Kaushiki Amavashya 2023: কালী নয়, লক্ষ্মীরও পুজো হয় কৌশিকী অমাবস্যায়! ভাগ্য ফেরাতে কী কী করবেন আর করবেন না, জানুন
Amavashya Rules: পঞ্চাঙ্গ মতে, ১৪ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার সারারাত ধরে পালিত হবে কৌশিকী অমাবস্যা। ১৫ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার পর্যন্ত থাকবে অমাবস্যা। হিন্দুদের কাছে এই শুভতিথি যেমন পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ তেমন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছেও সমান তাত্পর্য রয়েছে।

সারা বছর ভাদ্রমাসের কৌশিকী অমাবস্যা তিথির জন্য মুখিয়ে থাকেন ভক্তরা। শুধু ভক্ত বললে ভুল বলা হবে, হাজির হন সাধুসন্তরা। এই অমাবস্যার রাতকেই বেছে নেন জ্যোতিষীরাও। স্কন্দপুরাণ অনুসারে, তারা মা হলেন দশমহাবিদ্যার দ্বিতীয় মহাবিদ্যা। তার মধ্যে কৌশিকী হলেন অপর একটি রূপ। পঞ্চাঙ্গ মতে, ১৪ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার সারারাত ধরে পালিত হবে কৌশিকী অমাবস্যা। ১৫ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার পর্যন্ত থাকবে অমাবস্যা। হিন্দুদের কাছে এই শুভতিথি যেমন পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ তেমন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছেও সমান তাত্পর্য রয়েছে। এদিন কৌশিকী অবতারের পুজো করার পাশাপাশি লক্ষ্মী-নারায়ণেরও পুজো করা হয়।
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, দেবতাদের মাঝে মহামায়াকে শিব একবার কালী বলে ওঠেন। শিবের কথায় অপমানিত হলে অপূর্ব সৌন্দর্যের অধিকারিনী হতে মানস সরোবরের তীরে কঠোর তপস্যায় বসেন। সেই তপস্যার পরই দেহ থেকে নিশি ঘন কালো বরণ সরোবরের জলে চলে যায়। দেবীর আবরণ হয় আলোকসমান উজ্জ্বল ও অপূর্ব সৌন্দর্যে আবৃত। লক্ষ্মীপুরাণ অনুযায়ী, একবার ইন্দ্রকে লক্ষ্মী জানিয়েছিলেন, শুভ্র ও উজ্জ্বল রূপে গৌরী অবতার ধারণ করেছিলেন দেবী লক্ষ্মীই। তাঁর রূপের টানে আকৃষ্ট হয়ে শুম্ভও নিশুম্ভ অসুর দুই ভাই দেবীর কাছে ছুটে এলে হত্যা করেন দেবী কৌশিকী। বিধাতার কৌশলেই ছিল সব ঘটনা সাজানো। কারণ ব্রহ্মার বরে অসুর ভ্রাতৃদ্বয়কে কেউ হত্যা করতে না পারলেও অযোনিসম্ভাবা কৌশিকীই পারবে অসুরকূলকে বধ করতে। এই তিথিতে কৌশিকী রূপেই তারা মা বিশেষ সন্ধিক্ষণে শুম্ভ-নিশুম্ভকে দমন করেছিলেন।
এদিন কী কী করবেন
– ভাদ্র মাসের অমাবস্যার দিন ঘরের অন্দরসজ্জা সুন্দর করে পরিষ্কার করে, সাজিয়ে রাখা উচিত। এঁটো বাসন রেখে দেবেন না, পুরনো জামাকাপড় বা ছেঁড়া পোশাক পরবেন না। বাড়িইর অন্দরেই নয়, বাড়ির চারিপাশও রাখুন স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন।
– এই অমাবস্যার সন্ধ্যের সময়, সদর দরজার সামনে দুটি তিলের প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখতে পারেন। তাতে বাড়ির বাস্তুদোষ যেমন কেটে যায়, তেমনি পজিটিভ শক্তিরও আবির্ভাব ঘটে।
– জীবনের সমস্যা দূর করতে ভাদ্রমাসের অমাবস্যার সন্ধ্যেবেলায় একটি গর্তে এক চামচ দুধ ঢেলে দিন। তাতেই কেটে যাবে সব সঙ্কট।
– জলশূণ্য নারকেলের একদিকে ফুটো করে সেই ফুটোর মধ্যে চিনি পুরে দিতে হবে। এবার সেই নারকেল বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দূরে পুঁতে দিতে পারেন। তবে মাথায় রাখবেন, নারকেলের ফুটোটা যেন ওপরের দিকে থাকে।
– কৌশিকী অমাবস্যার রাতে তারা মায়ের পায়ে লাল রক্ত জবা ও সিঁদুর নিবেদন করতে পারেন। এই কাজ করলে জীবনে সুদিন ফিরবে। ফিরে আসবে সাফল্য ও উন্নতি।
– এই গুরুত্বপূর্ণ অমাবস্যার সন্ধ্যের সময় বাড়ির মূল দরজার সামনে একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলেও ঘরে পজিটিভি শক্তির প্রভাব প্রবেশ করে।
কী কী করবেন না
– এই শুভ তিথিতে ভুলেও যেন আমিষ ভোজন করবেন না। শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে, আমিষ খাবার গ্রহণ করলে শরীরে নেগেটিভ শক্তির প্রভাব বেশ পড়ে। এদিন পারলে নিরামিষ ভোজন করুন।
– বিশেষ করে কৌশিকী অমাবস্যার রাতে ভুল করেও বাড়ির বাইরে , রাতের অন্ধকারে একা থাকবেন না। এদিন তন্ত্রসাধনার ফলে অনেকসময় নেগেটিভ শক্তি প্রবেশ করে।
– এদিন প্রয়োজনে যদি বাড়ির বাইরে যেতেই হয়, তাহলে সঙ্গে রক্ষাকবচ হিসেবে তুলসী পাতা রেখে দিতে পারেন। তবে তুলসী পাতা অমাবস্যার দিনে তুলতে নেই, এমনটাই শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে। তাই আগের দিন তুলসী পাতা ছিঁড়ে রাখতে হবে।
– কৌশিকী অমাবস্যার রাতে ভুলেও বাড়ির বাইরে বের হবেন না গর্ভবতী মহিলারা। এদিন শুভ তিথি হলেও, অশুভ শক্তি চারিপাশে ঘিরে ধরে। এগুলি শুভ শক্তিকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে।
