রুত শক্তির উৎস হিসেবে দারুণ। কিন্তু একে পরিপূর্ণ খাদ্য হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়। এর সর্বোচ্চ উপকারিতা পেতে গেলে, এটিকে অবশ্যই প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ অন্যান্য উপাদানের (যেমন- দুধ, দই, চিনাবাদাম বা সবজি) সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। এটিকে পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত এবং পুষ্টির ঘাটতি যেন না হয়, সেদিকে নজর রাখা প্রয়োজন।
