Itu Puja 2023: শুরু হয়ে গেল ইতুপুজো! প্রতি রবিবার কেন পুজো করা হয়, জানেন?
Puja Rules: অগ্রহায়ণ মাসের প্রতি রবিবার করে সংক্রান্তির এই বিশেষ পুজো করতে হয়। এদিন পুজো করে ইতুকে বিসর্জনও দেওয়া হয়। ইতু না ঋতু , তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে বহুজনের মধ্যে। কারণ গ্রামবাংলায় এখনও এই পুজোর কদর থাকলেও শহরাঞ্চলে ইতুপুজো প্রায় বিলীন হতে চলেছে।
অনেকটা লক্ষ্মীপুজোর মতো আয়োজন।কিন্তু লক্ষ্মী পুজো নয়। কার্তিক মাসের সংক্রান্তি থেকে অগ্রহায়ণ মাসের সংক্রান্তি পর্যন্ত প্রতি রবিবার করে পুজো করা হয় ইতুপুজো। অগ্রহায়ণ মাসের প্রতি রবিবার করে সংক্রান্তির এই বিশেষ পুজো করতে হয়। এদিন পুজো করে ইতুকে বিসর্জনও দেওয়া হয়। ইতু না ঋতু , তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে বহুজনের মধ্যে। কারণ গ্রামবাংলায় এখনও এই পুজোর কদর থাকলেও শহরাঞ্চলে ইতুপুজো প্রায় বিলীন হতে চলেছে।
ইতু শব্দের উত্পত্তি ঘটেছে প্রাচীন ইরাণ শব্দ থেকে।বহু যুগ আগে পারস্যদেশে মিথু নামে এক স্থানীয় পুজো করা হত। সেই শব্দ হয়েছে ইতু। আসলে ইতুর অর্থ হল সূর্য। আঘ্রাণ মাসে সূর্যকে মিত্র বলে অভিহিত করা হয়। প্রতি রবিবার এই পুজো করা হয় বলে একে সূর্যের পুজো নামেও পরিচিত। সূর্যদেবের উপাসনা করা হলেও এই পুজোর রীতি অনুযায়ী সাধারণত মাটি ও শস্যকে পুজো করা হয় ।
মহাভারত, পুরাণেও ইতুপুজোর উল্লেখ রয়েছে। প্রাচীনকালে কুমারী মেয়েরা এই পুজো করে থাকতেন। সংসারে শ্রীবৃদ্ধির জন্য ও স্বামীলাভ পেতে এই পুজো করে থাকতেন। পরবর্তীকালে সূর্যপুজো হিসেবে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করে। মহাভারতে কুন্তীপুত্র কর্ণ ছিলেন সূর্যের অন্যতম সন্তান। আবার সূর্যের অপর নাম হল আদিত্য। এই আদিত্য থেকে ইতু শব্দের সৃষ্টি হলেও শাক্তবাঙালির কাছে মৃত্তিকাদেবী হিসেবে পরিণত হয়েছে। শস্যদেবী লক্ষ্মী হিসেবে বাঙালির ঘরে ঘরে এই ইতুপুজো প্রচলন হয়।
সাধারণত কুমারী, বিবাহিতা, বিধবা, সব বয়সী মহিলারা এই পুজো করতে পারেন। ইতুর পাত্র ও ঘট দিয়েই পুজো করা হয়। খড়ের বিঁড়ের উপরে ইতুর সরাকে প্রথম বসানো হয়। তারপর সরাতে দেওয়া হয় মাটি। মাটি কানায় কানায় পূর্ণ হলে তার উপর একটি ঘট স্থাপন করতে হয়। বাকি অংশে, কলমীশাক, সরষে ধানের বীজ, মানকচুর মূল ইত্যাদি ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসানো হয়। এছাড়া ছোলা, মটর, তিল, যব-সহ আটরকম শস্য দেওয়ার নিয়ম। প্রতি রবিবার পুজো দেওয়ার সময় সরাতে জল দিয়ে থাকেন মহিলারা।
কার্তিক সংক্রান্তির দিন শুর হলে শেষ হয় অগ্রহায়ণ সংক্রান্তিতে। ইতো পুজোর সময় চাল-কলাইয়ের নৈবেদ্য সজিয়ে পুজো দেন মহিলারা। ভোগ হিসেবে দেন চলাকলাই ভাজা। সংক্রান্তির দিনে ইতুর বিশেষ ভোগে লাগে সরুচাকালি বা চালের গুঁড়োর বিভিন্ন পদ। পুজোর ফুল হিসেবে ব্যবহার করা হয় হলুদ সরষে ফুল। পুজো হয়ে গেলে ইতুকে জলে বিসর্জন দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।