India vs Sri Lanka: রবিবাসরীয় বেঙ্গালুরু সুপারহিট শ্রেয়সের ব্যাটে-বুমরার বলে
দিনরাতের টেস্টে টিম ইন্ডিয়ার জিততে চাই আর ৯টি উইকেট। অন্যদিকে অঘটন ঘটানোর জন্য শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ৪১৯ রান।
দ্বিতীয় দিনের শেষে
ভারত ২৫২ (৫৯.১ ওভার) (প্রথম ইনিংস)
ভারত ৩০৩-৯ ডিক্লেয়ার (৬৮.৫ ওভার) (দ্বিতীয় ইনিংস)
শ্রীলঙ্কা ১০৯ (৩৫.৫ ওভার) (প্রথম ইনিংস)
শ্রীলঙ্কা ২৮-১ (৭ ওভার)
বেঙ্গালুরু: বিরাট কোহলির (Virat Kohli) সেকেন্ড হোম গ্রাউন্ডে বাজিমাত করছেন শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer)। ২৭ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটার ব্যাট ধরলেই কামাল করে দেখাচ্ছেন। অন্তত তাঁর পারফরম্যান্সই তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। সীমিত ওভার হোক বা টেস্ট নিজের জাত চেনানো শুরু করে দিয়েছেন শ্রেয়স আইয়ার। মোহালি টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৭ রানে আউট হয়ে গেলেও, বেঙ্গালুরু টেস্টের প্রথম ইনিংসে শ্রেয়সের ব্যাট থেকে আসে ৯২ রান। মাত্র ৮ রানের জন্য সেঞ্চুরিটা মাঠে ফেলে যান শ্রেয়স। দ্বিতীয় ইনিংসেও দুরন্ত ছন্দে দেখা গেল শ্রেয়স আইয়ারকে। ছয় নম্বরে মাঠে নেমে রইলেন প্রায় শেষ অবধি। পরপর দুটো ইনিংসে দুটো হাফসেঞ্চুরি গুছিয়ে নিলেন শ্রেয়স। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৭ বলে ৬৭ রান করে গেলেন তিনি। তাঁর এই ইনিংসে ছিল ৯টি ছয়।
চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের হাউসফুল গ্যালারির সামনে দিনের শুরুতেই লঙ্কানদের চার উইকেট তুলে নিয়ে কার্যত ম্যাচে তাঁদের আশা গুড়িয়ে দেন জশপ্রীত বুমরা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনরা। প্রথম দিনের শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ৮৬ রান তুলেছিলেন করুণারত্নেরা। দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন প্রথম সেশনে মাত্র ৫.৫ ওভার ব্যাটিং চালিয়ে যান লঙ্কানরা। তাতে ওঠে মাত্র ২৩ রান। ফলে ১০৯ রানে শেষ হয়ে যায় অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসদের প্রথম ইনিংস। ভারতের মাটিতে এই প্রথম টেস্টে ফাইফার (এক ইনিংসে ৫ উইকেট) পেলেন জশপ্রীত বুমরা। লঙ্কানদের প্রথম ইনিংসে ২টি করে উইকেট পেয়েছেন মহম্মদ সামি ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এবং ১টি উইকেট তুলে নিয়েছিলেন অক্ষর প্যাটেল।
STUMPS on Day 2 of the 2nd Test.
Sri Lanka are 109 & 28/1 in response to #TeamIndia's 252 & 303/9d.
Scorecard – https://t.co/t74OLq7xoO #INDvSL @Paytm pic.twitter.com/yYyBHLj5MC
— BCCI (@BCCI) March 13, 2022
দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনেই দ্বিতীয় ইনিংসের জন্য ব্যাটিংয়ে নেমে পড়েন রোহিতরা। মায়াঙ্ক-রোহিতের ওপেনিং জুটি আজ ৪২ রানের মাথায় ভাঙে। ১০.৪ ওভারে এম্বুলডেনিয়ার শিকার হন মায়াঙ্ক। প্রথম ইনিংসে রোহিতের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে ৪ রান করে রান আউট হয়েছিলেন মায়াঙ্ক। আজ ২২ রানে ফিরলেন সাজঘরে। শুভমন গিলের জায়গায় ওপেনিংয়ে আস্থা রাখা হয়েছিল মায়াঙ্কের ওপর। কিন্তু মায়াঙ্কের পারফরম্যান্স দেখলে হতাশই হতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে। প্রথম ইনিংসে রান পাননি রোহিত। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ছন্দে থেকেও বড় ইনিংসে পৌঁছতে ব্যর্থ হলেন হিটম্যান। দ্বিতীয় ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি (৪৬) হাতছাড়া করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রোহিত। তিন নম্বরে নামা হনুমা বিহারি প্রথম ইনিংসের (৩১) মতোই রান করে গেলেন দ্বিতীয় ইনিংসেও (৩৫)। নিজের সেকেন্ড হোম গ্রাউন্ডেও সেঞ্চুরি অধরাই রইলো ভিকের। প্রথম ইনিংসে ২৩ রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩-তেই আটকে যান কোহলি। যার ফলে গত ৫ বছরে এই প্রথম বার কোহলির টেস্ট গড় ৫০ এর নীচে নেমে গেল।
এরপর শ্রেয়সের সঙ্গে জুটি বাঁধেন পন্থ। মারমুখী মেজাজে ব্যাট করতে শুরু করেন পন্থ। মাত্র ২৮ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে ফেলেন ঋষভ পন্থ। ভেঙে ফেলেন কপিল দেবের ৪০ বছর আগেকার পুরনো রেকর্ড। এর আগে ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে সব থেকে কম বলে অর্ধশতক করার নজির গড়েছিলেন কপিল দেব (পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩০ বলে হাফসেঞ্চুরি)। তবে হাফসেঞ্চুরি করার পর বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি পন্থ। শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে ৫০ করে আউট হন পন্থ। তাঁর ৫০ রানের ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ২টি ছয়।
এর পর জাডেজার সঙ্গে জুটি গড়েন শ্রেয়স। মোহালি টেস্টে জাডেজার দাপট দেখা গেলেও বেঙ্গালুরুতে সেভাবে জ্বলে ওঠেনি তাঁর ব্য়াট। প্রথম ইনিংস ৪ রানের মাথায় আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২২ রানের মাথায় ফেরেন প্যাভিলিয়নে। জাডেজা ফিরলে শ্রেয়সকে সঙ্গ দিতে আসেন অশ্বিন। তিনি করে যান ১৩ রান। এরপর ৬৭ রানের মাথায় আউট হন নাইটদের নতুন নেতা শ্রেয়স। শেষ বেলায় এসে মহম্মদ সামি করে যান ১৬* রান। যার মধ্যে ছিল ২টি চার ও একটি ছয়। ৬৮.৫ ওভারে অক্ষর প্যাটেলের (৯) উইকেট হারানোর পর রোহিত ইনিংস ডিক্লেয়ার ঘোষণা করে দেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০৩ রান তোলে ভারত। দুই ইনিংস মিলিয়ে শ্রীলঙ্কার কাছে ৪৪৭ রানের টার্গেট ঝুলিয়ে দেয় টিম ইন্ডিয়া।
রানের পাহাড় সামনে নিয়ে দ্বিতীয় দিনের শেষ বেলায় নামে শ্রীলঙ্কা। তবে শুরুতেই ধাক্কা দেন বুমরা। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই লাহিরু থিরিমানের উইকেট তুলে নেন বুমরা। দ্বিতীয় দিনের শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ১ উইকেটে ২৮। দিনরাতের টেস্টে টিম ইন্ডিয়ার জিততে চাই আর ৯টি উইকেট। অন্যদিকে অঘটন ঘটানোর জন্য শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ৪১৯ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ৩০৩-৯ (ডিক্লেয়ার) (৬৮.৫ ওভার) (দ্বিতীয় ইনিংস) (শ্রেয়স ৬৭, ঋষভ ৫০; প্রবীণ ৪-৭৮, লাসিথ ৩-৮৭)
শ্রীলঙ্কা ২৮-১ (৭ ওভার) (দিমুথ ১০*, কুসল ১০*; বুমরা ১-৯)