শীত আর দোরগোড়ায় নয়, এবার শীত এসেই গিয়েছে। আজ কার্তিকের শেষ। তারপরই শুরু অঘ্রাণ। অঘ্রাণ মানেই শুরু শীতের দিন। উত্তরের হাওয়া বেশ বইতে শুরু করেছে। আলমারি থেকে নেমেছে শীতের পোশাক। ফ্যানেরও আর প্রয়োজন হচ্ছে না। শীতকাল মানেই লেপ-তোষক বানানোর ধুম পড়ে
পাড়ায় পাড়ায় দেখা মেলে লেপওয়ালাদের। এছাড়াও এই সময় লেপ-কম্বলের দোকানে থাকে উপচে পড়া ভিড়। যতই বাড়িতে পুরনো লেপ তোষক থাকুক না কেন সকলেই এই সময়টায় আরও একবার তা ঝালিয়ে নিতে চান। সোজা কথায় তুলো ছাইয়ে নিতে চান। এতে তোষক আরও আরামদায়ক হয়
বাঙালির সঙ্গে লেপের একটা দারুণ কানেকশন রয়েছে। এই লেপের কত উল্লেখ রয়েছে বাংলা গল্প, সাহিত্যে। শীত পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে শীতের দিনে সব দোকানও ছেয়ে যায় লাল রঙের এই লেপের কাপড়ে। কখন ভেবে দেখেছেন কি কেন সব সময় এই লাল কাপড় ব্যবহার করা হয় লেপ বানাতে?
একটা সময় এই লেপের তুলো ভরা কিংবা লাল কাপড় দিয়ে লেপ সেলাই করার কাজ শুধুই মুর্শিদাবাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সেখানকার শিল্পীরাই তা করতেন। লম্বা আঁশের কার্পাস তুলোর বীজ ছাড়িয়ে লাল রঙে চুবিয়ে শুকিয়ে ভরা হত মোলায়েম সিল্ক এবং মখমলের মাঝে। সেই মখমলের রঙ ছিল লাল। সুগন্ধের জন্যে দেওয়া হত আতর।
এখন অবশ্য দামের কারণে মখমলের কাপড় ব্যবহার হয় না। কিন্তু লাল কাপড় ব্যবহারের প্রথা চালু রয়েছে আজও। কোনও নিয়ম না হলেও আজও লেপ বানালে তা লাল কাপড়েই বানিয়ে থাকেন কারিগররা।
অভিবক্ত বাংলার প্রথম নবাব মুর্শিদ কুলি খানের আমল থেকেই রীতি অনুযায়ী এই লাল কাপড় ব্যবহার করে লেপ কম্বল তৈরি করা হত। এরপর মুর্শিদ কুলি খানের মেয়ের জামাই নবাব সুজাউদ্দিন মখমলের পরিবর্তে সিল্ক কাপড় ব্যবহার শুরু করেন। ঢাকাতেও এই লাল কাপড়ই ব্যবহার করা হয়। তবে কেন লাল কাপড় তার নির্দি।্ট কোনও কারণ নেই। মনে করা হয় ময়লা কম ধরে বলেই এই কাপড়ের চল বেশি।