ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের অকশনে যেমন প্লেয়ারদের দিকে নজর থাকে তেমনই ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রতিনিধিদের উপর। তাঁদের অভিব্যক্তি, দর তোলা অনেক সময়ই দুর্দান্ত সব মুহূর্ত তৈরি করে। ক্যামেরা নানা অভিব্যক্তিই ধরে। এটাও যেন টিমের পরিকল্পনা বুঝতে সাহায্য করে। প্রতিটা ফ্র্যাঞ্চাইজি যেমন নিজেদের টিম গোছানোর একটা বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে নামে, তেমনই নজর থাকে অন্য টিমগুলোকে অকশন টেবিলে কী ভাবে ছন্নছাড়া করা যায়। সেরা প্লেয়ার তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে যা খুবই জরুরি। আর এই বিষয়ে দিল্লি ক্যাপিটালসের অন্যতম কর্ণধার কিরণ গ্রান্ধীর উপর বিশেষ নজর থাকে। অনেক টিমেরই পরিকল্পনা ভেস্তে যায় তাঁর মোক্ষম চালে। কে এই কিরণ গ্রান্ধী?
জেড্ডায় এ বারের মেগা অকশন প্রসঙ্গেই বলা যাক। ঋষভ পন্থকে রিটেন করেনি দিল্লি ক্যাপিটালস। অকশনে তাঁকে নিতে ঝাঁপিয়েছিল। কিন্তু একটা বাজেটের পর আর ঋষভের জন্য এগোতে চায়নি দিল্লি। শেষ অবধি ঋষভ পন্থকে ২৭ কোটিতে নিয়েছে লখনউ সুপার জায়ান্টস। অকশনের পর লখনউ কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কা জানিয়েছিলেন, ঋষভকে নিতে ২৬ কোটি সরিয়ে রেখেছিলেন। দিল্লির অন্যতম কর্ণধার পার্থ জিন্দাল সদ্য একটি ইন্টারভিউতে জানিয়েছেন, তাঁরা ২২ কোটি অবধি উঠতেন। সেই ঋষভকে ২৭ কোটিতে নিতে হয়েছে কিরণ গ্রান্ধীর চালেই।
ঋষভকে নিতে দাম বাড়িয়েই চলেছিলেন। একটা সময় পর থেমে যান। ঠিক তখনই আরটিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত। লখনউ কোনও মতেই ঋষভকে হাতছাড়া করতে চায়নি। তাদের কাছে ফাইনাল বিড জানতে চাওয়া হয়। ২৭ কোটি বলতেই দান ছেড়ে দেয় দিল্লি ক্যাপিটালস। এই দামে তাঁকে নেয় লখনউ। কিরণের এই চালে নিঃসন্দেহে লখনউয়ের বাজেটে টান পড়েছে। ফলে পরের দিকে অন্য প্লেয়ার নেওয়ার ক্ষেত্রে ভাবনা চিন্তা করতে হয়েছে। দিল্লি ক্যাপিটালস বেস প্রাইসে নিয়েছে ফাফ ডুপ্লেসিকে, তেমনই মুকেশ কুমার, জ্যাক ফ্রেজার ম্যাকগুরুককেও ফিরিয়েছে। আবার মাত্র ১৪ কোটিতেই লোকেশ রাহুলের মতো তারকাকে নিয়েছে দিল্লি।
আইপিএল অকশনের টেবিলে যেন ‘চাণক্য’ এই কিরণ গ্রান্ধী। তাঁর উপস্থিতি প্রতিপক্ষ ফ্র্যাঞ্চাইজিকে চাপে ফেলে। দিল্লি ক্যাপিটালসের অন্যতম কর্ণধার কিরণ গ্রান্ধী। জিএমআর গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ মুখ। দিল্লি ক্যাপিটালসেরও। অকশনে তাঁকেই প্যাডল তুলতে দেখা যায়। বাকিরা প্লেয়ার সম্পর্কে পরামর্শ দেন, দাম নিয়ে পরিকল্পনা করেন তিনিই।
দিল্লি ক্যাপিটালসের চেয়ারম্যান এবং সহযোগী কর্ণধার কিরণ গ্রান্ধী। কমার্স গ্র্যাজুয়েট। জিএম রাওয়ের কনিষ্ঠ পুত্র। ১৯৯৯ সাল থেকে জিএমআর গ্রুপের বোর্ড মেম্বার। আইপিএলে দিল্লি টিমের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। শুধু দিল্লি ক্যাপিটালসের ক্ষেত্রেই নয়, জিএমআর গ্রুপের সাফল্যেও। এই সংস্থার বেশ কিছু প্রজেক্ট তাঁর হাত ধরেই সাফল্যের মুখ দেখেছে।